বিজ্ঞাপন

অনলাইন নিউজপোর্টালকে ওয়েজবোর্ডের আওতায় রেখে আইনের খসড়া অনুমোদন

October 15, 2018 | 6:08 pm

||স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট|| 

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘গণমাধ্যম কর্মী ওয়েজবোর্ড’ নামে পরিচিতি পাবে নতুন একটি ওয়েজবোর্ড। তাতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল, পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশনসহ সকল গণমাধ্যমকে নিয়ে আসা হবে। যেটি হবে একটি স্বাধীন ওয়েজবোর্ড।

ঠিক এই প্রস্তাব রেখে ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলী) আইন ২০১৮’-এর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, এটি হবে স্বাধীন ওয়েজবোর্ড। এটা শ্রম আইনের আওতায় থাকবে না। সাংবাদিকরাও শ্রমিক হিসেবে নয়, গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে পরিচিত হবেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ‘সংসদে আইনটি পাস হওয়ার পর কিছুই করার নেই’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ আইনের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, যারা গণমাধ্যমে কাজ করবে তারা শ্রমিক নন, গণমাধ্যমকর্মী। নতুন আইনে শ্রমিক কথাটি থাকবে না। শ্রম আইনে যেখানে শ্রমিক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, ওখান থেকে বেরিয়ে আসবে। এখানে গণমাধ্যমকর্মীর পরিষ্কার সংজ্ঞা হলো— গণমাধ্যমে পূর্ণকালীন সাংবাদিক, কলাকুশলী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী, নিবন্ধিত সংবাদপত্রের মালিকানাধীন ছাপাখানা এবং বিভিন্ন বিভাগে নিয়োজিত কর্মী। ছাপাখানা বলতে সংবাদপত্র রিলেটেড ছাপাখানাকে বুঝানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘আইনে ওয়েজবোর্ডের কথা বলা হয়েছে। এটা শ্রম আইনের নয়, স্বাধীন ওয়েজবোর্ড।’

এই ওয়েজবোর্ডে অনলাইন নিউজ পোর্টাল, পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশনসহ সব গণমাধ্যমকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি জানান, আইনে ১০ ধারায় নতুন একটি প্রস্তাবনাও আছে। তা হলো— পরিদর্শন কমিটি। পরিদর্শন কমিটির অনুমোদনসাপেক্ষে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব চাকরিবিধি থাকবে। ৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো গণমাধ্যমকর্মী নিয়োগপ্রাপ্তির একবছর পর প্রদেয় ভবিষ্যৎ তহবিলে মাসিক চাঁদা দেওয়া শুরু করতে পারবেন। যিনি মালিক, তিনিও সমানহারে এখানে কন্ট্রিবিউট করবেন।

বিজ্ঞাপন

সপ্তাহে আগে ৪৮ ঘণ্টা কর্মঘণ্টা থাকলেও এ আইনে তা হবে ৩৬ ঘণ্টা। এর বেশি করলে ওভারটাইম দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ছুটির বিষয়েও এখানে অগ্রগতি আছে। আগে যেটা ১০ দিনের সিএল (ক্যাজুয়াল লিভ বা নৈমিত্তিক ছুটি) ছুটি ছিল, সেটা এই আইনের ৬ ধারায় ১৫ দিন ঠিক করা হয়েছে। এছাড়া অর্জিত ছুটি আগে ছিল ৬০ দিন, সেটা এখন ১০০ দিন হবে। সেটা ১১ দিনে ১ দিন করে জমা হবে।

এছাড়াও গণমাধ্যমকর্মী তাদের চাকরির মেয়াদের ১৮ ভাগের এক ভাগ পূর্ণ বেতনে অসুস্থজনিত ছুটি পাবে। গণমাধ্যমকর্মীরা উৎসব ছুটি পাবেন সর্বোচ্চ ১০ দিন। প্রত্যেক নারী গণমাধ্যমকর্মী ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন। প্রত্যেক গণমাধ্যমকর্মী ৩ বছর অন্তর ৩০ দিন শ্রান্তি-বিনোদন ছুটি পাবে।

৭ ধারায় চিকিৎসা সুবিধার সুবিধার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, প্রত্যেক গণমাধ্যমকর্মী স্বাস্থ্যবীমা সুবিধা পাবে। ৮ ধারায় নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

৯ নম্বর ধারায় বলা আছে, সরকার এ আইনর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত গণমাধ্যমকর্মী ও কর্মচারীদের ওয়েজ নির্ধারণের জন্য প্রজ্ঞাপনমূলে গণমাধ্যমকর্মী ওয়েজবোর্ড গঠন করবে।

১৪ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ওয়েজের নিম্নতর হার সংশ্লিষ্ট সকল গণমাধ্যম মালিকের ওপর অবশ্যই পালনীয় হবে।

সচিব জানান, ১৬ ধারায় বলা আছে, যদি কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের নিকট কোনো গণমাধ্যমকর্মীর বকেয়া পাওনা থাকে তাহলে ওই গণমাধ্যমকর্মী স্বয়ং অথবা তার লিখিত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কিংবা মৃত গণমাধ্যমকর্মীর ক্ষেত্রে তার পরিবারের কোনো সদস্য আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে।

আইনের ১৯ ধারায় শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এ আইনে বর্ণিত ধারা অথবা ধারাসমূহ অথবা এর অধীন প্রণীত বিধি লঙ্ঘন করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে।

১৯ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, সরকার এ আইন লঙ্ঘনকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়াসহ যেকোনো পর্যায়ে সরকার প্রদত্ত  সুযোগ-সুবিধা বন্ধ অথবা স্থগিত রাখতে পারবে।

সারাবাংলা/এইচএ/জেডএফ 

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন