বিজ্ঞাপন

‘কাজের জায়গায় অ্যাডভেঞ্চার-রোমান্টিকতার সুযোগ নেই’

January 20, 2019 | 1:36 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রাষ্ট্র একটি সামগ্রিক বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘এখানে অনেক প্রক্রিয়া আছে। দেনদরবার আছে। তাদেরও সেটিসফাইয়েড করতে হবে। সেখানে কোনো অ্যাডভেঞ্চার করার বা রোমান্টিক আইডিয়ার সুযোগ নেই। বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়েই আমার কাজটা আমি এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’ রোববার (২০ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর পুরান পল্টনে সারাবাংলা ডটনেটের বিশেষ আয়োজন “মিনিস্টার টকস” অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

উন্নয়নের গতি বাড়ানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ভয়ঙ্কর কোনো পরিবর্তন’ না এনে বর্তমান সিস্টেমকেই কাজে লাগিয়ে প্রবৃদ্ধিকে ১০ শতাংশ নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এজন্য, ছুটি কমানো ও কর্মঘণ্টা বাড়ানোর ব্যাপারে চিন্তা করতে হবে।’

নদীমাতৃক বাংলাদেশকে ‘সাঁকোবিহীন দেশ’ হিসেবে দেখতে চান উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি হয়েছে, তা ধরে রাখতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

নতুন মন্ত্রী হিসেবে চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ হলো উন্নয়নমূলক কাজের গতি বাড়ানো। আমি নতুন করে ভয়ঙ্কর কোনো ধরনের পরিকল্পনা, সিস্টেম পরিবর্তনে যাবো না। আমার একমাত্র উদ্দেশ্য হবে, যে গতিতে আগের পরিকল্পনামন্ত্রী কাজটাকে এগিয়ে নিয়েছেন, সেই গতিটাকে ধরে কাজটাকে আরও একটু এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমলাতন্ত্রে কাজ করে আমার বিশ্বাস জন্মেছে যে, কাজের গতি বাড়ানো সম্ভব। অনেক স্তর আছে, যেগুলো দ্রুতই ঝেড়ে ফেলা উচিত। আইনগত কারণে আমরা তা পারছি না। যে বিধিবিধানগুলো বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেগুলো কিন্তু একটি সুনির্দিষ্ট আইন। ওই আইন পরিবর্তন না করলে বিধিবিধানে হাত দিতে পারছি না।’

আরও পড়ুন:  সারাবাংলায় পরিকল্পনামন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

যেকোনো সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে শিফট করতে পারেন উল্লেখ পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এটা জেনেই বলছি, দৈনন্দিন কাজটা যেন শেষ করতে পারি। আজকের কাজটা যেন আমি আজকেই করতে পারি। শুধু আমি নয়, আমার সঙ্গে যারা কাজ করবেন, যারা আছেন, তাদের কাছে আমি আবেদন করেছি, আহ্বান রেখেছি, নির্দেশনা দিয়েছি, গতি বাড়ান। এই গতি বাড়ানোই আমার অভিষ্ট লক্ষ্য, মূল লক্ষ্য।’  তিনি বলেন, ‘যে সিস্টেমের মাধ্যমে আমরা ৮ শতাংশের কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি, আমার ধারণা এই সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে ৯ বা সাড়ে ৯ এমনকি ১০ শতাংশেও নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’

সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের খরচ সম্পর্কে এম এ মান্নান বলেন, ‘কিছু অর্থ চুরি হয়ে যায়। আবার কিছু কিছু প্রকল্প আছে সেখানে কোনো খরচই হয় না। দুটিকেই এড্রেস করতে হবে। দুটিই অপচয়। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লে এগুলো কমে যাবে। কাজ না করলে সম্পদ সৃষ্টি হবে না।’

সুনামগঞ্জ জেলায় রেল লাইন স্থাপন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সুনামগঞ্জের ছাতক পর্যন্ত রেললাইন রয়েছে। এটাকে আর মাত্র ২২ কিলোমিটার বাড়ালে সুনামগঞ্জে রেললাইনের আওতায় আসবে। আমি কমিটেড এটা করতে। যদি সুনামগঞ্জে নিয়ে যাই, তাহলে পরবর্তী সময়ে এই রেললাইন মোহনগঞ্জেও নিয়ে যাব।’ এসময় তিনি সুনামগঞ্জ জেলার বিশাল হাওর এলাকায় জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করবেন বলেও উল্লেখ করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ হল একটা মেগা ভিলেজ। অথবা বলা যায় বাংলাদেশ একটা বিশাল ভিলেজ টাউনের কাছাকাছি। গ্রাম অঞ্চলে এরই মধ্যে আমরা বিদ্যুৎ নিয়ে গেছি। আমাদের মহাপরিকল্পনা আছে। ডেল্টা প্ল্যান আছে। এর ভেতরে যে ছোট ছোট পরিকল্পনা আছে, তা ধরে এগিয়ে যেতে চাই। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ভেতরেই আমরা বার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে লক্ষ্য পূরণ করব। আবার এর ভেতরে এক বছরের পরিকল্পনা উন্নয়নেও কাজ করে যাব।’

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: ‘সারাবাংলায় এসে অনলাইন সম্পর্কে ধারণা বদলে গেছে’

এখনো দেশের তিন ভাগের দুই ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে উল্লেখ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে হবে। দারিদ্র্যবিমোচনে বাংলাদেশ যে সাফল্য অর্জন করেছে, তা ধরে রাখতে হবে। গ্রামের সেতু-কালভার্ট-সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বিশেষ নজর দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সারাবাংলা ডটনেটের নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদ মেনন খান বলেন, ‘২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর সারাবাংলা ডটনেট যাত্রা শুরু করে। এটি একটি মাল্টিমিডিয়া অনলাইন। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিজম করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সারাবাংলা ডটনেট অল্পদিনেই পাঠকদের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছে। এরইমধ্যে তিনজন মন্ত্রী সারাবাংলা অফিস পরিদর্শন করেছেন। পদ্মাসেতুসহ বেশ কয়েকটি ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট বানানো হয়েছে। যা পাঠক সমাজে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সারাবাংলা ডটনেটের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদ মেনন খান, হেড অব ফাইন্যান্স মো. আতাউর রহমান, জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মিয়া ফয়সাল হাসান, বার্তা সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসী মানু ও মোহাম্মদ নূরুল হকসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/জিএস/ইএইচটি/জেএএম/এমএনএইচ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন