বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গাদের হাতে এনআইডি, ইসি কর্মীসহ তিনজন রিমান্ডে

September 18, 2019 | 4:55 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: জালিয়াতির মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাইয়ে দেওয়ার মামলায় নির্বাচন কমিশনের এক কর্মীসহ তিনজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি তদন্ত করছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়ার আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এই আদেশ দিয়েছেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো.কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন। শুনানিতে আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তলব করে তার বক্তব্য নেন। এরপর আদালত নির্বাচনী কার্যালয়ের কর্মচারীকে তিনদিন এবং বাকি দুজনকে একদিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন।’

গ্রেফতার তিনজন হল- চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক মো. জয়নাল আবেদিন (৩০) এবং বিজয় দাশ (২৬) ও তার বোন সীমা দাশ ওরফে সুমাইয়া আক্তার (২৩)। বিজয় গাড়িচালক এবং সীমা চট্টগ্রাম সরকারী জেনারেল হাসপাতালে অস্থায়ী ভিত্তিতে আয়া পদে আছেন। গ্রেফতারের পর জয়নালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

খোয়া যাওয়া নির্বাচন কমিশনের লাইসেন্স করা ল্যাপটপ ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং এনআইডি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তিনজনকে আটক করা হয়। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তাদের আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে দেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় খোয়া যাওয়া একটি ল্যাপটপও।

এরপর রাতেই কোতোয়ালী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদি হয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন ও ডিজিটাল আইনে মামলাটি দায়ের করেন।

বাকি দুই আসামি হলেন, সাগর ও সত্যসুন্দর দে। আটক তিনজনসহ পাঁচ আসামি পরস্পরের যোগসাজশে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে খোয়া যাওয়া ল্যাপটপটি জয়নালের হেফাজতে ছিল। সেটি ব্যবহার করেই কয়েকজন রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশের এনআইডি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের তথ্য কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে পাঠানো হয়েছে। জয়নাল ল্যাপটপটি রেখেছিল তার ঘনিষ্ঠ বিজয় ও সীমার হেফাজতে।

উল্লেখ্য, লাকী নামের এক নারী গত ১৮ আগস্ট স্মার্ট কার্ড তুলতে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গেলে তার হাতে পুরনো এনআইডিতে ১৭ ডিজিটের নম্বর দেখে কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। পরে জেরার মুখে লাকী নিজের প্রকৃত নাম রমজান বিবি এবং ২০১৪ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসার পর টেকনাফের মুচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছিলেন বলে স্বীকার করেন। ওই রোহিঙ্গা নারী ভুয়া ঠিকানা দিয়ে তৈরি করিয়েছেন ওই জাল এনআইডি। অথচ ওই ভুয়া পরিচয়পত্রের তথ্যও নির্বাচন কমিশনের তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষিত আছে।

এই ঘটনার পর নির্বাচন কমিশন থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটি তদন্তে নেমে নির্বাচন অফিসের কারও কারও যোগসাজশে এই ঘটনা ঘটছে বলে তথ্য পায়। এরপর নির্বাচন কমিশনের আরেকটি বিশেষ টিম তিনদিন কক্সবাজারে অভিযান চালিয়ে এক দালালসহ সাতজনকে আটক করে। তাদের দেওয়া তথ্যে জয়নাল আবেদিনের বিষয় উঠে আসে এবং তাকে আটক করা হয়। পরে খোয়া যাওয়া ল্যাপটপটি দিতে এসে বিজয় ও সীমা আটক হয় বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/জেএএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন