বিজ্ঞাপন

ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়ার প্রস্তাব ড. মোশাররফের

April 14, 2020 | 7:27 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তালিকা প্রণয়ন এবং ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ন্যস্ত করার প্রস্তাব করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি এই প্রস্তাব দেন।

বিজ্ঞাপন

ড. মোশাররফ বলেন, ‘ত্রাণ যাতে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায় সেজন্য তালিকা সম্প্রসারণ করতে হবে। সরকারের কাছে ভিজিডি-টিআর-বৃদ্ধ-মুক্তিযোদ্ধাদের লিস্ট আছে। এখন যারা খেটে খাওয়া মানুষ, যারা নিম্নমধ্যবিত্ত এবং যারা গরীব তাদেরকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব।’

‘সেনাবাহিনীসহ সশ্বস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীকে এই দায়িত্ব পুরোপুরি দিলে তারা সারাদেশে এই তালিকা তৈরি করবে। এরপর থেকে যত রকমের সাহায্য, যত রকমের ত্রাণ, ভিজিএফ-ভিজিডি, ত্রাণ এবং বয়স্কভাতা সব কিছু সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে এবং পুলিশ বাহিনীর মাধ্যমে সরাসরি বিতরণ করা যাবে। ত্রাণ চুরি হবে না’—বলেন ড. মোশাররফ।

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে বাঁচানো যেমন আমাদের দায়িত্ব, তেমনিভাবে না খেয়ে মানুষ যাতে না মরে সেটা দেখার দায়িত্বও সরকার এবং আমাদের সকলের।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যেভাবে বর্তমান সরকার ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছে, সেখানে চাল চুরির হিড়িক পড়েছে। কারা করছেন? চেয়ারম্যান-মেম্বার-উপজেলা চেয়ারম্যানরা। তারা কারা? তারা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। তারা গত ১২ বছর যাবত এসব কর্মকাণ্ডে অভ্যস্ত।’

তিনি বলেন, ‘সরকার এটা উপলব্ধি করতে পেরে গতকাল ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) বন্ধ করে দিয়েছে। এটা বন্ধ করে দিলে কেমনে হবে? এই মার্কেট থেকে যারা ক্রয় করে তারা হচ্ছে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত। তাদের এখন কী হবে?’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে ড. মোশাররফ বলেন, ‘আমি আগেও বলেছিলাম, যত টেস্ট করা যাবে আমাদের দেশে রোগীর সংখ্যা, আক্রান্তের সংখ্যা তত বেশি পাওয়া যাবে। অবহেলা করায় আসলে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। যে ব্যক্তিটি চিহ্নিত ছিল না, সে কিন্তু অনেককে সংক্রমিত করে ফেলেছে।’

বিজ্ঞাপন

‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি বলতে চাই, আমাদের পত্র-পত্রিকার খবরে বলা হচ্ছে যে, বর্তমানে টেস্ট করার সক্ষমতা ৫ হাজার জনকে। আমরা কিন্তু তাও করছি না। এ ব্যাপারে সরকার কোনো ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন না। আমি আবারও প্রত্যাশা করবো যাতে করে এই টেস্ট বা পরীক্ষা আরও বেশি সম্প্রসারিত করা হয়, আরও বেশি সংখ্যায় করার ব্যবস্থা করা যায়। তাহলে দেখা যাবে বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা কত এবং কতজন মুত্যুবরণ করেছে’— বলেন ড. মোশাররফ।

হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড ও ভেন্টিলেটর স্থাপনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র হাসপাতাল প্রস্তুত করার খবর পাচ্ছি। কিন্তু আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর স্থাপন করার সুযোগ যদি সৃষ্টি করা না হয় তাহলে এই হাসপাতালগুলো কোনো কাজে আসবে না।’

ড. মোশাররফ বলেন, ‘করোনাভাইরাসকে মোকাবিলায় সম্মুখভাগে যুদ্ধ করছেন যারা তাদের মধ্যে প্রথম হচ্ছেন চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী। তারপরে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী। আমরা দেখতে পারছি ১০ জন চিকিৎসক ও ৪১ জন নার্স এই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। আমাদের সকলের প্রয়োজন তাদেরকে উৎসাহিত করা, তাদের মনোবলকে বৃদ্ধি করা, তাদের প্রণোদনা দেওয়া, তাদের যা কিছু প্রয়োজন তা সরবারহ করা। আজকে আমাদের মানুষকে বাঁচাতে হলে যারা সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ, তাদেরকে পর্যাপ্ত প্রণোদনা দেওয়া প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, কারও কারও অবহেলার কারণে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কুৎসা রটানো হয়, নানা রকমের মন্তব্য করা হয়। এমনকি ইতিমধ্যে ছয় জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটা চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীর মনোবল ভেঙে দেবে। আমি আশা করি, তাদের প্রতি ভালো আচরণ করে তাদেরকে দেশপ্রেমে উদ্ধুব্ধ করে জনস্বার্থে মাঠে রাখা প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন