বিজ্ঞাপন

গরমে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনা সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি ডিএমপির

April 23, 2024 | 11:45 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহে সাপের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। ফলে বাড়ছে সাপে কাটায় মৃত্যুর ঘটনা। ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সাপের দংশনে মৃত্যুর সংখ্যা বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছে বিশিষ্টজনরা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ’র (এসআরটিবিডি) সহযোগিতায় ডিএমপির দারুস সালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রচারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। সেখানে সাপের কামড় থেকে আত্মরক্ষার নানা কলাকৌশল সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহআলী ও দারুস সালাম থানা এবং এর অন্তর্গত পুলিশ ফাঁড়ির বিভিন্ন পদমর্যাদার কমকর্তাসহ মিরপুরের স্থানীয় শতাধিক মানুষ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সাপ উদ্ধার ও উপযুক্ত পরিবেশে অবমুক্ত করার কাজের সঙ্গে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, বেশকিছু প্রজাতির সাপের প্রজনন মৌসুম কাছাকাছি হওয়ায় এবং গরমে আরামদায়ক পরিবেশের সন্ধানে সাপ জলাজঙ্গল ছেড়ে ফাঁকা ঘরবাড়ি ও বাসগৃহসংলগ্ন ছায়াযুক্ত পরিবেশে চলে আসছে। এতে মানুষের সঙ্গে সাপের সংঘাত ও সাপেকাটার ঘটনা বেড়ে গেছে।

সচেতনামূলক প্রচারাভিযানে এসআরটিবিডি’র বক্তারা বলেন, মানুষের বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসেন বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকেও সাপ উদ্ধারের আহ্বান পাওয়া যায়। পুলিশ সদস্যরা সাপের দংশনে করণীয় বিষয়ে স্বচ্ছ জ্ঞান অর্জন করলে গ্রাম ও শহরে বসবাসকারী মানুষকে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে জীবন রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন। এতে ব্যাপকভাবে কমে আসবে সাপের দংশনে মৃত্যুর সংখ্যা।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবছর সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ সাপের কামড়ে মারা যাচ্ছেন বলে অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয়। সেজন্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা সাপে কাটা রোগীকে ওঝার কাছে না পাঠিয়ে অনতিবিলম্বে সরকারি হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

এসআরটিবিডি’র স্বেচ্ছাসেবী মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে রোগীর শরীরে এন্টিভেনম প্রয়োগ করার মাধ্যমে মৃত্যুহার বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।’

বিজ্ঞাপন

সাপ সম্পর্কিত প্রাচীন মতবাদ ও ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারলে মৃত্যুর হার বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে অভিমত খাদিজাতুল কোবরা বেলী নামের নারী স্বেচ্ছাসেবীর। তিনি জানান, বাংলাদেশে প্রায় ১০৫ প্রজাতির সাপ রয়েছে। এর মধ্যে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় এমন বিষধর সাপের সংখ্যা ১০টির মতো। বাকিগুলো দুর্লভই বলা চলে। সুতরাং, আমরা যদি একটু সচেতন হই, খুব সহজেই সাপের কামড় থেকে জনগণকে বাঁচাতে পারি।

সাপের প্রজাতির ধারণা দিয়ে স্বেচ্ছাসেবী আল আমিন হোসেন জানান, দাঁড়াস সাপ, ঘরমনি, জলধোড়া, দুধরাজ, লাউডগা, কালনাগিনী, হেলে প্রভৃতি উপকারী ও বিষহীন সাপের পাশাপাশি পদ্ম গোখরা, খৈয়ে গোখরা, রাসেল ভাইপারস (চন্দ্রবোড়া), কালাচ, শঙ্খিনী প্রভৃতি বিষাক্ত প্রজাতির সাপের দেখা মেলে।

সম্প্রতি বিষযুক্ত রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ উদ্ধারের ঘটনা উল্লেখ করে এসআরটিবি’র স্বেচ্ছাসেবী সাদ আহমেদ অপু বলেন, ‘এই সাপকে অনেকে অজগরের বাচ্চা ভেবে হেলাফেলা করেন। অসচেতনতার কারনে রাসেল ভাইপারস সাপের কামড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।’

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য রক্ষাসহ বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য সৃষ্টি, চোরা শিকারী ও বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণের আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

মিরপুর ডিভিশনের অধীন দারুস সালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মফিজুর রহমান পলাশের সঞ্চালনায় এতে দারুস সালাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল উদ্দিন, শাহআলী থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মো. হাবিবুর রহমান, বিভিন্ন ফাঁড়িতে কর্মরত পুলিশ সদস্য, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি সাব্বির আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন