বিজ্ঞাপন

আদালতেও বাদীকে হত্যার হুমকি, অভিযোগ নুসরাতের ভাইয়ের

May 30, 2019 | 8:02 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ফেনী: ফেনীর মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার আসামিরা আদালতেই বাদীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন নুসরাতের ভাই।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) মামলা শুনানির জন্য অভিযোগপত্রভুক্ত ১৬ আসামিসহ এ মামলায় গ্রেফতার ২১ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই নোমান উপস্থিত ছিলেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘আসামিরা আদালতে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামিরা আমার পরিবারকে আক্রমণ করার হুমকি দিচ্ছে।’

নুসরাত হত্যা মামলা নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে

বিজ্ঞাপন

দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে কাঠগড়া থেকে মামলার বাদী ও নুসরাতের বড় ভাই নোমান ও বাদী পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম খোকনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে আসামিরা।

এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘আসামিরা আদালতের কাঠগড়া থেকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছে। তারা পারলে আজকে আমাদের খুন করতো। তাদের ব্যবহারে বোঝা গেছে তারা সংঘবদ্ধ একটি খুনি চক্র। তাদের আত্মীয়-স্বজনও হুংকার দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে নুসরাতের মতো মরে যাবো; তবুও শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবো।’

নুসরাত হত্যা মামলায় যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে তারা হলেন প্রধান অভিযুক্ত সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদদৌলা, আফসার উদ্দিন, জোবায়ের আহম্মেদ, মাকসুদ আলম কাউন্সিলর, জাবেদ হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, হাফেজ আবদুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহীম শরিফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রহুল আমিন, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার উদ্দিন রানা, মহিউদ্দিন শাকিল। যাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে তারা হচ্ছেন আরিফুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, কেফায়েত উল্লাহ, নুর হোসেন, আলাউদ্দিন।

বিজ্ঞাপন

নুসরাত হত্যা মামলায় মোট সাক্ষী ৯২ জন। এর মধ্যে কার্যবিধির ১৬১ ধারায় ৬৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বাদী, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিজার লিস্টের সাক্ষী। মামলায় ৭ জন সাক্ষী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। ১২ জন আসামি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলায় ২১ জনকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করা হয়। পিবিআই নুসরাত হত্যায় ব্যবহৃত বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করেছে। এবং নুসরাত হত্যার ঘটনার ধারাবাহিক ডিজিটাল স্কেচ ম্যাপ ও আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে কারাগার থেকেই তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নুসরাতের পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন। তাতে নুসরাত ও তার পরিবার রাজি না হলে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন অধ্যক্ষ। সেই অনুযায়ী, গত ৬ এপ্রিল নুসরাত তার মাদরাসায় পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। সেখানে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিন রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নুসরাতের চিকিৎসা চলে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় নুসরাত মারা যান।

সারাবাংলা/এমআই

বিজ্ঞাপন

এ সপ্তাহেই নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিট

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন