বিজ্ঞাপন

মহারাষ্ট্রে জটিলতা, জোট গড়তে পারে কংগ্রেস-শিবসেনা!

November 2, 2019 | 9:42 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গত ২৪ অক্টোবর ভারতের মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরপরই জানা যায়, এনডিএ জোটের দুই শরিক বিজেপি ও শিবসেনা মিলে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন পেয়েছে। দুই দল মিলে মোট আসনের অর্ধেকেরও বেশি পুরে নিজেদের ঝুলিতে। সরকার গঠন করার মত যথেষ্ট আসন কব্জা করেও দল দুটির মধ্যে তীব্র মতানৈক্যের ফলে এখনও সরকার গঠন করা যায়নি মহারাষ্ট্রে।

বিজ্ঞাপন

রাজ্যে এবারের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই সরকার গঠন নিয়ে বিজেপি ও শিবসেনার মধ্যে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে ওঠে। নির্বাচনে বিজেপি সর্বোচ্চ ১০৫টি আসনে জয় পায়। এ রাজ্যে কট্টরপন্থী দল শিবসেনা পায় ৫৬ টি আসন। ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করতে প্রয়োজনীয় ১৪৫টি আসনের চেয়েও বেশি আসন রয়েছে এই জোটের ঝুলিতে। তবে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন এই প্রশ্নে সৃষ্ট জটিলতায় এখনও সরকার গঠন সম্ভব হয়নি রাজ্যে। এ দ্বন্দ্বে ইতিমধ্যে জল-ঘোলা হয়েছে বিস্তর। দুই দলের নেতারা একে অন্যের বিরুদ্ধে বাক্যবাণও ছুঁড়ছেন নিয়মিত।

শিবসেনার তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্যে ৫০-৫০ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সরকার গঠন করার যে প্রস্তাব তারা দুই বছর ধরে দিয়ে আসছেন, তাতে কোনো নড়চড় হবে না। তবে এ প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি বলছে, রাজ্যে ফের মুখ্যমন্ত্রী করা হবে দেবেন্দ্র ফড়নবীশকেই। এবং তা মোটেও আড়াই বছরের জন্য নয়, বরং পুরো পাঁচ বছরই মুখ্যমন্ত্রীর ভার সামলাবেন তিনি। বিজেপির এ অবস্থানে ক্ষুব্ধ শিবসেনা।

উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে  বিজেপি-শিবসেনা নেতৃত্বাধীন সরকার রয়েছে। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবীশ।

বিজ্ঞাপন

মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী পদে কোনো ৫০-৫০ অংশীদারিত্ব নয়, বরং বিজেপির নেতাই পাঁচ বছর রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন এমন বক্তব্য উচ্চারণ করে রাজ্যে বিজেপির অন্যতম নেতা অর্থমন্ত্রী সুধীর মুনগন্তিওয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, ‘মহারাষ্ট্রের যদি ৭ নভেম্বরের মধ্যে সরকার গঠিত না হয়, তবে রাজ্যটিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হতে পারে।’ উল্লেখ্য, আগামী ৮ নভেম্বর মহারাষ্ট্রে চলতি সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

বিজেপি নেতার এমন বক্তব্য শুনে নীরবে বসে থাকেননি শিবসেনা প্রধান উদ্ধ্বব ঠাকরে। শনিবার (২ নভেম্বর) শিবসেনা প্রধান তোপ দাগান বিজেপির দিকে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘ভারতের রাষ্ট্রপতি কি বিজেপির পকেটে?’ উদ্ধ্বব ঠাকরে বলেন, ‘মানুষের রায়কে বিজেপি বারবার অবহেলা করছে। সংবিধান ও আইন সম্পর্ক ধারণা না থাকার ফলই হলো এমন মন্তব্য।’

এদিকে এ রাজ্যে শারদ পাওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি -এনসিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন। ৪৪টি আসন নিয়ে কংগ্রেস রয়েছে চতুর্থ স্থানে। এক্ষেত্রে বিজেপিকে ছেড়ে শিবসেনা যদি তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারী বাকি দলগুলোর সঙ্গে জোট গড়ে তাহলেও রাজ্যে সরকার গঠন সম্ভব। ঠিক এ হুমকিটাই বিজেপিকে দেওয়া হচ্ছে শিবসেনার তরফ থেকে।

বিজ্ঞাপন

সরকার গঠন করতে প্রয়োজনীয় ১৪৫টি আসন যদি বিজেপির থাকে তবে তারা যেমনটা চাইছেন তেমনই সরকার হোক বলে বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত।

এদিকে, শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত গত বৃহস্পতিবার এনসিপি’র প্রধান শারদ পাওয়ারের বাড়িতে যান। ওইদিন উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন শারদ পাওয়ার। মারাঠা স্ট্রংম্যানের সঙ্গে শিবসেনা নেতাদের এমন বৈঠকে জল্পনা আরও বেড়েছে। তবে ওই বৈঠককে স্রেফ সৌজন্য সাক্ষাত বলে জানান শারদ পাওয়ার।

কিন্তু শনিবার যখন (২ নভেম্বর) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে বসাতে শপথ আয়োজনের তোড়জোড় করছে বিজেপি, তখন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, প্রয়াত বাল ঠাকরে পুত্র উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে শারদ পাওয়ারের ফোনালাপ রাজ্যে রাজনীতির মোড় ঘুরে যেতে পারে। কিছু কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এও জানাচ্ছে যে, শিগগিরই কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যেতে পারেন শারদ পাওয়ার।

তবে ঐতিহাসিকভাবে বিজেপির সঙ্গে শিবসেনার দারুণ ঐক্য। এর আগেও একাধিকবার ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দুই দলের মধ্যে দ্বন্দের পরেও ঐক্য করেছে দল দুটি। এখন দেখার বিষয়, এবারের দ্বন্দের ফলে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি নতুন কোনো মোড় নেয় কি না।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন