বিজ্ঞাপন

বেনজীরের ৮৩ দলিলের সম্পদ ক্রোক ও ৩৩ ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ

May 23, 2024 | 10:17 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

আইনজীবী আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘দুদকের আবেদনে সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন।’

দুদক সূত্র জানিয়েছে, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সব স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য আদালতে আবেদন করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম। আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

এ সময় দুদকের পক্ষে আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

শুনানির পর আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ১৪ ধারা এবং দুদক বিধিমালা ২০০৭ এর বিধি ১৮ অনুযায়ী, সব স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া হলো। আবেদন অনুযায়ী ৮৩টি জমির দলিল ও ৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আদেশ দেন আদালত।

৩১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র‍্যাবের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের বিপুল অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি। যদিও ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি অবৈধ সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় ওই দৈনিকে বেনজীরের ঘরে ‘আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে তার নানা অর্থ সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়।

বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়া তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার কাছের এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানে রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠা জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

‘বেনজীরের মতো অবস্থা আসাদুজ্জামানেরও হতে পারে’
বেনজীরের সম্পদের তদন্ত চেয়ে দুদকে আবেদন ব্যারিস্টার সুমনের
২ মাসের মধ্যে বেনজীরের সম্পদ নিয়ে প্রতিবেদন চাইলেন হাইকোর্ট
বেনজীর ও তার পরিবারের দুর্নীতি তদন্তে দুদকের কমিটি
সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পদের অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট
বেনজীরের সম্পদ: দুদক তদন্ত না করলে আদালতে যাবেন ব্যারিস্টার সুমন

গত ২৩ এপ্রিল পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ তার পরিবারের সম্পদের বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুই মাসের মধ্যে দুদককে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যানের করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম সারওয়ার হোসেন ও আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। বেনজীর আহমেদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক ও সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে গত ২১ এপ্রিল পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের অনিয়ম-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।

রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, দুদক কমিশনার (তদন্ত), দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ও দুদক সচিবকে বিবাদী করা হয়।

এ ছাড়া সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের বিপুল সম্পদ অর্জনে নেপথ্যের অনিয়ম-দুর্নীতি, পদ-ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বউদ্যোগে অনুসন্ধানে নামতে গত ২১ এপ্রিল কমিশনের চেয়ারম্যানের দপ্তরে আবেদন করেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

সুমনের আবেদনে বেনজির আহমেদের পাশাপাশি তার স্ত্রী জিসান মির্জা, দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন