বিজ্ঞাপন

শুধু নির্বাচনব্যবস্থা নয়, রাজনীতিসহ অনেক কিছুই পচে গেছে: সিইসি

July 18, 2022 | 9:38 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজন করাকে ‘অনেক কঠিন কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, শুধু নির্বাচনব্যবস্থা নয়, রাজনীতিসহ অনেক কিছু পচে গেছে। আমাকে অস্ট্রেলিয়া বা বিলেতের (যুক্তরাজ্য) নির্বাচন কমিশনার করে দেন, দেখবেন কত সহজেই নির্বাচন করে দেবো। কিন্তু এখানে নির্বাচন করা অনেক কঠিন কাজ।  রাজনীতিতে অর্থশক্তি আছে, সেটাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব?

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপে দলটির নেতা সাইফুল হকের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংসের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিইসি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন- তফসিল ঘোষণার পর সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির

বিজ্ঞাপন

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের গত কয়েকদিনের একাধিক বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে অনলাইনে-অফলাইনে। এই বিষয়গুলো নিয়েও আক্ষেপ করেছেন তিনি। বলেছেন, এখনই সিইসি’র দায়িত্ব থেকে বিদায় নিতে পারলে ভালো লাগত তার। তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন বলে এসব বক্তব্য ধরে সংবাদ পরিবেশন করা নিয়েও আপত্তি করছেন না তিনি।

গত ১৮ জুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই দিন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সংলাপে ওবায়দুল কাদেরকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করেন সিইসি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন- নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি খেলাফত মজলিসের

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আমাদের কমিশনারও কিন্তু কোনো মন্ত্রীকে রিসিভ করেন না। যেহেতু উনার (ওবায়দুল কাদের) সঙ্গে আমার আগেই পরিচয় ছিল এবং আগে তাকে সবসময় স্যার বলে সম্বোধন করতাম। এর ধারাবাহিকতাতেই এবারও তাকে স্যার বলেছি। এখন দেখলাম, এটাও বলা যাবে না। এর জন্য আমাদের সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমার আজ যে অবস্থা— এই অবস্থায় বিদায় হতে পারলে ভালো লাগত। কারণ কালকেই সংবাদপত্রে সবকিছু লেখা হবে। তবে আমি মাইন্ড করি না। আমি মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।

আরও পড়ুন- বিএনপি না এলেও নির্বাচন করব: সিইসি

ভোটের দিন কেউ অস্ত্র নিয়ে দাঁড়ালে রাজনৈতিক দলগুলোকে পাল্টা অস্ত্র নিয়ে দাঁড়ানোর কথা বলেছিলেন সিইসি। এ নিয়েও সমালোচনা হয়েছে অনেক। এ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, গতকাল (রোববার) প্রথম সংলাপে ববি হাজ্জাজ (ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান) হাসির ছলে অস্ত্রের কথা বললেন। তখন আমি বললাম, কেউ অস্ত্র নিয়ে দাঁড়ালে আপনারাও তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াবেন। এটা কি কখনও মিন করা হয়? একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এতটুকু জ্ঞান নেই? কথাগুলো কি আক্ষরিকভাবেই বলা হয়েছে নাকি কৌতুক করে বলা হয়েছে, এগুলো তো বুঝতে হবে। অথচ আজ পেপারে দেখা গেল, এটিই প্রধান খবর। একটা লোককে নামিয়ে দেওয়া, এরপর তো আর কাজ করার মতো মনোবল থাকে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আজ ইউটিউব বন্ধ করে দিয়েছি। যখনই আমার ছবি দেখি, বুঝতে পারি যে বাপ-দাদাসহ গালিগালাজ শুরু হবে। তখন আর দেখি না। প্রতিনিয়তই এমনভাবে বলা হচ্ছে— মাজা ভেঙে গেছে, এটা ভেঙে গেছে, ওটা ভেঙে গেছে। অথচ আমরা কিন্তু মিডিয়াকে সাপোর্ট দেই, মিডিয়াকে বিশ্বাস করি।

আরও পড়ুন- ৫ মন্ত্রণালয়কে ইসির অধীনে চায় ইসলামী ফ্রন্ট

এ প্রসঙ্গেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মিডিয়াতে খবর ছাপা হলো— আমরা নাকি এমপি বাহারকে বের করতে পারিনি। আমরা তখন বললাম, আমরা বাহার সাহেবকে বিনীতভাবে অনুরোধ করেছি। এটি কোনো বেআইনি অনুরোধ হয়নি। উনি আমাদের অনুরোধ রক্ষা করতেও পারেন, আবার নাও করতে পারেন। কিন্তু উনাকে জোর করে এলাকা থেকে বের করে দেওয়ার কোনো এখতিয়ার আমাদের নেই। এই বিষয়গুলো বুঝতে হবে।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন