বিজ্ঞাপন

প্রয়োজনে সেই ছাত্রীকে সিঙ্গাপুর নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

April 8, 2019 | 6:00 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের লাইফ সাপোর্টে থাকা মাদরাসাছাত্রীকে প্রয়োজন হলে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৮ এপ্রিল) বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথার বলার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশ দেন।

এর আগে, ফেনীর সোনাগাজীর ওই ছাত্রীকে দেখতে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে যান প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। এ সময় চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ওই ছাত্রীর চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ সহকারী। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনকে কথা বলিয়ে দেন।

মোবাইল ফোনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামন্ত লাল সেনকে বলেন, ‘প্রয়োজন হলে ওই ছাত্রীকে সিঙ্গাপুর নিতে হবে।’ এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যও প্রধানমন্ত্রী বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ককে তাগিদ দেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলার পর  সামন্ত লাল সেন হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ওই ছাত্রীর কাগজপত্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। দরকার হলে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে।’

সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘রোগীর যে অবস্থা, এই অবস্থায় সাধারণত এরকম পোড়া রোগীকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় না। তারপরও দরকার হলে আমরা সিঙ্গাপুর নেব। আমরা কাগজপত্র গোছানোর কাজ শুরু করেছি।’

ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি এখানে এসেছি। চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজন হলে ওই ছাত্রীকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হবে। তার চিকিৎসার সব খরচ সরকার বহন করবে।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী বলেন, ‘যারা এই অপরাধ করেছে তাদের বিচার তো হবেই। আমরা এখন তার স্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছি। যে কোনো মূল্যে তাকে সুস্থ করে তুলতে আমরা চেষ্টা করছি।’

উল্লেখ্য, ওই ছাত্রীকে শনিবার (৬ এপ্রিল) ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এদিন পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রের এক ভবনের ছাদে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয় ওই ছাত্রী।

কীভাবে তার শরীরে আগুন দেওয়া হয়েছে তা জানিয়ে রোববার রাতে চিকিৎসকদের কাছে ‘ডায়িং ডিক্লারেশন’ দেয় ওই শিক্ষার্থী। এ সময় সে বলে, পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে অন্য আরেক শিক্ষার্থীকে মারা হচ্ছে বলে তাকে ছাদে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে আগে থেকেই বোরকা ও হাতে মোজা পরা চারজন উপস্থিত ছিল।

মেয়েটি জানায়, ছাদে যাওয়ার পর ওই চারজন তাকে মামলা (ওই মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা যৌন হয়রানির মামলা)  প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য বলে। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয়— এমন কথা বলার জন্য তাকে চাপ দিতে থাকে। বোরকা পরা থাকায় ওই চার জনকে চিনতে পারেনি মেয়েটি। তবে তাদের মধ্যে একজন অন্য আরেকজনকে ‘শম্পা’ নামে ডেকেছিল বলে জানায় সে।

বিজ্ঞাপন

ওই ছাত্রী জানায়,  আগুন দেওয়ার আগেই তার দুই হাত বেঁধে ফেলা হয়। এরপর কেউ একজন কেমিক্যাল জাতীয় কিছু তার দিকে ছুড়ে মারে। এর পরপরই আরেকজন তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তাকে বলা হয়, এবার তুই পালা। সে অবস্থাতেই দৌড়ে নিচে নেমে আসে ওই শিক্ষার্থী।

এদিকে সোমবার (৮ এপ্রিল) ওই ছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বার্ন ইউনিটের লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

ঢামেকের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর শরীরের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ডিপ বার্ন রয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ।

সারাবাংলা/এসএসআর/একে

আরও পড়ুন

মাদরাসা ছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা, ২ দিন পর মামলা
প্রশ্নফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন হয়রানি করতো অধ্যক্ষ
‘আর ভিডিও করিছ না, আমার ঝিরে আইনা দে’
‘বল সব মিথ্যা, ২৭ তারিখের যৌন হয়রানি মিথ্যা’

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন