বিজ্ঞাপন

বাণিজ্যিক টাওয়ারে ‘টাকলা স্বপন’র অবৈধ টয়লেট ব্যবসা

May 27, 2018 | 6:06 pm

। সারাবাংলা ডেস্ক।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : রাজধানীর পল্টনের কালভার্ট রোডে অফিস ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জন্য বিক্রি করা টাওয়ারে অবৈধ গণ টয়লেট এবং রমজান মাসে অবৈধ ইফতার বাজার বসিয়ে টুপাইস কামিয়ে নিচ্ছেন এই অঞ্চলের সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ মঈনুল ইসলাম স্বপন। ১৫ তলা ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে অর্ধ-শতাধিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, অফিস, চেম্বার থাকলেও এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সামান্য তোয়াক্কা না করে স্বপন এই অবৈধ ব্যবসা ফেঁদেছেন।

মালিক সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশে এ বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। তারা চান এসব অবৈধ ব্যবসা তুলে দেওয়া হোক।

একটি মারধর ও অস্ত্র প্রদর্শনের মামলায় এরই মধ্যে জেলে রয়েছেন স্বপন ওরফে টাকলা স্বপন। অভিযোগ রয়েছে, টাওয়ারটির কেয়ারটেকারের দায়িত্বের নামে এসব অসাধু কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন স্বপন। ভবনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও যখন তখন মারধোর করা, হুমকি ধমকি দেওয়া, ব্যবসায়ীদের কারণে অকারণে অপমান করার অভিযোগ অসংখ্য।

বিজ্ঞাপন

এ টাওয়ারে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। জরুরি কাজে প্রতিদিন শত শত লোক আসা-যাওয়া করেন এই বিজনেস পয়েন্টে। কিন্তু ব্যস্ততম এই টাওয়ারের দুই প্রবেশমুখের একটি দখল করে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে ইফতারি বাজার।

রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের প্রবেশ পথ পুরো দখল করে সামিয়ানা টানিয়ে জমজমাট ইফতারির বাজার চলছে। আর ভবনের নিচের তলার একটি অংশে ঘিনঘিনে পরিবেশে চলছে স্বপনের চালু করা পাবলিক টয়লেট।

ইফতার বাজারের কারণে এই টাওয়ারে আসা মানুষদের বেশ দূরে গিয়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে আরেকটি প্রবেশমুখ।

বিজ্ঞাপন

জামান টাওয়ারের অবৈধ ইফতার বাজার ও প্রস্রাবখানার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পল্টন মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন জামান টাওয়ার স্পেস মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী বীরপ্রতীক।

ইফতার বাজার বসিয়েছেন এমন একজন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ভবনের কেয়ারটেকার মঈনুল ইসলাম স্বপনের সঙ্গে আলোচনা করে ইফতার বাজার বসিয়েছি। একমাসের জন্য জায়গাটি ভাড়া নিয়েছি।’

‘কত টাকায় ভাড়া নিয়েছেন’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাড়ার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বেচাবিক্রির পর তাদের খুশি করার জন্য আমরা কিছু টাকা দিয়ে দেব।’

বিজ্ঞাপন

‘ইফতার বাজারের কারণে লোকজনের অসুবিধা হচ্ছে’ জানালে তিনি বলেন, ‘চলাচলের জন্য দোকানের পাশে জায়গা রাখা হয়েছে। কারও কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।’

‘ইফতার বাজার বসানোর আগে আমরা স্বপনের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি এখানে ইফতার বাজার বসানোর অনুমতি দিয়েছেন। প্রীতম-জামান টাওয়ারের মালিক মিয়া মশিউজ্জামানও বিষয়টি জানেন,’ বলেন ইফতার ব্যবসায়ীদের একজন।

এদিকে ভবনের নিচতলায় জেনারেটর কক্ষের পাশে প্রস্রাবখানা চালু করেছেন স্বপন। প্রস্রাবখানাটি নোংরা ঘিনঘিনে পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এতে জামান টাওয়ারের পরিবেশ ও সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। আশেপাশে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। পথচারীরা টাকার বিনিময়ে এই প্রসাবখানাটি ব্যবহার করতে পারছেন।

জামান টাওয়ারের নিচতলায় দায়িত্বরত এক নিরাপত্তাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘স্বপন এই প্রস্রাবখানা বসিয়েছেন। মেথরপট্টি থেকে একটা ছেলে এনে এখানে রাখা হয়েছিল। বাইরে থেকে কেউ বাথরুমে এলে তার কাছ থেকে টাকা রাখা হতো। প্রতিদিন বেশ ভালোই ইনকাম হতো স্বপনের। কিন্তু স্বপন জেলে যাওয়ার পর মেথরপট্টির ওই ছেলে পালিয়েছে।’

‘বাথরুমটা নোংরা অবস্থায় আছে। পরিবেশটাও বিশ্রী’ বলেন ওই নিরাপত্তাকর্মী।

এই প্রস্রাবখানা ও ইফতার বাজারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পল্টন থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।

জামান টাওয়ার স্পেস মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী এই অভিযোগ পাঠিয়েছেন। তাতে তিনি এই প্রস্রাবখানা ও ইফতার বাজার বন্ধ করতে পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন।

মমিন উল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মালিক সমিতির সদস্য। কিন্তু আমাদের কোনো মতামত না নিয়েই ইফতার বাজার বসানো হয়েছে। বাজার বসানোর পর আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। সমিতির সভাপতি হিসেবে আমার আপত্তির বিষয়টি দরখাস্তে লিখেছি। ওখানে বিস্তারিত লেখা আছে।’

খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ায় নিজ বাসা থেকে গত ২৪ মে স্বপনকে গ্রেফতার করে পল্টন থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া সারাবাংলা ডটনেটের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদাও দাবি করেন এই স্বপন। চাঁদাবাজির মামলায় ২৫ মে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।

সারাবাংলা/একে

আরও পড়ুন

কালভার্ট রোডের ত্রাস চাঁদাবাজ স্বপন গ্রেফতার
পল্টনের সেই চাদাবাজ স্বপন কারাগারে

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন