ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি
২১ এপ্রিল ২০২২ ০০:৫৫
ঢাকা: ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন, সংঘর্ষে নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, নিউমার্কেট এলাকার দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার ও পুলিশ প্রশাসনের ঢাকা কলেজের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা এবং নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করাসহ বিভিন্ন দাবি উঠে এসেছে সংবাদ সম্মেলনে।
বুধবার (২০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা কলেজে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে দাবি-দাওয়া তুলে ধরে কথা বলেন ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুজয় বালা ও মাসুম বিল্লাহ।
আরও পড়ুন- এডিসি হারুনের বিষয়ে ডিসি রিপোর্ট করলে ব্যবস্থা: কমিশনার
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে যে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হলো—
১. শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যাক্করজনক হামলার উসকানিদাতা, ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে;
২. আহত সব শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব দায়ভার নিউমার্কেট ব্যবসাযয়ী সমিতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিতে হবে;
৩. হকারদের হামলায় নিহত পথচারী নাহিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে;
৪. রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে;
৫. দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডিসি, এডিসি ও নিউমার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং পুলিশ প্রশাসনকে কলেজ প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে;
৬. প্রতিটি মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে;
৭. প্রতিটি মার্কেটে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করতে হবে;
৮. ফুটপাত দখলমুক্ত, অবৈধ কার পার্কিং উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে;
৯. ক্রেতা হয়রানি, নারীদের যৌন হয়রানি বন্ধে একটি বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; এবং
১০. চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মাকের্টে ঢাকা কলেজের সম্পদ লিজ বাতিল করে ফিরিয়ে দিতে হবে।
সুজয় বালা ও মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমাদের এসব দাবি অনতিবিলম্বে কার্যকর করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাতে ও মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দিনভর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের দোকানের কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সংঘর্ষ বন্ধ হয়। এরপর বুধবার (২০ এপ্রিল) আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দুই দিন ধরে সংঘর্ষ ঘটলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে, মূলত দুই দোকানের কর্মচারীদের দ্বন্দ্ব থেকে শুরু হয়েছে সংঘর্ষ। এক দোকানের কর্মচারী তার ঢাকা কলেজের কিছু ‘বন্ধু’কে নিয়ে এসে আরেক দোকানের কর্মচারীকে মারধর করেন। পরে দোকানের কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে সোমবার রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি এবং মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই সংঘর্ষ আরও বেড়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন-
- নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ
- এডিসি হারুনের প্রত্যাহার চায় শিক্ষার্থীরা
- ঢাকা কলেজের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত: শিক্ষামন্ত্রী
- ‘লাশ হয়ে বের হব, তবুও হল-ক্যাম্পাস ছাড়ব না’
- শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষে নিউমার্কেট আবারও রণক্ষেত্র
- মীমাংসা করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে শিক্ষকরাও
- বিকেলের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের
- শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নয় সংঘর্ষ শুরু ২ দোকানের কর্মচারীদের মধ্যে
- শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ— ৩ পক্ষকে নিয়ে পুলিশের বৈঠক সন্ধ্যায়
- নিউমার্কেট এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগ, নিষ্ক্রিয় পুলিশ
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর