বিজ্ঞাপন

লাঙ্গল নিয়ে রওশন ও কাদেরের লড়াই শুরু

June 17, 2023 | 12:40 pm

আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের মধ্যে লড়াই প্রকাশ্যে এসেছে। এই আসনে দুজনই আলাদাভাবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। রওশন এরশাদ নির্বাচন কমিশনের কাছে তার দেওয়া মনোনীত প্রার্থী কাজী মামুনুর রশিদের জন্য নির্বাচনী প্রতীক লাঙ্গল চেয়েছেন। জিএম কাদেরও অবসরপ্রাপ্ত মেজর আনিসের জন্য লাঙ্গল প্রতীক চেয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনী প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে লড়াইয়ে ফলাফল আগামীকাল রোববার অথবা সোমবার স্পষ্ট হবে। এসময়ের মধ্যে রিটার্নিং অফিসার ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই করে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি খুলনা ও বরিশাল সিটি করর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনে রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি মেয়র প্রার্থী দেননি। এই দুটি সিটি করর্পোরেশনের নির্বাচনে রওশন এরশাদ তার দেবর জিএম কাদেরের সঙ্গে সমঝোতা করে প্রার্থী দেওয়া থেকে বিরত থাকেন বলে দলটির মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। রওশন এরশাদ জিএম কাদেরকে আগেই জানিয়ে দেন যে, তিনি গুলশান-বনানী নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী দেবেন। তবে শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্বাচনী কৌশল হিসেবে জিএম কাদের রওশন এরশাদের কথা রাখেননি বলে মনে করছেন উভয়পক্ষের অনেক নেতাকর্মী।

তাদের মতে, জিএম কাদের ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী না দিলে, দলীয় প্রতীক লাঙ্গলে দাবি এবং দলে তার নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সে করণেই জিএম কাদের বিদিশাপন্থী নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর আনিসুর রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এই মনোনয়ন চূড়ান্তের আগে বিদিশার সঙ্গে জিএম কাদেরের বৈঠক হয় বলে দলটির নেতাকর্মীরা জানান।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে বিদিশা সিদ্দিক বলেন, ‘আন্ডারস্টেন্ডিং না থাকলে রাজনীতি করা যায় না। জিএম কাদের সাহেব আমার গ্রুপের লোককে যোগ্য মনে করে গুরুত্ব দিয়ে ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন, এজন্য আমি খুশি। সামনে আরও খেলা আছে।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে জাপার নির্বাচনী প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সঙ্গে দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের লড়াই বাধে। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ওই সময় জাপা (এরশাদ) ছেড়ে নিজেই জাতীয় পার্টি নামে একটি দল গঠন করেন। সেসময় সিরাজগঞ্জসহ তিনটি আসনে উপনির্বাচন এবং টাঙ্গাইল সফিপুর একটি আসনে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তার দল থেকে লাঙ্গল প্রতীক চেয়ে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিলে প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হয়।

এক পর্যায় ওই লড়াই উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ২০০০ সালে এরশাদকে লাঙ্গল প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পক্ষে রায় দেন আদালত। রায়ে বলা হয়, এরশাদের অনুপস্থিতি কিংবা অসুস্থতায় রওশন এরশাদ দলীয় প্রার্থীকে লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন দিতে পারবেন। ওই সময় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশনে অনিবন্ধিত ছিল। তাই নির্বাচনী প্রতীকও অনিবন্ধিত ছিল। ২০০৮ সালে নির্বাচন সংক্রান্ত আইন আরপিও পাস হয়।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির রওশন গ্রুপের নেতা গোলাম মসিহ বলেন, ‘লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।’ তবে এসব বিষয় নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ২০০৮ সালে আরপিও বিধান অনুসারে রাজনৈতিক দলসহ প্রতীকসমুহ নিবন্ধিত হয়। ফলে নিবন্ধিত হওয়ার আগে যে রায় আদালত দিয়েছিলেন তার এখন আর কার্যকরিতা নেই।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী প্রতীক লাঙ্গল পেতে রওশনপন্থীরা  হয়তো উচ্চ আদালতে যাবেন। এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। কারণ তারা মামলায় বিবাদী করবে নির্বাচন কমিশনকে।

সারবাংলা/এএইচএইচ/আইই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন