বিজ্ঞাপন

বিএনপির সাড়ে ১২শ নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে: কায়সার কামাল

December 18, 2023 | 9:01 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গত ১৪ সপ্তাহে ৭৯টি মামলায় বিএনপি বিভিন্ন পর্যায়ের ১২৪৯ জন নেতা কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির ২১ হাজার ৮৩৫ জন নেতা কর্মীকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করা হয়েছে বলে দাবি বিএনপির।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ১ নং হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল এমন কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেওয়া আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে আজ্ঞাবাহ করার এক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী। তার বক্তব্যে প্রতিভাত হয়েছে যে, জনগণের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার পূনঃপ্রতিষ্ঠার যে আপষহীন আন্দোলন বিএনপি চালিয়ে যাচ্ছে, সেই আন্দোলনকে স্তব্ধ করার জন্য বর্তমান অনির্বাচিত সরকার ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির ২১ হাজার ৮৩৫ জন নেতা কর্মীদেরকে অন্যায়ভাবে কারাগারে রেখেছে। গত ১৪ সপ্তাহে মোট ৭৯টি মামলায় সর্বমোট ১২৪৯ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, আইনজীবী আবেদ রাজা, ইউএলএফে সমন্বয় সৈয়দ মামুন মাহবুব, মো. আক্তারুজ্জামান, মো. কামাল হোসেন, মো. মাহবুবুর রহমান খান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রদত্ত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এর একটি বক্তব্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপিকে ভোটে আনতে সব চেষ্টাই করেছে আওয়ামী লীগ। এমনকি একরাতে সব নেতাকে জেল থেকে মুক্তির প্রস্তাবেও বিএনপি রাজি হয়নি’ বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘বারবার নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে, বিএনপি নির্বাচনে আসলে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে। শুধু পিছিয়ে দেওয়া নয়, বলা হয়েছে, সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার না করলে বাংলাদেশে আজকে হরতালের দিন গাড়ি চলত না। এ ছাড়া আমাদের অন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না। বিকল্পও ছিল না। যেটা করেছি আমরা চিন্তাভাবনা করেই করেছি। তাদের জেলে না রাখলে দেশ অচল হয়ে যেতো।’

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতার এই বক্তব্যই প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্রের সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে বর্তমান অনির্বাচিত শেখ হাসিনার সরকার কিভাবে করায়ত্ত করেছে।

‘আপনারা অবগত আছেন গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণ কালের মধ্যে বিএনপি আয়োজিত নয়া পল্টনে বিএনপির এক মহা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, যা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু মহাসমাবেশ চলাকালে সরকারি দল, তাদের পেটোয়া বাহিনী এবং দলদাসে পরিণত হওয়া আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে বিনা উস্কানিতে বিকট শব্দের সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাস এবং গুলি বর্ষণের মাধ্যমে বিএনপির জনসভা শুধু পণ্ডই করেনি, যুবদল নেতা, একজন সাংবাদিক এবং একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা, অগণিত নেতা কর্মী এবং জনগনকে আহত করা এবং বিশেষ করে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করে বিএনপির নেতা কর্মীদেরকে গ্রেফতার এবং নির্যাতন করার এক প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করেছিল।’

‘ড. আব্দুর রাজ্জাকের এই বক্তব্য বাংলাদেশের বিচার বিভাগের অস্তিত্বকে শুধু অস্বীকারই করেনি, জাতিকে বার্তা দিয়েছে যে, বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন সব কিছুই ফ্যাসিস্ট সরকারের ইচ্ছার কাছে মাথা নত করেছে। দেশের নির্বাহী বিভাগের প্রধান ব্যক্তি শেখ হাসিনার ইচ্ছা বা অনিচ্ছার উপরেই সবকিছু নির্ভর করে।’

‘জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূর্নঃবহাল ছাড়া, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করার যে সিদ্ধান্ত বিএনপি নিয়েছে সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে।’

বিজ্ঞাপন

কায়সার কামাল বলেন, ‘মহান বিজয় দিবসের এই মাসে আমরা পুনরায় অঙ্গীকার করতে চাই, বিএনপি এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সমমনা রাজনৈতিক দল, জোট এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে যে আন্দোলন চলমান, যতই জেল, জুলুম নির্যাতন আসুক না কেন সেই আন্দোলনের বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এদেশের মুক্তিকামী ও গণতন্ত্রপন্থী জনগণ আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।’

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন