বিজ্ঞাপন

ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমেছে

March 4, 2019 | 12:48 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: জানুয়ারি মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসার পর ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমেছে। তবে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স কিছুটা কম হলেও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে প্রায় ১৭ কোটি মার্কিন ডলার। গত জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ ১৫৯ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠায়। ফেব্রুয়ারি মাসে তা কিছুটা কমে নেমে আসে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৭ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। একই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স আসে ১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গত বছরের প্রথম দুই মাসে রেমিট্যান্স আসে ২৫২ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স আসে যথাক্রমে ১৫৯ কোটি ও ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। এই দুই মাসে মোট রেমিট্যান্স আসে ২৯০ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। গত জানুয়ারি মাসে এ যাবৎকালের এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে। এর আগে প্রবাসীরা এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল ২০১৪ সালের জুলাই মাসে। ওই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৪৯ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার।

সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রথম আট মাসে অর্থাৎ গত জুলাই-১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি-১৯ পর্যন্ত সময়ে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স আসে ৯৪৬ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার। ফলে, আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ৯০ কোটি মার্কিন ডলার বা ১০ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম আট মাসের মধ্যে গত জুলাই মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠায় ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, আগষ্টে ১৪১ কোটি ১০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ১১২ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, নভেম্বর ১১৮ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ১২৩ কোটি ডলার, গত বছরের জানুয়ারি মাসে ১৫৯ কোটি ডলার, সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে আসে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার।

রেমিট্যান্স বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে হওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমেছে। তবে, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। এটা একটা ইতিবাচক দিক। তিনি বলেন, ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপ বিশেষ করে অবৈধ হুন্ডি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ক্যালেন্ডার বছর হিসাবে, ২০১৮ সালে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি মার্কিন ডলার এবং ২০১৫ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১ হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, অর্থবছর হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার কোটি ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে ব্যাংকিং চ্যানেল বহির্ভূতভাবে মোবাইল ব্যাংকিং হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যায়। এতে করে গত দুই অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়ে। এ কারণে রেমিট্যান্স বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধভাবে রেমিট্যান্স বিতরণের সঙ্গে যুক্ত থাকায় মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের দুই হাজার ৮৮৭টি এজেন্টের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়। এছাড়াও হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া নানা উদ্যেগের সুফল পাওয়া যাচ্ছে রেমিট্যান্সে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটির বেশি বাংলাদেশি অবস্থান করেছেন। এইসব প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১২ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে প্রথমে রয়েছে সৌদি আরব। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ওমান, যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম

বিজ্ঞাপন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন