বিজ্ঞাপন

১০ বছরেও শেষ হয়নি যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যার বিচার

October 9, 2023 | 9:15 am

আরিফুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলার দশ বছর পার হতে চলছে। হত্যার আড়াই বছর পর দ্বিতীয় দফায় ১৮ আসামির বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে আদালত চার্জগঠন করে সাক্ষীর জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। কিন্তু আইনের কিছু জটিলতা থাকার কারণে সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে ধীরগতিতে। যার ফলে হত্যার ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও মামলার বিচার কাজ শেষ হয়নি।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক এম আলী আহমেদের আদালতে বিচারধীন। গত ১২ জুলাই মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন পলাতক আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহমেদ ইমতিয়াজ তাওহিদ কোনো পদক্ষেপ নেননি। এজন্য আদালত আগামী ১০ অক্টোবর মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।

জানা গেছে, ঢাকার ৫ম অতিরিক্ত দায়রা জজ ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর মামলাটিতে ৭৫ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এমন অবস্থায় মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। মামলাটি গত বছর ২১ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এ বদলির আদেশ দেয় আইন মন্ত্রণালয়।

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর প্রসিকিউটর সাদিয়া আফরিন শিল্পী বলেন, ‘মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আমাদের আদালতে পাঠানো হয়। আদালত থেকে সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে সমন পাঠানো হয়েছে। সাক্ষীরা আদালতে আসছে না। তারপরও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে চেষ্টা করবো সাক্ষীদের হাজির করতে। সাক্ষী হাজির করে মামলার দ্রুত বিচার শেষ করবো। আর হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয় সেই প্রত্যাশা করছি। আশা করি, রায় ঘোষণার মধ্যে দিয়ে ভিকটিম তার ন্যায়বিচার পাবেন।’

বিজ্ঞাপন

আসামিপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল হক ফয়সাল বলেন, ‘মামলাটি সাক্ষ্য পর্যায়ে রয়েছে। এক বছরের অধিক সময় আগে সাক্ষ্য হয়েছে। আর সাক্ষী আসছে না। ১৮ জন তো আর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না। ৩/৪ জন ঘটনাটি ঘটিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে তাদের জড়ানো হয়েছে। আমরাও চাচ্ছি, মামলাটির বিচার যেন শেষ হয়। এতে যারা দোষী তারা সাজা পাবে, আর নির্দোষিরা খালাস পাবে।’

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে গুলশান ১নং শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণিবিতানের সামনে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মিল্কির এক সময়ের সহযোগী যুবলীগের আরেক নেতা জাহিদ সিদ্দিকী তারেকসহ ভাড়াটে খুনিরা তাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।

ওই ঘটনার পরের দিন মিল্কির ছোটভাই মেজর রাশেদুল হক খান বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় এজাহারনামীয় ১১ জন এবং অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে কথা উল্লেখ করা হয়। মামলাটি তদন্ত করে প্রথমে ১১ জনকে এবং পরে আবার ৭ জনকে অভিযুক্ত করে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

বিজ্ঞাপন

মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৮ আসামিরা হলেন, মো. সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, ফাহিমা ইসলাম লোপা, শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে পাপ্পু, সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশ রুমী, আমিনুল ইসলাম ওরফে হাবিব, সোহেল মাহমুদ ওরফে সোহেল ভূঁইয়া, চুন্নু মিয়া, আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, সাহিদুল ইসলাম, ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, জাহাঙ্গীর মণ্ডল, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, তুহিন রহমান ফাহিম, মোহাম্মদ রাশেদ মাহমুদ ওরফে আলী হোসেন রাশেদ ওরফে মাহমুদ, সাইদুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, সুজন হাওলাদার, ডা. দেওয়ান মো. ফরিউদ্দৌলা ওরফে পাপ্পু ও মামুন উর রশীদ।

আসামিদের মধ্যে প্রথম চার জন পলাতক। এছাড়া অন্য ১৪ জন আসামি জামিনে রয়েছেন।

মামলায় ৭৫ জন সাক্ষীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এআই/এমও

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন