বিজ্ঞাপন

বেসরকারি শিক্ষকদের ১ দফা দাবি ‘জাতীয়করণ’

July 17, 2023 | 11:38 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গত ১১ জুলাই থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছে সারাদেশ থেকে আসা মাধ্যমিক স্কুলের বেসরকারি (এমপিওভুক্ত) শিক্ষকরা। তাদের দাবি, বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোকে জাতীয়করণ করতে হবে। যতই দিন যাচ্ছে ততই আন্দোলন বেগবান করছেন শিক্ষকরা।

বিজ্ঞাপন

সবশেষ সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক বন্ধ করে দেয় শিক্ষকরা। আন্দোলনে উত্তাল হয়ে পড়ে প্রেসক্লাব এলাকা। শিক্ষকদের ঢল এক সময় কদম ফোয়ারা, পুরানা পল্টন মোড়, সচিবালয়ের পশ্চিমের সড়ক এবং সেগুন বাগিচায় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল দিনব্যাপী বন্ধ থাকে।

সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকদের ওপর এক দফা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ডিএমপির রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে পুলিশ শিক্ষকদের ওপর বারবার চড়াও হতে দেখা যায়। পুলিশের লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হন। কারও হাত, আবার কারও পা দিয়ে রক্ত পড়তে দেখা গেছে। এমনকি কয়েকজন শিক্ষকের মাথা ফেটে রক্ত পড়তেও দেখা গেছে।

উত্তাল আন্দোলনে শিক্ষকদের দাবি, একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে কেউ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করছেন, আবার কেউ বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক। কিন্তু মাসিক বেতনে বৈষম্য অনেক। এছাড়া বিভিন্ন ও ঈদ বোনাসেও আকাশ সমান তফাৎ রয়েছে। একই দেশে এত বৈষম্য চলতে পারে না। তাই তারা সকল বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণ চান।

বিজ্ঞাপন

শরীয়তপুর থেকে আসা নড়িয়া বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক আহসান হাবীব সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘যা বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চলছে না। ছেলে মেয়ের লেখাপড়াও চলছে না। অন্যদিকে, সরকারি চাকরিতে কেউ পিয়ন হয়েও বাড়ি গাড়ি করছে। ছেলে-মেয়েদের বিদেশে শিক্ষা দিচ্ছেন। ব্যাংক ব্যালেন্স করছেন। আমরা কি শিক্ষক হয়ে ভুল করেছি!’

রাজশাহী থেকে আসা স্কুল শিক্ষক দ্বীনবন্ধু মিত্র সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাধ্য হয়ে স্কুলে তালা দিয়ে ঢাকায় এসেছি। একটাই দাবি চাকরি জাতীয়করণ চাই। কিন্তু এখানে পুলিশ শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছে। এর নিন্দা জানাই। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাতে চাই, আপনি বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্য করবেন না। আমাদের দাবি মেনে নিন। আমাদের ভালোভাবে বাঁচতে সহায়তা করুন।’

কুমিল্লা থেকে আসা শিক্ষক হাফিজুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আজ সারাদেশের শিক্ষকরা এক দফা দাবি নিয়ে এই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে হাজির হয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবে না। জাতীয়করণ ছাড়া আমরা কিছু চাইও না। পুলিশ প্রশাসন দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। পুলিশ শিক্ষকদের ফোন কেড়ে নিয়েছে যেটি গুরুতর অন্যায়। এছাড়া পুলিশ শিক্ষকদের টার্গেট করে করে ভিডিও করছে। এর প্রতিবাদ জানাই।’

বিজ্ঞাপন

শিক্ষকদের ওপর পুলিশের অ্যাকশনের বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সারাদেশ থেকে শিক্ষকরা এসেছেন, তারা আন্দোলন করছেন। আমরা তাদের সম্মান করি। গত ১১ জুলাই থেকে তারা আন্দোলন করছেন আমরা কিছুই বলিনি। কিন্তু আজ যখন তারা সড়ক বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করেছে তখন আমাদের আপত্তি আছে। আমরা বলেছি, আপনারা সড়ক ছেড়ে দিয়ে আন্দোলন করেন। সড়ক বন্ধ হওয়ায় আশেপাশের সব সড়কে যানবাহন আটকে আছে। এই সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুধু শিক্ষকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। শিক্ষকরাও পুলিশের ওপর ইট পাটকেল মেরেছে। বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছে। এরপরেও আমরা কিছু বলিনি।’

শিক্ষকদের ফোন কেড়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ কারও ফোন কেড়ে নেয়নি। কারা নিয়েছে সেটিও আমরা জানি না।’

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন