বিজ্ঞাপন

বাজারে সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি, নিম্ন আয়ের মানুষের নিরানন্দ ঈদ

June 29, 2023 | 5:33 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাজারে সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি। সংসার চালাতেই খেটে-খাওয়া, নিম্ন, স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষেরা হিমশিম খাচ্ছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অতিরিক্ত বাস ভাড়া। ফলে অনেকের ঈদ কাটছে নিরান্দভাবে। এসব মানুষের অধিকাংশই ঢাকা ছেড়ে যাননি। তারা আগামীকাল অথবা পরশু স্বজনদের কাছে গিয়ে যতটুকু সম্ভব ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করবেন।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীতে বিভিন্ন বাসায় ঝিয়ের কাজ ( বুয়া) যারা করছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ আজ বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) এবং আগামীকাল শুক্রবার (৩০ জুন) বিভিন্ন বাসায় গিয়ে কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে মাংস নিয়ে স্বজনদের কাছে ফিরবেন।

কাজের বুয়া রহিমার সঙ্গে কথা হয় ঈদের আনন্দের বিষয় নিয়ে। ঈদ কেমন কাটছে তা জানতে চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিলেন, ভোর ৫টায় পল্টন কালভার্ট রোডের বাসায় গেছি। বাসারর কাজ শেষ করেছি ম্যাডাম সেমাই দিলেন তা খেয়ে বের হয়েছি মাংস টোকানোর জন্য। আর রাস্তায় খুঁজতেছি ট্রাকে করে চাল ডাল তেল বিক্রি করে নাকি। তা হলে চাল ডাল আর তেল নিতাম। কিন্তু জানতে পেরেছি, কোথাও আজ চাল-ডাল বিক্রি করবে না। এতে মনটা খারাপ হয়েছে।

রহিমা জানান, তিনি সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা কখনও ৮টা পর্যন্ত দুটি বাসায় কাজ করেন। এতে করে তার মাসিক আয় ১২ হাজার টাকা। ঘর অর্থাৎ (মেস) ভড়া দিতে হয় ৩ হাজার টাকা। বাকি টাকা তিনি কিশোরগঞ্জ বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে তার অসুস্থ স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়েও রয়েছে। মেয়েটি মাদরাসায় পড়ে। আর ছেলেটি ক্ষেতে কাজ করে। শুক্রবার পরিবহন ভাড়া কমবে সেই আশায় রহিমা বাড়ি যাবেন বিকেলে।

বিজ্ঞাপন

নিম্ন আয়ের মানুষের সুমন জানায়, তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় থাকেন তিনি। যখন সে কাজ পান তাই করে জীবিকা চালান। নির্দিষ্টভাবে তার কোনো উপার্জনের উপায় নেই। সংসার চলে তার টানাপোড়েনের মধ্যদিয়ে।

সুমনের কাছে জানতে চাইলাম পরিবার পরিজন কোথায়? জবাবে সুমন জানান, বাড়িতে থাকে। আগামীকাল সুমন বাড়ি যাবে। আজ তিনি কোরবানির মাংস কাটবেন। এতে তার ২/৩ হাজার টাকা আয় হবে। কষ্ট করে তার সংসার চললেও হাসিখুশি থাকেন সুমন। তবে কথা শেষ করে যাওয়ার সময় সুমন বলেন, ‘স্যার, জীবনডা আইসিইউতে আছে।’

ফকিরাপুল বাজারের সামনে থেকে রিকশায় চড়ে সেগুনবাগিচায় অফিসে আসার পথে কথা হয় রিকশাচালক ফরমানের সঙ্গে। তিনি জানান, অল্প কয়েকদিন হলো তিনি ঢাকায় এসেছেন। গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। গ্রামে তিনি কৃষিকাজ করেন। ঈদে উপার্জন শেষে শনিবার গ্রামের বাড়ি ফিরবেন। গত ৭ দিনে তিনি যা উপার্জন করেছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট।

বিজ্ঞাপন

গ্রামে কৃষি কাজ ফেলে ঢাকায় রিকশা চালনোর প্রয়োজন আছে? জবাবে ফরমান বলেন, ‘বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে কৃষকরা। ফসল ফলিয়েও উৎপাদন খরচ তুলতে পারেন না তারা।’

ফরমান বলেন, ‘ভালো করে, খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেন। কৃষকরা ফসল উৎপাদন করলেও তাদের ঘরে খাবার নেই। নামধারি কৃষকদের ঘরে খাবার আছে, তারা রাজনীতি করেন।’

রাজধানী ঢাকায় ছোট্ট একটি দোকানে পান জর্দা কলাসহ অন্যান্য শুকনো খাবারের ব্যবসা গুলজারের। তার এই দোকানের আয়েই চলে সংসার। বাড়ি জামালপুরে। গ্রামে এক ছেলে, এক মেয়ে। গুলজার থাকেন রাজধানীর একটি মেসে। ঈদের জন্য বাড়িতে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন।এই দিয়ে ঈদের আনন্দ করবেন পরিবার সদস্যরা। তবে গুলজার এবার বাড়ি যাবেন না।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন