বিজ্ঞাপন

লালদিঘী মাঠে প্রস্তুত বালির মঞ্চ, বলিখেলা ২৫ এপ্রিল

April 19, 2023 | 9:45 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: তিন বছর পর চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘী ময়দানে ফিরে আসা ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলিখেলার প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। প্রস্তুত করা হয়েছে বালির মঞ্চ। ঈদের পরেই দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে বিক্রেতারা মেলায় আসতে শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলিখেলার মঞ্চসহ সার্বিক প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ট্রফি, জার্সি এবং থিম সংগীত উন্মোচন করেন।

এরপর লালদিঘীর চসিক পাবলিক লাইব্রেরিতে এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য রক্ষায় আমি বদ্ধপরিকর। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের অংশ চট্টলাবাসীর গর্বের জব্বারের বলিখেলার আয়োজনে কোনো কিছু কমতি থাকবে না। তিন দিন ধরে বৈশাখী মেলাও হবে।’

আব্দুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলার এবার ১১৪তম আসর বসছে। লালদিঘীর মাঠে বলিখেলার পাশাপাশি আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলবে মেলা।

বিজ্ঞাপন

কমিটির সভাপতি স্থানীয় আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী বলেন, ‘২৪, ২৫ ও ২৬ এপ্রিল মেলা থাকবে। ২৫ এপ্রিল হবে বলিখেলা। লালদিঘীর মাঠেই হবে। তবে মাঠের ছয় দফা মঞ্চ উন্মুক্ত থাকবে। বাঁশ ও বালি দিয়ে মাঠে বলিখেলার মঞ্চ (রিং) তৈরি হচ্ছে। ২৬ এপ্রিল হবে চাঁটগাইয়া ঈদ উৎসব। মেলা হবে মাঠের বাইরে।’

এ সময় মেলা কমিটির সহ-সভাপতি সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল, চসিক কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব ও সংগীত শিল্পী আলাউদ্দিন তাহের ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালি যুব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে চট্টগ্রামের বদরপতি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর কুস্তির প্রবর্তন করেছিলেন যা চট্টগ্রাম অঞ্চলে ‘বলিখেলা’ নামে পরিচিত। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলা সনের ১২ বৈশাখ নিজ নামে লালদিঘীর মাঠে এই বলিখেলার সূচনা করেন তিনি।

সূচনার ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর লালদিঘীর মাঠে ১২ বৈশাখ অনুষ্ঠিত হয় বলিখেলা। বলিখেলার একদিন আগে-পরে তিনদিন ধরে লালদিঘীর পাড়সহ আশপাশের এলাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে বসে মেলা। এ মেলায় গৃহস্থালী পণ্য থেকে শুরু করে নানা পণ্যের পসরা বসে।

২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে জব্বারের বলিখেলা ও মেলার আয়োজন হয়নি। করোনা কাটিয়ে ২০২২ সালে জাঁকজমকভাবে ১১৩তম আসরের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও শেষমুহূর্তে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। বলিখেলার ভেন্যু লালদিঘী মাঠ সংস্কার করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ঘোষণার ইতিহাসের আলোকে স্থায়ী মঞ্চ, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ আরও কিছু স্থাপনা তৈরি করে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় লালদিঘীর মাঠ বন্ধ থাকায় এবং রমজান বিবেচনায় নিয়ে বলিখেলা ও মেলা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিল কমিটি।

এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে লালদিঘী মাঠের পরিবর্তে গোলচত্বরে বলিখেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার ১১৪ তম আসরও লালদিঘী ময়দানের পরিবর্তে গোলচত্বরে করার ঘোষণা দেওয়া হলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কারণ, লালদিঘী ময়দান গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শেষপর্যন্ত চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের হস্তক্ষেপে শত বছরের ভেন্যু লালদিঘীর ময়দানেই হচ্ছে বলিখেলা।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন