বিজ্ঞাপন

পরিবহন ধর্মঘটে বিচ্ছিন্ন চট্টগ্রাম

October 28, 2018 | 12:43 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো : সারাদেশের মতো বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও চলছে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট। এ কারণে নগরীর রাস্তায় রিকশা-অটোরিকশা ছাড়া তেমন কোনো যানবাহন নেই। দূরপাল্লার যানবাহন-পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশের অন্যান্য জেলা থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন চট্টগ্রাম। এমনকি চট্টগ্রামের অভ্যন্তরীণ উপজেলাগুলোর সঙ্গেও নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

কেবলমাত্র শহরের নিউমার্কেট থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত তিন নম্বর রুটের বাস চলাচল করছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এসব বাস চলাচলে বাধা দিচ্ছে না পরিবহন শ্রমিকরা।

সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে রাস্তায় রিকশা ও অটোরিকশার একচ্ছত্র আধিপত্য দেখা গেছে। মাঝে মাঝে দুয়েকটি হিউম্যান হলারেরও দেখা মিলেছে।

বিজ্ঞাপন

নগরীর মূল সড়কগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের পিকেটিং চোখে পড়েনি। তবে বন্দর, ফ্রি পোর্ট, ইপিজেড এবং কালুরঘাট এলাকায় হিউম্যান হলার, টেম্পু চলাচলে বাধা দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কোন অটোরিকশা ব্যক্তিগত ভাড়ার বাইরে একাধিক যাত্রী তুলে চালানোর চেষ্টা করলে সেখানেও বাধা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, বন্দর এলাকায় পরিবহন শ্রমিকরা ছোট যানবাহন চলাচলেও বাধা দিচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি পিকেটিং নিয়ন্ত্রণ করতে। কারণ যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে গাড়ি চালাবে তাদের বাধা দেওয়ার অধিকার কারও নেই।

বিজ্ঞাপন

তবে বাধা নয়, পরিবহন শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ধর্মঘট পালন করছে বলে সারাবাংলার কাছে দাবি করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পূর্বঞ্চলীয় সভাপতি মৃণাল চৌধুরী।

তিনি বলেন, কোন চাপ নয়, শ্রমিকরা নিজেরাই ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন। কারণ এই ধর্মঘটের যে দাবি তা অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক।

পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে দুর্ভোগে পড়েছে চট্টগ্রাম ননগরীতে অফিস, স্কুল-কলেজগামী হাজার হাজার মানুষ।

নগরীর শাহ আমনত সেতু মোড়, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, জিইসি, ইস্পাহানি, টাইগারপাস, দেওয়ান হাট ও বাদামতলী এলাকায় হাজার হাজার মানুষ অফিস যাবার জন্য বেরিয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়েছিলেন রাস্তায়। সড়কে যেসব রিকশা-অটোরিকশা চলাচল করছে তা যাত্রীর চেয়ে অনেক কম। এজন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়েও পরিবহনের দেখা পাননি তারা। অনেকেকে বাস না পেয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

নগরীর পাথরঘাটার বাসা থেকে প্রতিদিন পটিয়ার ধলঘাটে স্কুল যান শিক্ষিকা সুমি সেনগুপ্তা।

সুমি সারাবাংলাকে বলেন, সকাল আটটা থেকে শাহ আমানত ব্রিজের সামনে অপেক্ষায় ছিলাম। গাড়ি না পেয়ে হেঁটে ব্রিজ পার হই। এখন গ্রামের ভেতর দিয়ে টেক্সি নিয়ে যাচ্ছি।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, গণপরিবহন চলাচল না করায় অটোরিকশা চালকরা ৫০/৬০ টাকার ভাড়া দেড়শ টাকা থেকে দু’শ টাকা পর্যন্ত দাবি করছে।

সকালে আসকারদিঘীর পাড়ের বাসা থেকে বেরিয়ে সিইপিজেডে কর্মস্থলে যাবার জন্য পায়ে হেঁটে টাইগার পাস যান মো. সোহাগ। এরপরও কোন গাড়িতে উঠতে পারেননি।

সোহাগ সারাবাংলাকে বলেন, টাইগার পাস থেকে আবারও হেঁটে বাদামতলী মোড়ে যাই। সেখান থেকে কোনমতে একটি টেক্সিতে আরও তিনজনের সঙ্গে উঠে ইপিজেড পোঁছেছি। প্রত্যেককে ১০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে।

নতুন পাশ হওয়া সড়ক পরিবহন আইনের কিছু ধারায় আপত্তি তুলে রোববার সকাল ছয়টা থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

তবে পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলছেন, তারা দাবি আদায়ে কর্মবিরতি পালন করছেন।

সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন