বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গাদের এনআইডি: ইসি কর্মীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

September 17, 2019 | 12:53 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাইয়ে দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানার নির্বাচনি কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদী হয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন ও ডিজিটাল আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন।

নির্বাচন কমিশনের চুরি হওয়া লাইসেন্স করা ল্যাপটপ ব্যবহার করে রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্তি এবং এনআইডি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে গত সোমবার (১৬ সেপ্টম্বর) রাতে তিনজনকে আটক করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তাদের আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে দেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি হওয়া ল্যাপটটিও। এরপর রাতে কোতোয়ালী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরি চক্রের ৬ সদস্য আটক

বিজ্ঞাপন

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন শুধু নির্বাচন অফিসের কর্মচারী। গত রাতে যে তিনজনকে আটক হয়েছে তাদের মামলায় আসামি করা হয়েছে। বাকি দুজনকে আটকের চেষ্টা চলছে। এছাড়া আটক তিনজনকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডেরও আবেদন করা হচ্ছে।’

মোহাম্মদ মহসীন আরও বলেন, ‘সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের মামলার সব নথিপত্রও বুঝিয়ে দিয়েছি।’

আটক তিনজনের মধ্যে একজন ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. জয়নাল আবেদিন (৩০)। বাকি দুজন গাড়িচালক বিজয় দাশ (২৬) ও তার বোন সীমা দাশ ওরফে সুমাইয়া আক্তার (২৩)। বিজয় গাড়িচালক এবং সীমা চট্টগ্রাম সরকারী জেনারেল হাসপাতালে অস্থায়ী ভিত্তিতে আয়া পদে আছেন।

বিজ্ঞাপন

মামলার বাকি দুই আসামি হলেন, সাগর ও সত্যসুন্দর দে। আটক তিনজনসহ পাঁচ আসামি পরস্পরের যোগসাজশে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।

জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে খোয়া যাওয়া ল্যাপটপটি জয়নালের হেফাজতে ছিল। সেটি ব্যবহার করেই কয়েকজন রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশের এনআইডি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের তথ্য কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে পাঠানো হয়েছে। জয়নাল ল্যাপটপটি রেখেছিল তার ঘনিষ্ঠ বিজয় ও সীমার হেফাজতে।

উল্লেখ্য, লাকী নামের এক নারী গত ১৮ আগস্ট স্মার্ট কার্ড তুলতে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গেলে তার হাতে পুরনো এনআইডিতে ১৭ ডিজিটের নম্বর দেখে কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। পরে জেরার মুখে লাকী নিজের প্রকৃত নাম রমজান বিবি এবং ২০১৪ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসার পর টেকনাফের মুচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছিলেন বলে স্বীকার করেন। ওই রোহিঙ্গা নারী ভুয়া ঠিকানা দিয়ে তৈরি করিয়েছেন ওই জাল এনআইডি। অথচ ওই ভুয়া পরিচয়পত্রের তথ্যও নির্বাচন কমিশনের তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষিত আছে।

এই ঘটনার পর নির্বাচন কমিশন থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটি তদন্তে নেমে নির্বাচন অফিসের কারও যোগসাজশে এই ঘটনা ঘটছে বলে তথ্য পায়। এরপর নির্বাচন কমিশনের আরেকটি বিশেষ টিম তিনদিন কক্সবাজারে অভিযান চালিয়ে এক দালালসহ সাতজনকে আটক করে। তাদের দেওয়া তথ্যে জয়নাল আবেদিনের বিষয় উঠে আসে এবং তাকে আটক করা হয়। পরে খোয়া যাওয়া ল্যাপটপটি দিতে এসে বিজয় ও সীমা আটক হয় বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কাযালয়ের কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন