বিজ্ঞাপন

ভোট দিনেই হবে: ইসি আনিছুর

November 26, 2023 | 7:39 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিনে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ভোট যখন হওয়ার কথা তখনই হবে। ভোট দিনে হওয়ার কথা, দিনেই হবে। ভোট রাতে হয়েছে বলে আমরা দেখিনি আমাদের সময়ে। আমরা এক বছর ৯ মাস দায়িত্বে আছি। ভোট দিনে হয়েছে, দিনেই হবে।

রোববার (২৬ নভেম্বর) সকালে সার্কিট হাউজে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আনিছুর রহমান বলেন, আমরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচনি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছি। আমাদের নির্দেশনায় বলেছি, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে হবে। কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া যাবে না। কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ করা যাবে না। কোনো শিথিলতা দেখানো যাবে না। এখানে যে বা যারা দায়িত্ব পালন করবেন, যথাযথভাবে করতে হবে। যদি কারও কোনো দায়িত্ব পালনে পক্ষপাতমূলক আচরণ থাকে, অর্থাৎ নিরপেক্ষমূলক আচরণ না করায় যদি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়, এর জন্য যে দায়ী থাকবেন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি, আমরা একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন করতে চাই। তার জন্য পরিবেশ তৈরি করতে যা যা দরকার সবই করা হচ্ছে। আপনারা যা আশঙ্কা করছেন, আমাদের কাছে কেউ এরকম কিছু বলেনি। আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। ছোট হোক বা বড় হোক, তারা অংশগ্রহণ করার আগ্রহ দেখিয়েছে।

‘মনে হচ্ছে যে এবারের নির্বাচনে অনেকেই মাঠে থাকবেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আশা করি। সে কাজটা আমরা করে যাচ্ছি। সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমরা করতে চাচ্ছি। এ নির্বাচন আমরা আমাদের চোখ দিয়ে দেখছি না, বিশ্ববাসীও কিন্তু দেখছে আমাদের নির্বাচন। কাজেই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য না করার কোনো বিকল্প নেই। যেকোনো মূল্যে করতে হবে,’— বলেন ইসি আনিছুর রহমান।

কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চাইলে কমিশনের ভূমিকা কী থাকবে— এমন প্রশ্নের জাবে আনিছুর রহমান বলেন, ‘৪৪টি নিবন্ধিত দল আছে। নির্বাচন করা না বা না করার এখতিয়ার তাদের আছে। তবে নির্বাচন বানচাল করা বা অন্যকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার অধিকার কাউকে আইন দেয়নি। কেউ যদি এরকম করে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ ভোট না করলে তার ব্যক্তিগত বা দলীয় বিষয়। কিন্তু আরেকজনকে তো বাধা দেওয়া যাবে না। ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে যা যা করা দরকার, সেদিক দিয়ে আমরা নজর দিচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপি নির্বাচনে এলে ভোটের তারিখ পেছানো বা পুনঃতফসিল ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে আনিছুর বলেন, ‘আমরা এখনো কারও কাছ থেকে আবেদন-নিবেদন কিছুই পাইনি। কেউ যদি নির্বাচনে আসে, নির্বাচনের সময় নিয়ে যদি তাদের কোনো কথাবার্তা থাকে, সেটি আমাদের জানালে আমরা বিবেচনা করব। বিবেচনা করার সময় আমাদের আছে।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভোটারকে আনা বা উপস্থিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন অথবা ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা কিংবা আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর না। যারা নির্বাচন করবেন সেসব প্রার্থী, দল, তাদের সমর্থক ও নেতাকর্মীদের এ কাজ করতে হবে। ভোটে আনার দায়িত্বটা তাদেরই। তবে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হলে বা এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করা হলে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে হস্তক্ষেপ করবে।’

নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে— এমন প্রশ্ন রাখা হয় এই নির্বাচন কমিশনারের কাছে। ভোটে সামরিক বাহিনী মোতায়েনের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে ইসি আনিছুর বলেন, ‘আগের সব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সামরিক বাহিনী মোতায়েন ছিল। এবারও একই ধারায় সামরিক বাহিনী মোতায়েনের জন্য প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচনি আচরণবিধি যাতে ভঙ্গ না হয়, সে জন্য আট শতাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামছেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা এবার ফুলটাইম কাজ করবেন। তারা যেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা প্রধান বিচারপতির কাছে গিয়েছিলাম। তার সম্মতিও পাওয়া গেছে।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপি নির্বাচনে না গেলে নির্বাচনের সৌন্দর্যহানি হবে কি না— এমন প্রশ্নে আনিছুর রহমান বলেন, ‘কেউ যদি না আসে, আমি কি জোর করে আনতে পারব? আমরা তাদের চারবার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এ মাসের ৪ তারিখেও নিবন্ধিত সব দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ২৬টি দল এসেছিল, ১৮টি আসেনি। না এলে তো জোর করে আনার সুযোগ নেই।’

এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজিদুর রহমান, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুছ আলী ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আইসি/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন