বিজ্ঞাপন

‘আমি-ডামির নির্বাচন জনগণ মানে না’

January 27, 2024 | 8:46 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘যে নির্বাচন হয়েছে, সেটাকে কেউ বলে আমরা আর মামুরা, কেউ বলে আমি আর ডামি, আর কেউ বলে আমি-ডামি আর স্বামীর নির্বাচন। এ নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ মানে না।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর নুর আহমদ সড়কে দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে কেন্দ্রঘোষিত কালো পতাকা মিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি এবং অবৈধ সংসদ বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি কেন্দ্রঘোষিত এ কর্মসূচি পালন করে।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি-ডামি আর স্বামীর নির্বাচন। স্বামী মানে বোঝেন তো ? আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছিল, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নাকি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। পত্রিকায় দেখেছেন, একজন প্রার্থী বলেছেন, আমি ভারতের ক্যান্ডিডেট। তাকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে, তার কি সাজা হয়েছে ? কেন করেনি ?’

‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। কোন সাহসে একজন প্রার্থী, সে আবার আওয়ামী লীগের নেতা, আওয়ামী লীগের এমপি ছিল, সে বলতে সাহস পায় যে, সে ভারতের প্রার্থী ? এজন্য বলে যে, আমি-ডামি আর স্বামীর নির্বাচন। এজন্য এ নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ মানে না।’

বিজ্ঞাপন

ডামি সরকার টিকতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে এই সরকারকে বলা হতো বিনা ভোটের সরকার। ১৫৩ আসনে কোনো প্রার্থী ছিল না। ২০১৮ সালে হলো নিশিরাতের সরকার। আর এবারের সরকারকে সারা দুনিয়া বলছে, এটা ডামি সরকার। ডামি সরকার কি আসল সরকার হয় ? ডামি সরকার টিকতে পারে না। এ সরকারকে জনগণ ভোট দেয়নি।’

‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিকেল ৫টার পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে বলে, ভোট পড়েছে ২৮ শতাংশ। পাশ থেকে একজন বলে, না স্যার ৪০ শতাংশ। তখন সিইসি বলেন, ওহ আচ্ছা, ৪০ শতাংশ। পরে তিনি বললেন, তিনি নাকি ঘুমিয়েছিলেন। দেশে একটা জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমাচ্ছেন। স্বাভাবিক, ফলাফল তো ঠিক করাই আছে। কে কত ভোট পাবে, এটাও তো ঠিক করাই আছে। কারণ, বিরোধী দল তো নির্বাচন করেনি। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি। এই নির্বাচন কেউ মানে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি এ অবৈধ সংসদ বাতিল করতে হবে। সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে হবে। সেই নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এ দাবিতে আন্দোলন চলছে, চলবে এবং বিজয় হবে ইনশল্লাহ।’

বিজ্ঞাপন

কারাগারে যেতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ভয় পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তথাকথিত নির্বাচন হওয়ার আগে মাত্র কিছুদিনের মধ্যে আমাদের দলের এবং বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দশ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের আগে শত, শত নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়ার ঘটনা নাকি কাকতালীয়। আপনাদের কাছে কি এটা কাকতালীয় মনে হয়? এটা কোনোভাবেই কাকতালীয় নয়।’

‘ভয় দেখানোর জন্য এটা করা হয়েছে। এই সরকার গোটা বাংলাদেশকে একটি বৃহত্তর কারাগার বানিয়ে রেখেছে। এই বড় কারাগার থেকে ছোট কারাগারে যেতে শহীদ জিয়ার কোনো কর্মী, বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কর্মী ভয় পায় না। তারেক রহমানের কোনো কর্মী ভয় পায় না।’

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একদিন একদলীয় বাকশাল করেছিল। সেই বাকশালের গোরস্থানের ওপর আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র করেছিলেন। আবার এরশাদ মার্শাল ল করে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। সেই মার্শাল ল’র বিরুদ্ধে ৯ বছর লড়াই করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আবার গণতন্ত্র নির্বাসনে গেছে। তাকে উদ্ধার করার দায়িত্ব পড়েছে দেশনায়ক তারেক রহমানের ওপর।’

‘জিয়াউর রহমান জিতেছেন, বেগম খালেদা জিয়া জিতেছেন, একই পথ ধরে ইনশল্লাহ তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরাও জিতবো। আমার-আপনার দায়িত্ব শুধু ময়দানে থেকে লড়াইটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও নির্বাহী সদস্য মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং দক্ষিণ জেলার আহবায়ক আবু সুফিয়ান।

সমাবেশ শেষে কালো পতাকা মিছিল নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সারাবাংলা/আরডি/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন