বিজ্ঞাপন

রাজশাহীর ৯ উপজেলায় আ.লীগ প্রার্থীর ছড়াছড়ি

February 3, 2024 | 10:34 am

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: উপজেলা নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনও কয়েক ধাপে হবে। ইতোমধ্যে রাজশাহীর ৯টি উপজেলায় চলছে নির্বাচনি উত্তাপ। সমর্থন চেয়ে সম্ভব্য প্রার্থীরা পোস্টার-ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন। তিনটি পদে ৯টি উপজেলায় প্রায় অর্ধ শতাধিক প্রার্থী তাদের তৎপরতা শুরু করেছেন। তবে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ৬টি আসনেই নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে নানা বিভেদ। এ কারণে ৯টি উপজেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তাই অধিকাংশ উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ও সমর্থনের জন্য জোর তদবির চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেক চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী সংসদ নির্বাচনে এমপিদের বিরোধিতা করলেও বর্তমানে স্থানীয় এমপির প্রিয়ভাজন হওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ দলের হাইকমান্ডকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

তবে সম্প্রতি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকবে না। ফলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। এতে প্রার্থীর সংখ্যাও যেমন বাড়বে তেমনি বিভক্তিও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।

অপরদিকে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। ফলে নির্বাচনের মাঠে আলোচনায় নেই স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ কারণে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে এখন প্রত্যেকটি উপজেলায় চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান (নারী ও পুরুষ) পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরাই। তবে বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতা প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তারা দলের হাইকমান্ডের আনুষ্ঠানিক নির্দেশের অপেক্ষায় আছেন।

বিজ্ঞাপন

এবারে জেলার ৯টি উপজেলায় নির্বাচনি দৌড়ে এগিয়ে আছেন অনেকে। তারা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করছেন। সম্ভাব্য প্রার্থী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে একটি চিত্র উঠে এসেছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবারও প্রার্থী থাকছেন। এ ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান বদি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ, কাঁকনহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল মজিদ, গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান ও গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক, দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা বেলাল উদ্দিন সোহেল, গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান এবং সাবেক সরকারি কর্মকর্তা সুনন্দন দাস রতন আলোচনায় রয়েছেন।

তানোর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না এবারও প্রার্থী হতে চান। তিনি ছাড়াও এ উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনিয়া সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন ও গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া শরিফুল ইসলাম। এদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী ও মুণ্ডমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানীর ভাই। এছাড়াও আলোচনায় আছে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সুজন।

বিজ্ঞাপন

পবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী এবারও প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি ছাড়াও এ উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় আছেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ আলী খান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, সদস্য ফারুক হোসেন ডাবলু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এমদাদুল হক এমদাদ, পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল বারী ভুলু, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা।

মোহনপুর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম এবারও প্রার্থী হবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের দুলাভাই। এ ছাড়াও চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনায় আছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মেহেবুব হাসান রাসেল, জেলা যুবলীগ নেতা মোরশেদ হাসান রঞ্জু, ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বকুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সোহরাব আলী খান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সদস্য এনামুল হক ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত কুমার সরকার।

বাগমারা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার এবারও প্রার্থী হতে চান। তিনি ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন এ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু, রাজশাহী বারের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধা এবং সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা খাতুন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার আবুল।

দুর্গাপুর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম এবারও প্রার্থী হতে আগ্রহী। তিনি ছাড়াও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সরদার, জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকার, দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইস্তাজুল ইসলাম বাপ্পী এবং দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পুঠিয়া উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিএম হীরা বাচ্চু এবারও নির্বাচন করতে আগ্রহী। তিনি ছাড়া এখানে সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সামাদ, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মুকুল, জেলা পরিষদের বর্তমান সদস্য আসাদুজ্জামান মাসুদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রহিম কনক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক।

চারঘাট উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম এবারও প্রার্থী হতে চান। তিনি ছাড়াও এবার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান মামুন প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

বাঘা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু এবারও প্রার্থী হবেন। তিনি ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল মাসুদ হোসেন তুহিন।

সারাবাংলা/এমই/এনএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন