বিজ্ঞাপন

‘শিষ্যের হাতে গুরু নিহতে’র পর যশোরে তৎপর পুলিশ!

March 15, 2024 | 10:30 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

যশোর: যশোরের আলোচিত সন্ত্রাসী ও মাদক বিক্রেতা রমজান শেখ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের পাশাপাশি রমজানের অস্ত্রভাণ্ডার ও মাদকের চালান উদ্ধারে জোর তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ৩২টি মামলার আসামি রমজানের ঘাতক ‘পিচ্চি রাজা’র অস্ত্র-মাদকের সন্ধানেও পুলিশ তৎপর রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত ৮ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের রেলগেট এলাকায় ‘শিষ্য পিচ্চি রাজা’র হাতে ‘গুরু রমজান’ খুন হওয়ার পর এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপরই রমজানের শেল্টারদাতা ও সহযোগী এবং পিচ্চি রমজানের সহযোগীদের গ্রেফতার এবং অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে অভিযান শুরু করে পুলিশ।

নিহত রমজানের পরিবারের দাবি, এলাকার ‘পিচ্চি রাজা’ ও তার সহযোগীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় ৯ মার্চ সন্ধ্যায় ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন নিহত রমজানের মা রেখা বেগম।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী ও আলোচিত মাদক বিক্রেতা ৩২ মামলার আসামি রেলগেট এলাকার রমজান শেখ (৩০) হত্যাকাণ্ডের পর নিহত রমজান ও ঘাতক পিচ্চি রাজার কবজায় থাকা অস্ত্র ও মাদকের চালান নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। আটক পিচ্চি রাজা ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে দেশি-বিদেশি কিছু অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হলেও নিহত রমজানের দখলে থাকা অস্ত্র ও মাদকের চালান নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, রমজান হত্যা মামলা দায়েরের পর র‌্যাব-৬ যশোরের ক্যাম্পের সদস্যরা ১১ মার্চ যশোরের শংকরপুর, বাঘারপাড়া ও শার্শা এলাকা থেকে রমজান হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি আলোচিত সন্ত্রাসী পিচ্চি রাজাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে দেশি-বিদেশি ৯টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

পিচ্চি রাজা ৯টি অস্ত্রসহ আটক হওয়ার পর থেকে রেলগেট, খড়কি, রায়পাড়া ও রেলস্টেশন এলাকায় এখন রমজানের অস্ত্র ও মাদক নিয়ে আলোচনা চলছে।

জানা গেছে, গত একবছর ধরে রেলগেট এলাকার মাদক বিক্রিতে আধিপত্য ছিল রমজান শেখের। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার থেকে তার কাছে ইয়াবার চালান আসতো। আর চৌগাছার ছুটিপুরসহ সীমান্ত এলাকা থেকে আসতো ফেনসিডিলের চালান। রেলগেট এলাকায় প্রতিদিনই কয়েক লাখ টাকার মাদকের কারবার ছিল নিহত রমজানের। রমজানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি চক্র এই মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করতো। এই মাদকের কারবারে আধিপত্য বজায় রাখার জন্য দেশি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল রমজান চক্রের।

বিজ্ঞাপন

রমজানের এই কারবারে সহযোগী ছিল, রমজানের ছোট ভাই সবুজ, রেলস্টেশন পাড়ার কুরবান, জোসনার ছেলে রকি, একই এলাকার জুয়েল, রুবেল, মুন্না পিচ্চি বাবুসহ অন্তত ১৫ জন।

অভিযোগ রয়েছে, রমজানের নেতৃত্বে এই মাদক-সন্ত্রাসী চক্রের আশ্রয় দাতা তার চাচা শিকদার। শিকদারের এই পরিচয় প্রকাশ্যে না এলেও তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান মুকুলের গাড়িচালক কামাল হত্যা, শহিদ ড্রাইভারের ছেলে রুবেল হত্যাকাণ্ড ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা তপু হত্যাচেষ্টার মামলাও রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, রমজানের অস্ত্র ও মাদকের নিয়ন্ত্রণ এখন শিকদার নিজের হাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি যারা শিকদারের বিরোধিতা বা ঘায়েল করার চেষ্টা করছে তাদেরকে রমজান হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পুলিশের একাধিক টিম রমজান ও পিচ্চি রাজার অস্ত্র-মাদকের চালান উদ্ধারে তৎপর রয়েছে। পাশাপাশি তাদের সহযোগীদের গ্রেফতারেও নজরদারি চলছে। পুলিশ এই দুই বাহিনীর অস্ত্র-মাদকের কারবার নির্মূলে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, রমজান হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত পিচ্চি রাজা সহযোগীসহ গ্রেফতার হয়েছে। পাশাপাশি অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতার এবং অস্ত্র-মাদক উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আর নিহত রমজানের অস্ত্র-মাদকের চালানের ব্যাপারেও তারা অনুসন্ধান করছেন।

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন