বিজ্ঞাপন

বিএনপির সঙ্গে ‘মাখামাখি’ সম্পর্ক রাখতে চায় না গণতন্ত্র মঞ্চ

March 14, 2024 | 4:19 pm

আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের সম্পর্ক অনেকটা অবনতি হয়েছে। মঞ্চের নেতারা আগের মতো বিএনপির সঙ্গে ‘মাখামাখি’ করে চলবেন না। মঞ্চের নেতারা নিজস্ব ২২ দফাসহ জনসম্পর্কিত দাবি নিয়ে রাজপথে থাকবেন। থাকবে যুগপৎ আন্দোলনেও। তবে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি নিয়ে এককভাবে নতুন করে পথ চলবে গণতন্ত্র মঞ্চ। এছাড়া আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা অংশ নিতে পারবেন। গণতন্ত্র মঞ্চের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিষয়গুলো নিয়ে শিগগিরই গণতন্ত্র মঞ্চের সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নেতারা। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে সম্পৃক্ত দলগুলো তাদের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেবে।

গণতন্ত্র মঞ্চ সাতটি দল নিয়ে গঠিত হলেও এখন এ সংখ্যা ছয়। গণঅধিকার পরিষদ গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে বেরিয়ে গেছে। ফলে  গণতন্ত্র মঞ্চে এখন বাম ধারার ছয়টি দল রয়েছে। দলগুলো হলো- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

এসব দলের নেতারা জানিয়েছেন, ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন রয়েছে। নির্বাচনের পর লিয়াজোঁ কমিটির কোনো বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়নি।

বিজ্ঞাপন

নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, বিএনপির সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। তবে মঞ্চের কয়েকজন নেতা বিএনপির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে চান। তবে মঞ্চের বেশিরভাগ নেতারা চাচ্ছেন, নিজের মতো পথ চলতে। অবশ্য বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনেও থাকতে চান তারা। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের পাশাপাশি আবার নিজস্বভাবে কর্মসূচি পালন করতে চায় গণতন্ত্র মঞ্চ। তবে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কটা যেন মাখামাখি পর্যায়ে না যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে চান তারা।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা মনে করেন, বিএনপির অনেক ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যুগপৎ আন্দোলনের অংশীদাররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে গণতন্ত্র মঞ্চ তাদের নিজস্ব এজেন্ডা এবং ২২ দফা দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। রোজার মাসে তারা বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি হাতে নেবে না। কেবল তাদের নিজস্ব জনসম্পর্কিত দাবিতে রাজপথে থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি মাসের মধ্যে বিএনপির সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে তারা বিএনপির কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর চাইবেন। প্রশ্নের জবাবে নেতারা সন্তুষ্ট হলে গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপির সঙ্গে থাকবে কি থাকবে না সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

এসব বিষয়ে গণতন্ত্রে মঞ্চের নেতা সাইফুল হক জানান, চলতি মাসে বিএনপির সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। যুগপৎ আন্দোলনসহ অন্যান্য আন্দোলনের বিষয় নিয়েও বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

তিনি জানান, জনসম্পর্কিত দাবি নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ রাজপথে থাকবে। পাশাপাশি ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। সেই হিসেবে আমরা সরকারকে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে অবিলম্বে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি নিয়ে মাঠে থাকব।

তিনি আরও জানান, আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গণতন্ত্র মঞ্চ অংশ নিতে পারে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা হবে। যেহেতু স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে হচ্ছে না, সেহেতু নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।

রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের প্রধান অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বিএনপির সঙ্গে সুসম্পর্ক বলেন আর অবনতি বলেন কোনোটাই নেই। আমরা তাদের বলেছি, আমাদের আন্দোলন ব্যর্থ হলো কেন—বিষয়টি পর্যালোচনা করেন, আমরাও করি। তারা হয়তো পর্যালোচনা করার কাজ অব্যাহত রেখেছে। আমরাও পর্যালোচনা করছি।

বিজ্ঞাপন

অপর এক নেতা বলেন, বিএনপির সঙ্গে আমরা শুরু থেকেই মাখামাখি সম্পর্ক চাইনি। কিছু নেতা চেয়েছেন, তাই আন্দোলনের স্বার্থে তাদের (বিএনপি) সঙ্গে সম্পর্কটা মাখামাখি পর্যায়ে চলে যায়। এখন ওখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/আইই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন