বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে জেন্ডারভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন

December 18, 2018 | 10:49 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দেশে অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। ৯৭ শতাংশ মানুষের মধ্যে অন্তত একটি অসংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। আগে ৪০ এর পরে এসব রোগের ঝুঁকি থাকলেও সেটা এখন অনেক কমে এসছে, অনেক কম বয়সেও মানুষ এখনও অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই প্রতিরোধের তুলনায় অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে।

আর সে জন্য প্রয়োজন জেন্ডারভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা। নারী ও শিশু বান্ধব অবকাঠামো, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্য খাতের নেতৃত্বে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জেন্ডার ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

মঙ্গলবার ( ১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি ‘জেন্ডার অ্যান্ড ইন্টারসেকশনালিটি: মিডিয়া সেনসেশন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারা এ সব কথা বলেন। কর্মশালাটির আয়োজন করে আর্ক ফাউন্ডেশন।

বিজ্ঞাপন

কর্মশালায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সেন্টার ফল ল অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্সের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জেন্ডার, এনজিও অ্যান্ড স্টেকহোল্ডার পার্টিসিপেশন ইউনিটের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আয়েশা আফরোজ চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সায়েমা হক বিশ্বাস।

সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৭১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং এর মধ্যে ৩৫ ভাগ নারী। আর অপর্যাপ্ত কায়িক শ্রমের কারণে নারীদের মধ্যে স্থুলতা, ডায়বেটিসসহ নানা ধরণের রোগ বাড়ছে। কিন্তু এসব প্রতিরোধে নারীদের হাঁটার সুযোগ নেই। ঢাকার অধিকাংশ পার্ক কিংবা সড়ক নারী বান্ধব নয়। এছাড়া সামাজিক নানা কারণেও নারীরা হাঁটতে বা মার্শাল আর্টও শিখতে পারে না।

দেশের পাবলিক টয়লেটও নারীবান্ধব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, সে কারণে নারীরা নানা ধরনের রোগে ভোগে। নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

হেলথ সিস্টেমে নানা ধরনের কম্পোনেন্ট রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা অক্ষরসম্পন্ন নয়, যারা প্রতিবন্ধী রয়েছেন তাদেরকে এসব বুঝিয়ে দেওয়া হয় না। কিন্তু এসব বিষয়গুলোও ‘হেলস পলিসি’তে আসতে হবে, নীতি নির্ধারকদের বুঝতে হবে।

সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, কেবল মাত্র প্রচারণা ছাড়া নারীদের প্রাধাণ্য দেওয়া হবে এমন কোনো নীতি নেই।

ডা. আয়েশা আফরোজ চৌধুরী বলেন, উপজেলা পর্যায়ে নারীরা নারী চিকিৎসকের কাছে সেবা নিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। কিন্তু নারী চিকিৎসকদের জন্য অনুকূল কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে না পাওয়ায় সেখানে পর্যাপ্ত নারী চিকিৎসক নেই আর এতে করে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে।

শ্রম বাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও তা স্থির রয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক সায়েমা হক বিশ্বাস বলেন, ৮ শতাংশ থেকে শ্রম বাজারে নারীর অংশগ্রহণ বেড়ে ৩৬ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেটি স্থির আছে। শ্রম বাজারের সঙ্গে স্বাস্থ্যও জড়িতে। বাল্য বিবাহ ও অল্প বয়সে সন্তানধারণের কারণে নারী শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে, যার প্রভাব পড়ে কাজে। এ সব কারণে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে জেন্ডার ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

কর্মশালায় জানানো হয়, দরিদ্র নারীদের মধ্যে প্রসবপূর্ব সেবা নেওয়ার হার সবচেয়ে কম। আর্থিক সামর্থ্য যার বেশি তার প্রসব পূর্ব সেবা নেওয়ার হার বেশি। আর শহরের তুলনায় গ্রামে বাড়িতে প্রসবের হার এখনো অনেক বেশি।

অনুষ্ঠানে প্রজেক্ট অর্ডিনেটর সামিনা হক জানান, আর্ক ফাউন্ডেশন ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তারা তামাকবিরোধী প্রকল্প, সংক্রামক এবং অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রুমানা হক।

সারাবাংলা/জেএ/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন