বিজ্ঞাপন

‘যততত্র কেজি স্কুল-কওমি মাদরাসা নিরুৎসাহিত করুন’

January 21, 2024 | 8:53 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: যততত্র কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয় ও কওমি মাদরাসা চালুকে নিরুৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি নজরদারিতে রাখার অনুরোধ করেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মতো যততত্র মাদরাসা হচ্ছে, একজন জনপ্রতিনিধির এমন বক্তব্যে জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এগুলোর বেশিরভাগই কওমি মাদরাসা। বেশিরভাগ অনিবন্ধিত। সেগুলোর কোনো রেজিস্ট্রেশনও নেই। হাটহাজারিতে আমাদের যে বড় মাদরাসা আছে, সেখান থেকে অনুমোদন নিয়ে এসে নূরানি মাদরাসাগুলো খোলা হয়।’

‘ওদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। আমরা তাদের কাছে নূরানি মাদরাসা কী পরিমাণ অনুমোদন দিয়েছে, সেটার ডাটাবেইজ চেয়েছি। অনেকগুলোর অনুমোদনও নেই, কিন্তু চালিয়ে নিচ্ছে, চলছে। ভিক্ষাবৃত্তির কাজে লাগিয়ে দিচ্ছে কিছু শিশুকে।’

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, ‘এবতেদায়ি মাদরাসা কিংবা কিন্ডারগার্টেন স্কুল- এগুলো খোলার আগে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু এটা ওরা নেয় না। সামাজিক বাস্তবতায় একটা বিদ্যালয় চালু হয়ে যাওয়ার পর বন্ধ করে দেওয়াটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। খুলে দেওয়ার পরে, কাগজপত্র যদি না-ও থাকে, তবুও একটা সোশ্যাল প্রেশার তৈরি হয় যে, এই বাচ্চাগুলো কোথায় যাবে। এটা অমানবিক বলা হয়ে থাকে সামাজিকভাবে। যেসব অভিভাবক এসব প্রতিষ্ঠানের সুবিধা নিচ্ছেন, সেটা এবতেদায়ি হোক আর কিন্ডারগার্টেন হোক, তাদের কারণে আমরা আর বন্ধ করতে পারি না।’

জনপ্রতিনিধিদের কঠোর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মনিটরিংটা করতে হবে মূলত। খোলার শুরুতেই, যখন উদ্যোক্তারা আপনাদের কাছে যাবেন, তখনই আপনারা তাদের নিরুৎসাহিত করবেন। আপনি মাদরাসা খুলছেন, কিন্ডারগার্টেন খুলছেন, আপনি কে, আপনার ডিটেইলসটা কী, আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড কী, জানতে চাইবেন অবশ্যই।’

বিজ্ঞাপন

‘রাতারাতি ফ্লোর ভাড়া করে শুরু করে দেওয়া হল, এভাবে তো চলতে পারে না। অভিভাবকদের বলতে হবে- আশেপাশে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে তো আসন খালি আছে, আপনি সেখানে আপনার সন্তানকে নিয়ে যাচ্ছেন না কেন? আমাদের সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, তৃণমূল পর্যায় থেকে আমাদের যারা জনপ্রতিনিধি আছেন, তাদের এসব বিষয় মনিটরিং করতে হবে।’

এছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপস্থিতিও কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের জন্য জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করেছেন মন্ত্রী।

ধর্মীয় শিক্ষার জন্য শিশুদের সরকারি আলিয়া মাদরাসায় পাঠানো আহ্বান জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘আমাদের দেশে সরকারি সিলেবাস দ্বারা পরিচালিত আলিয়া মাদরাসা আছে। সেখানে ন্যাশনাল কারিকুলাম পড়ানো হয়। বিশেষায়িত তিনটা সাবজেক্টও পড়ানো হচ্ছে। সুতরাং আলিয়া মাদরাসা থাকতে কেন আমরা যততত্র নূরানি মাদরাসা খুলব। কেউ যদি পড়তে চায়, সে আলিয়া মাদরাসায় গিয়ে পড়বে।’

‘হেফজ পড়ানোর নামে মাদরাসা খোলা হয়, কিন্তু সেটা রেগুলার স্কুলিংয়ের বাইরে বৈকালিক বিদ্যালয় হয়ে যায়। বিশেষায়িত ধর্মীয় শিক্ষাও যদি কেউ দিতে চান, তা-ও রেগুলোর স্কুলিংয়ের আওয়ারেই দিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসন এবং শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে অপপ্রচার মোকাবেলায় জনপ্রতিনিধিদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন কারিকুলাম, মূল্যায়ন পদ্ধতিটা এ বছর থেকে মাত্র শুরু হয়েছে। এখনও প্রথম মাস শেষ হয়নি। কিন্তু শুরু হওয়ার আগেই আলোচনা-সমালোচনা, অপপ্রচার। পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর আগেই ব্যাপক অপপ্রচার শুরু হয়েছিল। এখনও তো ক্লাসই সেভাবে শুরু হয়নি। অন্য দেশের ভিডিও জোড়াতালি দিয়ে কন্টেন্ট বানানো হয়েছে। পাঠ্যবইয়ে কিছু সমস্যা আছে, সেটা আমাদের নজরে এসেছে।’

সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুচ ছালাম, মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু ও এম এ মোতালেব এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা বক্তব্য দেন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়

সকালে নগরীর কে সি দে সড়কে নিজ নির্বাচনি কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এ সময় দক্ষিণের সভাপতি সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তরের সভাপতি এম এ সালাম, নগরের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির বক্তব্য দেন।

নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তৃতা করেন- উত্তরের সধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণের সহ-সভাপতি শাহাজাদা মহিউদ্দিন ও মোহাম্মদ নাছির, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন, সাবেক পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিত, নগর কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, উত্তর জেলার সদস্য বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার।

এনায়েত বাজারে শীতবস্ত্র বিতরণ

শনিবার রাতে নিজ নির্বাচনি এলাকা নগরীর গোয়ালপাড়ায় এনায়েত বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। নগর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শিবু প্রসাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, এনায়েত বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর সলিম উল্লাহ বাচ্চু, যুবলীগ নেতা রিটু দাশ বাবলু, ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল করিম, মনিরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন পলাশ, তৌহিদুল ইসলাম মিথুন, জুবায়ের আলম আশিক, ইয়াসির আরাফাত রিকু, শুভ দত্ত বক্তব্য দেন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন