বিজ্ঞাপন

৩টার ২৭% ভোট যেভাবে ৪টায় ৪০%— ব্যাখ্যা দিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী

January 18, 2024 | 10:36 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদন তৈরিতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত। ওই প্রতিবেদনে নির্বাচন কমিশনের বিকেল ৩টা ও বিকেল ৪টার সময় ঘোষণা করা ভোট পড়ার হার নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আন্তর্জাতিক মানের কোনো জার্নাল এটিকে গবেষণা হিসেবে পাবলিশ করা তো পরের কথা, গ্রহণই করবে না। কারণ এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের কোনো পদ্ধতি অনুসরণ করেনি। গবেষণার নামে তারা কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। অথচ গবেষণার মাধ্যমে তাদেরই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া উচিত ছিল।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। টিআইবির প্রতিবেদনটি গোঁজামিল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। গবেষণা প্রতিবেদন নয়, একে নিছক মতামত বলে অভিহিত করেন প্রতিমন্ত্রী।

মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, তারা ভোটের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিকেল ৩টায় ২৭ শতাংশ ঘোষণা করা ভোট বিকেল ৪টায় কীভাবে ৪০ শতাংশ হলো— এই প্রশ্ন তারা তুলেছে। কিন্তু গবেষণা করার উদ্দেশ্য প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া না। বরং গবেষণার শুরুতে প্রশ্ন আসে হাইপোথিসিস আকারে। পরে গবেষণা করে তার উত্তর বের করে প্রতিবেদনে উপস্থাপন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

টিআইবির উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনি গবেষণাপত্র দাবি করছেন। অথচ এর মধ্যে প্রশ্ন ও অভিযোগ ঢুকিয়ে রেখেছেন। উত্তরগুলো কোথায়? উত্তরগুলো খুঁজে বের করে মানুষকে জানানোর দায়িত্ব গবেষণার। সেই কাজটি এখানে করা হয়নি।

এ পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের ভোটের হার ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, বিকেল ৩টার সময় যে ভোটের হার ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটি তাৎক্ষণিক বা ওই মুহূর্তের তথ্য নয়। বরং সারাদেশের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে নির্বাচন কমিশনে যে তথ্যগুলো আসছিল, সেগুলো একীভূত করে বিকেল ৩টার সময় ভোটের হারটি ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে যে প্রক্রিয়ায় এই হিসাবটি করা হয়েছিল, তাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টার ব্যবধান ছিল। অর্থাৎ প্রধান নির্বাচন কমিশনার ৩টার সময় যখন বলছিলেন যে ভোটের হার ২৭ শতাংশ, সেটি আরও এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগের হিসাব। সেটিও ছিল আনুমানিক একটি হিসাব।

আরাফাত আরও বলেন, এরপর বিকেল ৪টার সময় যখন ৪০ শতাংশ ভোট পড়ার হিসাব দেওয়া হলো, সেটিও কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রেজাল্ট নয়। এটাও ছিল যতটুকু তথ্য হাতে ছিল, তার ভিত্তিতে দেওয়া একটি আনুমানিক হিসাব। আরও পরে যখন তাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ হিসাব এলো, তখন তারা যোগ করে হিসাব করে বললেন ভোট পড়েছে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সময়ের এই ব্যবধানটি কিন্তু খুবই স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক কিছু নয়। টিআইবির উচিত ছিল এই সত্যটি বের করে প্রকাশ করা। কিন্তু তারা সেটি না করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে দাবি করছে, এটি গবেষণা।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি টিআইবিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারি এবং চ্যালেঞ্জ করতে চাই— তারা আন্তর্জাতিক মানের কোনো জার্নালে গবেষণাটা পাঠিয়ে দেখুক, এটা কেউ পাবলিশড করবে না। যদি পাবলিশ করে, তাহলে আমি মেনে নেব তাদের এটা গবেষণা হয়েছে। অ্যাবসিলিউটলি গোঁজামিল দিয়ে একটি রিপোর্ট দাঁড় করানো হয়েছে। খুবই দুঃখজনক হলেও সত্য কাজটি করা হয়েছে এবং যারা এখানে সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের নির্বাচন, পলিটিক্যাল সায়েন্স— এ বিষয়গুলো নিয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

আরাফাত বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সুশীল সমাজ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে গবেষণা করবে এবং তার ফলাফল জনগণের সামনে তুলে ধরবে। টিআইবি যেটা করেছে, সেটা গবেষণা না, এটা তাদের মতামত।

তিনি বলেন, নির্বাচনে কিছু অনিয়ম হলেও নির্বাচন কমিশন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। যারা অনিয়ম করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। অনিয়মের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের শক্ত অবস্থানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বরং মিথ্যা ছড়িয়ে তাদের মনোবল দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা মানুষের মতামতকে তথ্য হিসেবে দেখিয়েছে। ৪২ হাজার কেন্দ্র থেকে মাত্র ৫০টি কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে পুরো নির্বাচন ঘিরে তৈরি রিপোর্ট কখনো সঠিক হতে পারে না। এত অল্প কেন্দ্রের ফলাফল বিশ্লেষণ করে কী করে এমন রিপোর্ট প্রকাশ করা সম্ভব!

সারাবাংলা/জেআর/এনইউ/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন