বিজ্ঞাপন

ছাত্রকে গুলি করা সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা, পিস্তলটি অবৈধ

March 5, 2024 | 12:07 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

সিরাজগঞ্জ: শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে গুলি করার অভিযোগে শিক্ষক রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে। এছাড়াও তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ছাত্রকে গুলি করা পিস্তলটি অবৈধ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৪ মার্চ) রাত সোয়া ১২টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, সোমবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল (২২), শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জ এ ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে বর্তমানে ৩য় বর্ষে অধ্যায়নরত আছে। অন্য ৩য় বর্ষের আইটেম পরীক্ষা শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের একাডেমি ভবনের ৪র্থ তলায় ডা. সামাউন নূরের কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এসময় আমার ছেলের বন্ধু আক্তারুজ্জামান বিকেল ৪টার দিকে ফোন করে বলে, আপনি দ্রুত সিরাজগঞ্জ চলে আসেন। আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি তাৎক্ষণিক বগুড়া থেকে রওনা হয়ে সিরাজগঞ্জ এসে আমার ছেলেকে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে সংকটাপন্ন অবস্থায় দেখি। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমালের ক্লাসমেটসহ তার অনেক সহপাঠী জানান, আসামি কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের লেকচারার। তিনি সর্বদা শিক্ষকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন। তিনি সবসময় ব্যাগে অস্ত্র ও ছোরা নিয়ে ক্লাসে এসে অস্ত্র টেবিলের ওপর রেখে ক্লাসে লেকচার দিতেন। ছাত্রছাত্রীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্লাসে না আসতে বললে তিনি তাদের ভয়ভীতি ও গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আজ পরীক্ষা চলাকালে বিকেল ৩টার দিকে আসামি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ছাত্রছাত্রীদের অহেতুক বকাবকি করেন। বকাবকির একপর্যায়ে তার ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল বের করে আমার ছেলেকে হত্যার করার উদ্দেশ্যে গুলি করলে গুলিটি আমার ছেলের ডান পায়ের উরুর উপরের অংশ লেগে গুরুতর জখম করে।

তিনি মামলায় আরও উল্লেখ করেন, সহপাঠীরা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে চাইলে আসামি অস্ত্র উঁচু করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলে, তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস তাহলে তোদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব। তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা চলাকালে আমার ছেলের বন্ধুরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে সিরাজগঞ্জ থানা পুলিশ, ডিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিকে অস্ত্রশস্ত্রসহ থানায় নিয়ে যায়।

সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি অবৈধ। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা দায়ের হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, তদন্ত কমিটি বর্ণিত বিষয়ে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিস্তারিত তদন্তপূর্বক এ বিভাগে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

প্রসঙ্গত, সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় তাকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত ডা. রায়হান শরীফ কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইআ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন