বিজ্ঞাপন

জিআই নিয়ে ভারতের ঘোষণা সাংঘর্ষিক হলে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ

February 11, 2024 | 5:29 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল’ নামে টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত। দেরিতে হলেও জেলা প্রশাসনর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্যাটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদফতরের (ডিপিডিটি)। এ ক্ষেত্রে ভারতের জিআই স্বীকৃতির ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু থাকলে আন্তর্জাতিক সংস্থায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। বৈঠক শুরুর আগে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই আবেদনের জার্নাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারত টাঙ্গাইল শাড়িকে তাদের জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণায় যদি সাংঘর্ষিক (কনফ্লিক্ট) কিছু থেকে থাকে, তাহলে আমরা এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা যেটা রয়েছে সেখানে আমরা যেন বিষয়টি উপস্থাপন করি। সেই নির্দেশনা মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রিসভার বৈঠকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতির সনদ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মাহবুব হোসেন বলেন, (মন্ত্রিসভার) বৈঠকে একটু আলোচনা হয়েছিল জিআই পণ্যগুলো নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, আমাদের যে পণ্যগুলো আছে (তার জিআই স্বীকৃত নেওয়ার জন্য) আমাদের পক্ষ থেকে যেন উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে টাঙ্গাইলের শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগরকলার জিআই স্বীকৃতির আবেদনের পর তাদের জিআই জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, রোববারের মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে সেই জার্নালগুলো দেওয়া হয়েছে।

কোনো অঞ্চলের পরিবেশ, জলবায়ু ও সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো যখন খাদ্যপণ্য, কৃষি পণ্য, হস্তশিল্প বা শিল্পজাত বা অন্য কোনো পণ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখে এবং ভৌগোলিক ও ঐতিহ্যগতভাবে ওই পণ্যকে নিজস্ব হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়, তাহলে সেটিকে ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য বা জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইনিডএকশন) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সাধারণত দেশের অধিকারে জিআই স্বত্ব থাকে।

রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে টাঙ্গাইল শাড়িসহ ৩ পণ্যের জিআই জার্নাল হস্তান্তর করা হয়। ছবি: পিএমও

কোনো পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেলে সেটিকে বৈশ্বিকভাবে বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং করা সহজ হয়। জিআই সনদ থাকলে সেই পণ্যের বাণিজ্যিক উৎপাদনের অধিকার ও আইনি সুরক্ষাও ওই দেশের অধীনেই থাকে। অন্য কোনো দেশ তখন ওই পণ্যের মালিকানা বা স্বত্ব দাবি করার সুযোগ পায় না। ফলে উৎপাদকের বাণিজ্যিক বা আর্থিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়।

ভারতের শিল্প মন্ত্রণালয় ‘টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল’কে নিজেদের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিলে তা বিতর্ক উসকে দেয়। পরে দ্রুতই টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন থেকেও ডিপিডিটিতে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়। এরপর একে বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জিআই জার্নাল প্রকাশ করেছে ডিপিডিটি। নিয়ম অনুযায়ী, এরপর দুই মাসের মধ্যে এই জার্নালের বিরোধিতা কেউ না করলে টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে সনদ পাবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ভারত আগেই এই শাড়িকে নিজেদের পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশেও টাঙ্গাইল শাড়ি জিআই স্বীকৃতি পেলে পণ্যটির অধিকার নিয়ে দুই দেশই দাবিদার হয়ে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে পণ্যটির স্বীকৃতি এককভাবে পেতে হলে বাংলাদেশকে ভারতের দেওয়া জিআই স্বীকৃতির সনদের বিরুদ্ধে আপিল করতে হবে।

ডিপিডিটির পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আলেয়া খাতুন এর আগে সারাবাংলাকে জানিয়েছিলেন, জিআই পণ্যে স্বীকৃতি নিয়ে বিবাদ হলে আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটস অরগানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) দ্বারস্থ হতে হয়। টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়েও ভারতের স্বীকৃতিকে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশ ডব্লিউআইপিওতে যাবে।সেখানে টাঙ্গাইল শাড়ির একক জিআই বাংলাদেশই পাবে বলে আশাবাদী তিনি।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন