বিজ্ঞাপন

নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই মোংলায় তিনটি ব্রিজে ফাটল

May 9, 2020 | 10:06 pm

লোকাল করেসপন্ডেন্ট

মোংলা: মোংলায় তিনটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই একাধিক ফাটল দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ওই ব্রিজ তিনটির নির্মাণ কাজে নিম্নমানের উপকরণ ও নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাঁটল ধরা স্থানসমূহে দ্রুত সিমেন্ট-বালুর প্রলেপ দিয়ে সরকারি কোষাগারের প্রায় ৭০ লাখ টাকার বিল উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

বিজ্ঞাপন

এসব নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইতিমধ্যে ব্রিজের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেছেন।

জানা গেছে , ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনে মোংলায় গ্রামীণ রাস্তায় সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যেগ নেওয়া হয়। সরকারের এ প্রকল্পের আওতাধীন চাঁদপাই ইউনিয়নে ২টি ও সুন্দরবন ইউনিয়নে ১টি গ্রামীণ ব্রিজের কাজ পায় মেসার্স মাহাতাব এন্টারপ্রাইজ নামের স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

প্রথম পর্যায় কার্যাদেশ পাওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট উপজেলার দক্ষিণ চাঁদপাই খানজাহান বিদ্যালয়সংলগ্ন খালের ওপর ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। প্রায় ১৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় মূল্যের এ প্রকল্পের কাজ একই অর্থ বছরের ২ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি।

বিজ্ঞাপন

এরপর চলতি বছরের মার্চে প্রায় ৫ মাস পর দায়সারা এ সেতুর কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই পিলারসহ একাধিক স্থানে ফাঁটল দেখা দেয়। জনরোষের মুখে ফাঁটল লাগা স্থানসমূহে কোনমতো সিমেন্ট-বালুর প্রলেপ দিয়ে সড়ে পড়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া একই অর্থবছরে ও প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কার্যাদেশ পাওয়া ৩২ লাখ ৪১ হাজার টাকা প্রাক্কলিত মূল্যের অপর একটি ব্রিজের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট। মাকড়ঢোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাঁশতলা খালের ওপর ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এ ব্রিজটির নির্মাণ কাজেও নেওয়া হয়েছে নানা অনিয়মের আশ্রয়। এ ব্রিজের কাজও ২০১৯ সালের ১৭ অক্টেবর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। নির্ধারিত সময়ের পর চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল মাসে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু গত সপ্তাহে ব্রিজের দুই প্রান্তে মাটি ভরাট ও লেভেল কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে হঠাৎ করেই ব্রিজের দু’প্রান্তের পিলার, বেজ, ওয়াল ও স্লাবে ৬/৭টি ফাটল দেখা দেয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্রিজ নির্মাণে নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্রিজের দু’প্রান্ত হতে অপরিকল্পিতভাবে মাটি খনন করা হয়েছে। এতে ব্রিজসংলগ্ন বেশ কয়েকটি পরিবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঠিকাদারের অপরিকল্পিত মাটি উত্তোলনে আশপাশের বসতঘর, দোকানপাট খালের মধ্যে ঝুঁকে পড়েছে।

অপরদিকে, সুন্দরবন আইনিয়নের কচুবুনিয়া খালের উপর প্রায় ১৮ লক্ষাধিক টাকার ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের ব্রিজটিতেও ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি মেসার্স মাহাতাব এন্টারপ্রাইজের নামে।

মোংলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মো. নাহিদুজ্জান জানান, মাটি খনন কাজে অদক্ষতার অভাবেই প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণাধীন ব্রিজে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন