বিজ্ঞাপন

৫৭% ঢাকাবাসী হাসিনাকে ফের প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়, ৪৩% খালেদাকে

December 11, 2018 | 1:48 pm

।।বিশেষ সংবাদদাতা।।

বিজ্ঞাপন

রাজধানী ঢাকাবাসী ৫৭ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। আর ৪৩ শতাংশ মানুষের ইচ্ছা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবার দেশ পরিচালনার ভার হাতে নেবেন। সামাজিক মিডিয়ায় যারা বিচরণ করেন তাদের বক্তব্য, মন্তব্য, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে স্যোশাল মিডিয়ায় সক্রিয় মানুষের বিভিন্ন পোস্ট, মন্তব্য, প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হয়েছে এ জরিপ প্রক্রিয়ায়। সফটওয়্যারভিত্তিক এই জরিপটি পরিচালনা করেছে- Machine Learning Artificial Intelligence And Network Analysis for Good Governance (MANGO)।

আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান লুজলি কাপলড টেকনোলজিস’র সহায়তায় পরিচালিত এ জরিপে দেখা গেছে- ‘জয় বিশ্বনেত্রী বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা’ ও শেখ হাসিনার সালাম নিন নৈকা মার্কায় ভোট দিন এমন দুটি স্লোগানে ৫৭ শতাংশ মানুষ তাদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। আর অন্য দিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে- ‘বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে কখনোই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহার রচিত হতে পারে না’ এবং ‘দেশ গড়েছেন শহীদ জিয়া.. নেত্রী মোদের খালেদা জিয়া’ এমন দুটি স্লোগান ৪৩ শতাংশ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে ঐক্যজোটের চেয়ে মহাজোটকেই ক্ষমতায় দেখতে চান বেশি সংখ্যক মানুষ। ম্যাঙ্গো জরিপ সে কথাই বলছে। সামাজিক মাধ্যমে যারা কথা বলছেন তাদের মধ্যে ৭১.৮২ শতাংশ মানুষ মহাজোটের ওপর আস্থা রাখছেন, পক্ষান্তরে ঐক্যজোটের ওপর আস্থার প্রকাশ দেখিয়েছেন ২৮.১৮ শতাংশ মানুষ।

ম্যাঙ্গো জরিপ বলছে, বিষয়ভিত্তিক আলোচনাগুলো পর্যালোচনা করে এমনটাই পাওয়া গেছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরা তথ্য উপাত্ত, মন্তব্য ও পছন্দ অপছন্দের বিভিন্ন ইমোজি বিশ্লেষণ করেই এই জরিপ রিপোর্ট তৈরি করেছে ম্যাঙ্গো।

বিজ্ঞাপন

তবে সামাজিক মাধ্যমে এখন দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কথা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েই। ‘শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার’ এমন একটি মন্তব্যে ৭৬.১৩ শতাংশ মানুষ তাদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তার বিপরীতে বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে নিয়ে একটি ইতিবাচক মন্তব্যে ১০.৭৬ শতাংশ, খালেদা জিয়াকে নিয়ে একটি মন্তব্যে ৬.৬০ শতাংশ ও ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে একটি মন্তব্যে ৪.৫১ শতাংশ মানুষ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।

দলের দিক থেকে সামাজিক মাধ্যমে বিচরণকারীদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে সাড়া মিলছে ৭৪.৯৬ শতাংশ মানুষের। ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ এমন একটি স্লোগানে তাদের এই প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গেছে। একই প্ল্যাটফর্মে ‘মোরা জিয়ার সৈনিক’ এমন একটি স্লোগানে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে ২২.২৫ শতাংশ মানুষের। জাসদের পক্ষে একটি স্লোগানে ১.৭১ শতাংশ, জাতীয় পার্টির পক্ষে ০.৭১ শতাংশ মানুষ কথা বলছে। ০.৩০ শতাংশ মানুষ জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশের পক্ষে তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে।

ঢাকাবাসী সামাজিক মাধ্যমে অন্য যেসব নেতাকে নিয়ে কথা বলেন কিংবা তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তার প্রতি অন্তত ১৩.৯১ শতাংশ মানুষকে কথা বলতে দেখা যায়।
মাহী বি চৌধুরীকে নিয়ে কথা বলছেন ৯.৮৬ শতাংশ মানুষ। তাকে নিয়ে করা, ‘মাহী ভাইকে জনগণের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ’ এমন একটি মন্তব্যে এই সাড়া মিলেছে। ঢাকার অপর নেতা আসলামুল হককে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব রয়েছেন ২.৩২ শতাংশ মানুষ।

তবে ঢাকার বাইরের অন্য বিভিন্ন জেলার নেতাদের নিয়েও ঢাকাবাসী সামাজিক মিডিয়ায় কথা বলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের নজরুল ইসলাম বাবু, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, শরিয়তপুর-৩ আসনের নাহিম রাজ্জাক, গাজীপুর-৫ আসনের মেহের আফরোজ চুমকি, টাঙ্গাইল-৫ আসনের আকব্বর হোসেন। রূপগঞ্জের মহাবীর, গাজী গোলাম দস্তগীর এমন একটি স্লোগানে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ঢাকাবাসীও। রাজপথের বাবু ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই, কর্মমুখর নেতা আমাদের নাহিম ভাই, চুমকি আপা কালীগঞ্জবাসীর অহঙ্কার, লং লিভ আলহাজ আকব্বর হোসেন এমন সব স্লোগানে ঢাকাবাসীর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ছিলো উল্লেখ করার মতো। এছাড়াও নরসিংদী-৩ এর সিরাজুল মোল্লাকে নিয়ে করা ‘অসাধারণ লিডার’ শিরোনামে একটি বক্তব্যকে বিপুল সংখ্যক ঢাকাবাসী পছন্দ করেছেন, শরীয়তপুর-৪ আসনের বি এম মোজাম্মেল হককে নিয়েও ছিলো অনেকটা একই ধরনের প্রতিক্রিয়া।

বিজ্ঞাপন

তবে সামাজিক মাধ্যমে কিছু কিছু বিষয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিও ফুটে উঠেছে। বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্ল্যান বি সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছে। আওয়ামী লীগকে চোরের দল বলে করা একটি মন্তব্যে পছন্দ করেছে অনেকেই। প্রতিক্রিয়ায় এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে অপরাধী চিহ্নিত করে তার শাস্তি দরকার বলে করা মন্তব্যের পক্ষেও সায় দিয়েছেন অনেকে।

ম্যাঙ্গো জরিপে আরও দেখা হয়েছে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৪৮.৭৮ শতাংশ মানুষ উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টিকে সবচেয়ে সামনে রাখনে ২৪.৩৯ শতাংশ মানুষ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার গুরুত্ব পেয়েছে ১৪.৬৩ শতাংশের কাছে। শিক্ষাখাতের উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নকেও নির্ণয়ক হিসেবে দেখছেন যথাক্রমে ৮.৯৪ ও ৩.২৪ শতাংশ ঢাকাবাসি।

তবে এই জরিপ মতে ঢাকার অন্তত ৪৩.৩৬ শতাংশ মানুষ এখনও চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। বাকি ৫৬.৬৪ শতাংশ মনে করেন নির্বাচিত সরকারের অধীনেই হতে পারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

সারাবাংলা/এমএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন