বিজ্ঞাপন

রেমালে পশ্চিমবঙ্গে ৬ প্রাণহানি, ঝড়-বৃষ্টি অব্যাহত

May 28, 2024 | 12:00 am

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূলের মতো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ উপকূলেও আছড়ে পড়েছিল প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সেখান থেকে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের মতোই পশ্চিমবঙ্গেও ভারী বর্ষণ আর তীব্র ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে সব এলাকায়। রেমালের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে প্রাণহানি ঘটেছে অন্তত ছয়জনের।

বিজ্ঞাপন

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, রেমালের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শহরটিতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৪৬ মিলিমিটার। কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ৭০ কিলোমিটচার থেকে ৯১ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে বয়ে গেছে ঝড়ো হাওয়া।

পশ্চিমবঙ্গে রেমালের কারণে যে ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন তাদের মধ্যে তিনজন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার, দুজন পূর্ব বর্ধমানের, একজন কলকাতার। ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ ভেঙে কলকাতার পাঠভবন স্কুল ভবনের একটি দেয়াল ভেঙে গেছে। কলকাতার বিভিন্ন সড়ক থেকে এখনো পানি নামেনি। কোনো এলাকায় সড়কে হাঁটুপানি জমে রয়েছে। এর সঙ্গে ঝড়-বৃষ্টি তো আছেই।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

আনন্দবাজারের খবর বলছে, দিঘা, রামনগরসহ পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এসব এলাকায় অনেক জায়গায় কৃষিজমিতে সাগরের লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়েছে। অনেক এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জায়গায় জায়গায় বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়েছে অনেক জায়গায়।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার রাঙাবেলিয়াতে রোববার রাতেই গোমর নদী বাধে বেশকিছু জায়গায় ধস নামে। গ্রামবাসী সকাল থেকে প্লাস্টিক ও ত্রিপল দিয়ে বাধ মেরামতের কাজ শুরু করেন। এই জেলাতেও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। রাজপুর-সোনারপুর পৌরসভার কর্মীরা ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও দিনভর উপড়ে পড়া গাছ ও ডালপালা কাটতে ব্যস্ত ছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনাতেও ছিল একই চিত্র। একটি গাছ উপড়ে পড়লে যশোর রোডে তিন ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

বিজ্ঞাপন

রেমালের প্রভাবে হাওড়া স্টেশন থেকে দক্ষিণপূর্ব রেলের ট্রেন চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাওড়া-পাঁশকুড়া, হাওড়া-মেচেদা আপ এবং ডাউনের ছয়টি লোকাল ট্রেন বাতিল হয়েছে। বৃষ্টি না থামলে আরও ট্রেন বাতিল হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে রেলওয়ে। অন্যদিকে হুগলিতে কৃষিজমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গঙ্গাপারের শতাধিক মানুষকে সরিয়ে এনে রাখা হয়েছে শেল্টারে।

পশ্চিমবঙ্গেও অনেক এলাকায় কৃষিজমিতে প্রবেশ করেছে সাগরের লবণাক্ত পানি। ছবি: আনন্দবাজার

সোমবার রাতে পূর্ব বর্ধমানে ঝড়ো হাওয়া কমলেও বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। বীরভূমেও সোমবার বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। নদিয়ার করিমপুরে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গেছে বিঘার পর বিঘা কলার বাগান। জেলায় আনুমানিক পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে কলাবাগানের ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রাতভর ঝড়ের পর সোমবার রেমালের শক্তি কমলেও সারা দিন ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি সমানে চলেছে মুর্শিদাবাদে। আম ও লিচু বাগানে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে এই জেলায়। জলোচ্ছ্বাসও দেখা গেছে জেলার ভাগীরথীতে। একাধিক জায়গায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে ভাগীরথীতে। জেলাজুড়ে বেশির ভাগ জায়গায় নেই বিদ্যুৎ। অন্যদিকে মালদহের মানিকচকে খেয়া পারাপার বন্ধ ছিল সোমবার। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলাগুলোতেও দেখা গেছে একই চিত্র। হালকা বৃষ্টি হলেও তেমন ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি কোচবিহার ও দার্জিলিং থেকে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন