বিজ্ঞাপন

চসিক নির্বাচন: ভোটার টানতে প্রচারণায় নামবে ইসি

March 2, 2020 | 10:17 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ক্রমাগত ভোটবিমুখ হয়ে পড়া ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে টানতে এবার আক্ষরিক অর্থেই প্রচারণায় নামছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর ফলে প্রার্থীদের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনেরও প্রচারণা নিয়ে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাচনে। ভোট দেয়ার হার অন্তত ৫০ শতাংশে নিতে ইভিএম শো, শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এছাড়া ভোটের দিন আধাবেলা অফিস-আদালত খোলা রাখা এবং সীমিত আকারে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টিও তাদের পরিকল্পনায় আছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার দুই সিটি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটের হার ৩০ শতাংশের নিচে নেমে আসার পর ভোটারদের ভোটবিমুখ হওয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারাও বিষয়টি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য অশনিসংকেত বলে মন্তব্য করেছেন। এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোটের হার বাড়াতে মরিয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে তিনদিন সরকারি ছুটি থাকবে। ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবস, ২৭ ও ২৮ মার্চ শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক সরকারি বন্ধ থাকবে। তিনদিনের বন্ধে ভোটাররা চট্টগ্রাম নগরী ছেড়ে যাবেন, এমন আশঙ্কায় ভোটার কম হওয়ার আশঙ্কা আছে নির্বাচন কর্মকর্তাদের মধ্যে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত শুক্রবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলামের মতবিনিময় সভায় বিষয়টি উঠে আসে। পরদিন আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ভোটার আনার বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘লাগাতার ছুটির কারণে ভোটার কম হতে পারে, এমন আশঙ্কা তো আছে। অন্তত ৫০ শতাংশ ভোটার যাতে ভোটকেন্দ্রে আসেন, সেজন্য আমরা কিছু পরিকল্পনা করেছি। ভোটের দিন স্কুল-কলেজ বাদে সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত, শিল্পকারখানা আমরা আধাবেলা অর্থাৎ দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেওয়ার চিন্তা করছি। সীমিত আকারে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনাও আছে। আলোচনা চলছে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।’

নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটের হার ছিল মাত্র ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ওই আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৩ হাজার ২৪৭ জন। ভোট দিয়েছেন মাত্র ১ লাখ ৮ হাজার ৫৮১ জন।

এরপর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকা উত্তরে ভোট পড়ে ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ঢাকা দক্ষিণে ২৯ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা এখন ১৯ লাখ ৮৯ হাজার। এর মধ্যে ৮৫ হাজার ৮৪ জন নতুন ভোটার। এই নতুন ভোটারদের নিয়েই কিছুটা আশা দেখছে ইসি। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নতুন ভোটারেরা অবশ্যই প্রথমবার ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে আসবেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হবে ৯ মার্চ থেকে। সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুনীর হোসাইন খান সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, ‘প্রার্থীদের প্রচারণা শুরুর পর তারাও প্রচারণায় নামবেন। রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড এবং বিএনসিসি’র সদস্যদের প্রচারণায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। লিফলেট বিলি করা হবে সাধারণ মানুষের মাঝে। এছাড়া জনবহুল স্থানে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে যাওয়া হবে প্রদর্শনের জন্য।’

ইসি’র হিসেবে ছয় থানায় বিভক্ত নগরীর প্রতিটি থানা এলাকায় কমপক্ষে দু’টি করে অনুষ্ঠান করা হবে। অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকবে- শোভাযাত্রা, প্রচারপত্র বিতরণ, সংক্ষিপ্ত বক্তব্য এবং ইভিএম প্রদর্শনী। রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে ১৩ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরা এসব কর্মসূচিতে থাকবেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশন ও সচিবালয় থেকে ঊর্ধ্বতন কাউকেও অতিথি করে আনার পরিকল্পনা আছে তাদের।

মুনীর হোসাইন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভোটারদের আকৃষ্ট করতে যা যা করা দরকার এবার আমরা সব করার চেষ্টা করব। শোভাযাত্রাটা একটু কালারফুল করা, বাদ্যবাজনা থাকবে, পারলে ঘোড়ার গাড়িও একটা দিলাম সামনে। লিফলেট বিলি করব। কেউ যদি সরাসরি কোনো প্রশ্ন করে সেটার জবাবও আমরা দেব। প্রতিটি থানায় দুইটা করে স্পট আমরা নির্ধারণ করছি। প্রতিদিন একটি বা দুটি স্পটে অনুষ্ঠান হবে। এভাবে ধারাবাহিক ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত প্রচারণা চলবে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এইচএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন