বিজ্ঞাপন

দেশে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখছে সিপিডি

October 20, 2022 | 3:57 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (এফএও) মতো দেশে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগও (সিপিডি)। সংস্থাটি বলেছে, ‘দেশে খাদ্য সংকটের আশঙ্কাটি সত্যি।’

বিজ্ঞাপন

সংস্থাটির মতে, যুদ্ধের সময় খাদ্য রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অর্থ থাকলেও অনেক সময় খাদ্য পাওয়া যায় না। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চলতি মৌসুমে বিভিন্ন ধরণের খাদ্যপণ্যের উৎপাদনও কম হয়েছে। সব মিলিয়ে এফএও যে আশঙ্কা করছে তা উড়িয়ে দিচ্ছে না সিপিডিও।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতর সিপিডি কার্যালয়ে ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ উত্তরণ কোন পথে?’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

বিজ্ঞাপন

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বিশ্বে খাদ্য সংকটেরও আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এফএও পৃথিবীর ৪৫টি দেশ খাদ্য সংকটের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে, এই তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। তারা যে আশঙ্কা করছে সেটি সত্যি।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান অবস্থার ভিত্তিতে প্রাক্কলন করা হয়েছে, দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে অনেকগুলো দেশ। আগামী ৬ মাসের মধ্যে যদি উৎপাদন বাড়াতে পারি, কোনোভাবে সরবরাহ চেইন যদি স্বাভাবিক হয়, আগামী ৬ মাস যদি উৎপাদন বাড়ে তবে হয়ত কিছুটা উন্নতি হতে পারে। বর্তমান বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে এই আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। পৃথিবীর ৪৫টি দেশ খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে। করোনার পরে নতুন দরিদ্র হয়েছে। তারা আবার নতুন করে দরিদ্র হচ্ছে। সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। তাদের তো বেতন বাড়েনি, খরচ করতে হচ্ছে। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা নিচের দিকে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে বন্যা ও ক্ষরার প্রকোপ বাড়ছে। তার পাশাপাশি বৃষ্টির সময় বৃষ্টি হচ্ছে না। এগুলো কিন্তু কৃষি উৎপাদনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। যার কারণ অনেক দেশেই উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খাদ্যপণ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। খাদ্য সংকটের বিষয়টি ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে খাদ্যপণ্যের যে মজুদ থাকে এখনও মজুদ সেই পর্যায়েই রয়েছে। সরকার কিন্তু প্রচুর খাদ্য বিতরণ করছে। ভবিষ্যতে খাদ্য আমদানির জন্য আমাদের ডলার থাকবে কিনা সেটিও একটি বিষয়। খাদ্য একটি রাজনৈতিক পণ্য হিসাবে আবারও বিবেচিত হবে। বিদেশ থেকে খাদ্য পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে।’

মন্দা বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ফাহমিদা খাতুন বলেন, আগামী এক বছরে এখান থেকে কোন পরিত্রাণ পাবো তা আশা করা যায় না। সরকার যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে, তা সঠিক না। ব্যয় সাশ্রয়ী কিন্তু উৎপাদনমুখী অর্থনৈতিক পদক্ষেপ আমাদের নিতে হবে। আমাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। সেই ধরণের ব্যয়ই আমরা করেবো যেগুলোতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। সে সমস্ত ব্যয়ই করবো যেগুলো দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করবে এবং অন্য ব্যয়গুলোর উপর লাগাম টেনে ধরবে। এই সংকট স্বল্পমেয়াদী নয়, মধ্যমেয়াদী। এই সংকট (মন্দা) তো ঘুরে ঘুর আসে। অর্থাৎ ব্যয় সাশ্রয়ী উৎপাদনমুখী পদক্ষেপ আমাদের নিতে হবে।’

আরও পড়ুন : মন্দা চলমান ও ঘনীভূত হচ্ছে: সিপিডি

মূল প্রবন্ধে বলা হয়- বিশ্ব মহামন্দায় বাংলাদেশকে সাতটি সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সেগুলো হলো- ডলার সংকট, জ্বালানি সংকট, মূল্যস্ফীতি সংকট, খাদ্য সংকট, ইউক্রেন সংকট, কোভিড ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট। এসব বিষয় থেকে পরিত্রাণ পেতে বেশ কিছু পরামর্শও এসেছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। বেসরকারি পর্যায়ে বেতন বৃদ্ধি, ওএমএস কার্যক্রম আরও বাড়ানো, দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান, জ্বালানির দাম কমানো, অর্থের জন্যে কর জিডিপি বাড়ানোসহ আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইএইচটি/ইআ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন