Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইসরাইলি জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করল হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৪২

ফরাসি-ইসরাইলি বংশোদ্ভূত মিয়া স্কিম, ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ইসরাইলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে দেশটির ১৯৯ জন নাগরিককে গাজায় বন্দি করে রেখেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর মধ্যে ২১ বছর বয়সী এক তরুণীর ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস। এদিকে ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করে সন্তানকে দ্রুত ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আটক তরুণীর মা। খবর হারেৎজ।

ফ্রান্স-ইসরাইলের দ্বৈত নাগরিক এই তরুণীর নাম মিয়া স্কিম। ওই ভিডিও তরুণী বলেন, ‘আমি শোহাম (ইসরাইল) এলাকার মিয়া স্কিম, আমার বয়স ২১ বছর। এই মুহূর্তে গাজায় আছি। পার্টি করে গত শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে এসদারত থেকে ফিরছিলাম। আমি বাহুতে গুরুতর আঘাত পেয়েছি। তারা (হামাস) আমাকে গাজায় নিয়ে আসে এবং তিন ঘণ্টার জন্য এখানে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তারা আমার যত্ন নিচ্ছে, ওষুধ দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুধু বলছি, আপনারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাকে আমার পরিবার, বাবা-মা ও ভাই-বোনদের কাছে ফিরিয়ে নেন। দয়া করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাকে এখান থেকে সরান।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন মিয়া স্কিমের মা কেরেন শেরফ স্কিম, ছবি: হারেৎজ

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন মিয়া স্কিমের মা কেরেন শেরফ স্কিম, ছবি: হারেৎজ

গত ৭ অক্টোবর হামাস কর্তৃক অপহৃত ফরাসি-ইসরাইলি বংশোদ্ভূত মিয়া স্কিমের ভিডিও প্রকাশ করার একদিনেরও কম সময়ের মধ্যে মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সকালে সংবাদ সম্মেলন করেন মা কেরেন শেরফ স্কিম।

কেরেন শেরফ স্কিম বলেন, ‘গতকাল আমার সন্তানকে টেলিভিশনে দেখেছি, দেখলাম সে বেঁচে আছে। এর আগে গুজব শুনেছিলাম যে, তাকে কাঁধে বা পায়ে গুলি করা হয়েছে। তাই দেখতে পাচ্ছি তার কাঁধে গুলি লেগেছে। দেখতে পাচ্ছি, তার একটি অপারেশন হয়েছে, তাকে খুব আতঙ্কিত দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে, সে বড় ব্যথায় আছে… দেখতে পাই, তারা তাকে যা বলতে বলে সে তাই বলছে, কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, সে স্থিতির আছে। তার চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন… আমি গতকাল পর্যন্ত জানতাম না, সে মারা গেছে নাকি বেঁচে আছে। শুধু জানতাম তাকে অপহরণ করা হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববাসীর কাছে আমার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে অনুরোধ করছি। সে শুধুমাত্র একটি একটি উত্সব পার্টিতে কিছু মজা করতে গিয়েছিল। এখন সে গাজায় আছে এবং সেই একমাত্র নয়। অনেক শিশু আছে, যারা এই পার্টিতে গিয়েছিল। সেখানে অনেক শিশু-কিশোর এবং বৃদ্ধ মানুষ ছিল, হত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের অপহরণ করা হয়েছে। তাদের ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আমাদের সবার এক হওয়া উচিত, এই সন্ত্রাস বন্ধ করা উচিত এবং সবাইকে ঘরে ফিরিয়ে আনা উচিত।’

এর আগে, গত ৭ অক্টোবর (শনিবার) হামাসের হামলার পর গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎ, পানি ও ওষুধসহ সব ধরনের জরুরি পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইসরাইল। এদিন অকস্মিক ইসরাইলে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। ফিলিস্তিনিদের উপর গত কয়েক দশক ধরে চালানো পাশবিকতার জবাব দিতে ইসরাইলের উপর এই হামলা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে হামাস।

ইসরাইলের ৭৫ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ দিন ৭ অক্টোবর। এই দিন দেশটির দক্ষিণে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। এদিকে হামলার পর থেকে গাজার উপর কঠোর অবরোধ অরোপ করে জ্বালানি, পানি ও ওষুধ প্রবেশ সীমিত করে ইসরাইল। একইসঙ্গে গাজায় বিমান হামলা চালায়।

এদিকে গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৮০৮ অধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০০ শিশু। আর ১০ হাজারের অধিক আহত। তবে হাসপাতালে ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ কমে গেছে। এছাড়া কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ইসরাইলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও গাজায় প্রায় ১৯৯ ইসরাইলিকে জিম্মি করেছে হামাস।

আরও পড়ুন:

সারাবাংলা/এনএস

ইসরাইল টপ নিউজ ফিলিস্তিন হামাস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর