বিজ্ঞাপন

মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে চলার অঙ্গীকার আ.লীগের

March 17, 2020 | 12:03 am

নৃপেন রায়, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনিমার্ণের অঙ্গীকারে বহুল প্রত্যাশিত ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন করবে আওয়ামী লীগ। দেশকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার অভিপ্রায় নিয়ে জাতির পিতার রেখে যাওয়া আলোকবর্তিতা নিয়ে তার কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করতে চায় দলটি। জাতীয় জীবনের ঐতিহাসিক বর্ষে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডকে বিশ্বের কাছে নতুন মহিমায়, নতুন সম্মানের সঙ্গে এগিয়ে নিতে নতুন প্রত্যয়ে নতুন অঙ্গীকারে মুজিববর্ষ উদযাপন করবে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

বিজ্ঞাপন

মুজিববর্ষ উদযাপনের মাহেন্দ্রক্ষণ শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ)। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত উদযাপন করা হবে মুজিববর্ষ। অবিভক্ত ভারতের পূর্ববঙ্গ, তথা বর্তমানে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্ম নেন জাতির পিতা। সেই হিসাবে এ বছরের ১৭ মার্চ তার জন্মশতবার্ষিকীর সাক্ষী হচ্ছে বাংলাদেশ। এদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ। তাই এ বছরের ১৭ মার্চ থেকে আগামী বছরের স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত একবছর ১০ দিন ধরে বাঙালি পালন করবে ‘মুজিববর্ষ’।

জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীর এই আয়োজনের সূচনা দিবসটি জাঁকজমকপূর্ণভাবেই উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় সেসব আয়োজন পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী, দেশব্যাপী সীমিত পরিসরে আয়োজিত হবে এই অনুষ্ঠান।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রত্যয় নিয়ে উন্নয়ন-সমৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে ২১ দফা অঙ্গীকার নিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করে দলটি। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় ও সার্বিক হিসাবে চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। রাষ্ট্রপরিচালনায় মন্ত্রিসভা গঠনেও দেখান চমক। সরকার গঠনের পর থেকে ইশতেহারের মূল বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

গত বছরের ডিসেম্বরে টানা মেয়াদে ক্ষমতার থাকার ফলে ঝিমিয়ে পড়া তৃণমূলের গতি ফিরিয়ে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, যারা মাদক ব্যবসা করে, যারা লুটপাট করে, যারা জমি দখল করে, টেন্ডারবাজি করে, চাঁদাবাজি করে— তাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। এই অ্যাকশন শুধু ঢাকায় নয়, সারাবাংলায় চলবে। সে সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে ফের সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের।

গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষ নিয়ে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য তুলে ধরেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন তিনি জাতির বিজয়ের আলোকবর্তিকার মশাল নিয়ে জাতিকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, যে বিজয়ের আলোকবর্তিকা তিনি আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন, সেই মশাল নিয়েই আমরা এগিয়ে চলতে চাই। বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চাই। এই বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। সম্মানের সঙ্গে চলবে। আমাদের দেশের মানুষ যেন জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে এই বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে পারি, আজকের দিনে সেই কামনা করি।

বিজ্ঞাপন

মুজিববর্ষ নিয়ে এরপর থেকেই আরও বেশি নিবিড়ভাবে কাজ করতে থাকে আওয়ামী লীগ। গত ২০ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপনের মাধ্যমে দেশে বিদেশে আমাদের বাংলাদেশ ‘ব্র্যান্ড’ ফোকাস করা হবে। এটিই হবে মুজিব শতবার্ষিকী, তথা মুজিববর্ষ উদযাপনের স্পিরিট। মুজিববর্ষে আমাদের ইতিহাস, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংগ্রাম, আমাদের সাফল্য, আমাদের উন্নয়ন, আমাদের অর্জন ফোকাস হবে এবং দেশে বিদেশে আমাদের বাংলাদেশ হবে ‘ব্র্যান্ড’।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের ইতিহাসের মহাবীর, মহানায়ক। আমরা জাতির পিতার চিন্তাভাবনা, আইডিওলজি নিয়ে মুজিববর্ষে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় অনুপ্রাণিত করব, উজ্জীবিত করব। আমাদের চলার পথকে আরও গতিময় করব। আমরা তা জাতির পিতার সংগ্রাম ইতিহাস-ঐতিহ্যের আলোকে আরও বেগবান করব। আমরা জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেব।’

১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার প্রত্যয়ে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন