বিজ্ঞাপন

আমাকে ভোট শেখাতে হবে না: প্রধানমন্ত্রী

October 6, 2023 | 7:02 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার অর্জন করে দিয়েছি। আজকে আমাকে ভোট শেখাতে হবে না। আমাকে শেখাতে হবে না।

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফরপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফরের নানা দিক তুলে ধরেন তিনি। পরে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে তারা অগ্নি-সন্ত্রাস, মানুষ হত্যা- এমন কোনো অপকর্ম নেই করেনি। এরপর আবার তাদের অবরোধ। মানুষ হত্যা এইগুলো আমরা দেখলাম। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যোগদান করে ৩০০ সিটের বিপরীতে তারা ৭০০ এর ওপরে প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়। নিজেরা মারামারি করে ইলেকশনে থেকে সরে গেলে। সরে গিয়ে ইলেকশটানে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করল। এখন তাদের মুখে আবার আমরা অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা শুনি এবং সব জায়গায় এটি প্রচার করে বেড়াচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা হঠাৎ এবং অন্যান্য দেশ আমাদের দেশের নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে? যখন মিলিটারি ডিটেকটর ছিল তখন আমরা ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছি। আমরা সংগ্রাম করেছি ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য। আমরা স্লোগান দিয়েছি আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব।’

নির্বাচনি সংস্কার থেকে শুরু করে জনগণের ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার কাজটা আওয়ামী লীগ সরকারেই করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন শেখাতে হবে না। কারণ বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রাম এটি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই আমরা করেছি এবং তারপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর সেই নির্বাচন হয়েছে বলেই জনগণ আমাদের বারবার ভোট দিয়েছে। আমরা ক্ষমতায় আছি বলেই আজকে অর্থনৈতিক উন্নতিটা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

পঁচাত্তর সাল থেকে ১৯৯৬, ২০০১ থেকে ২০০৮ এই ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল দেশকে কী উন্নতি দিয়েছে? মানুষের ভাতের ব্যবস্থা করতে পেরেছে? দুর্ভিক্ষ ছিল। উত্তরবঙ্গে দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকত, দক্ষিণেও। মানুষ একবেলা খাবার জোটাতে পারত না। ছেঁড়া কাপড় বিদেশ থেকে এনে পরাত। আজকে যতটুকু বাংলাদেশের মানুষ পাচ্ছে এটি আওয়ামী লীগ এবং আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তো উন্নতিটা হচ্ছে। এখন এত প্রশ্ন আছে কেন, সেটিই আমার কথা? তাহলে কি একটা দেশ এত দ্রুত উন্নতি করে ফেলছে, সেটিই সবার মাথাব্যথা হয়ে গেল কি না? এটিকে এখন কীভাবে নষ্ট করা যায়। এখন সেই প্রচেষ্টা কি না, সেই সন্দেহটি আমারও আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা জানে, নির্বাচনে ভোট পাবে না— তারা সব জায়গায় ধরনা দিয়ে বেড়াচ্ছে। কারণ তাদের তো কোটি কোটি টাকা। ক্ষমতায় থাকাকালে এত বেশি মানিলন্ডারিং এবং এত বেশি টাকার মালিক হয়ে গেঝে তারা অবাধে সেই টাকা খরচ করে যাচ্ছে। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে তারা বাস্তব অবস্থাটি বোঝে কিনা জানি না। কিন্তু তারা এই একই কথা, ভাঙা রেকর্ড বাজিয়েই যাচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভোটের জন্য তো আমরা সংগ্রাম করলাম। আমার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার অর্জন করে দিয়েছি। আজকে ভোটের অধিকার শেখাতে হবে না। আমরা তো আইয়ুব খানের আমল থেকে আন্দোলন করি, রাস্তায় থাকি। আমি তো এমন নয় যে নতুন আসছি। স্কুলজীবন থেকে রাস্তায় আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আইয়ুব খানের বিরেুদ্ধে করেছি ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে করেছি। জিয়া, এরশাদ, খালেদা সবাই তো ভোট চোর।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তো ভোট চুরি করা লাগে না। আওয়ামী লীগকে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেয়। আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করি। আর এদেশের মানুষ এখন জানে নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তি পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষের জীবনমানের উন্নতি হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, তারা তো বারবার তারিখ দিয়েই যাচ্ছে। এই তারিখে ফেলে দেবে, ওই তারিখে ফেলে দেবে। তারা আন্দোলন করুক। জনগণের জানমালের কোনো ক্ষতি যদি করা হয়, সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের আন্দোলনে বাধা দিচ্ছি না। তারা আন্দোলন লোকসমাগম করছে। খুব ভালো কথা। এতকাল চুরি করে যা টাকা বানিয়েছিল আর যে টাকা মানি লন্ডারিং করেছিল, সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে। অন্তত মানুষের পকেটে কিছু টাকা তো যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সফর শেষে গত বুধবার (৪ অক্টোবর) দেশে ফেরেন তিনি।

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন