বিজ্ঞাপন

রেমালের ‘লেজে’র আঘাতে কাঁপছে উপকূল, দুর্বল হতে আরও দেরি

May 27, 2024 | 9:19 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের অগ্রভাগ উপকূলে আঘাত করেছিল সন্ধ্যায়। এরপর রাত পেরিয়ে ভোর হয়েছে, ফুটেছে দিনের আলো। কিন্তু রেমালের শক্তিমত্তা কমেনি। প্রায় ১৫ ঘণ্টা পেরিয়েও প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারেই স্থলভাগে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। রেমালের ‘লেজ’ তথা নিম্নভাগ এখনো উপকূলের বিভিন্ন এলাকা তছনছ করে এগিয়ে চলেছে। রেমালের দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় এবং তা থেকে আরও দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৭ মে) সকাল ৯টার দিকে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের নিম্নভাগ এখনো খুলনার কয়রা অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র বেগে বয়ে যাচ্ছে। যশোর, নড়াইল, মাগুরা হয়ে এটি স্থলভাগ অতিক্রম অব্যাহত রাখবে।

সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় আবহাওয়া অধিদফতর ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত ১৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে খুলনার কয়রা এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তরে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে। আগামী দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে এটি কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, এখনো প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্ব্বোচ একটানা গতিবেগ ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ফলে আগের জারি করা মহাবিপৎসংকেত বহাল রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সকাল ৯টার দিকে আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, রেমালের নিম্নভাগ এখন প্রবল শক্তিমত্তা নিয়েই স্থল অতিক্রম করছে। আরও দুই-তিন ঘণ্টা পর হয়তো এটি শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় ও পরে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। একবার শক্তি হারাতে শুরু করলে এটি দ্রুতই দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আমরা আশা করি।

এই আবহাওয়াবিদ জানালেন, এখন পর্যন্ত রেমালের আঘাতে স্থলে বাতাসের সবোর্চ্চ একটানা গতিবেগ পরিমাপ করা হয়েছে ঘণ্টায় ১১১ কিলোমিটার। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে পটুয়াখালী ও জেলার খেপুপাড়ায় বাতাসের এই গতিবেগ পরিমাপ করা হয়েছে।

এ অবস্থায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে আগের মতোই ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। উপকূলীয় জেলাগুলোর মধ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা ও পটুয়াখালী এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর এলাকাও ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকেও আগের মতো ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপের পার্থক্য বেশি হওয়ার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর এলাকায় নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে আট থেকে ১২ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের আট বিভাগেই দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এর প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর/এমও

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন