বিজ্ঞাপন

অবহেলাজনিত মৃত্যু ‘ফৌজদারি অপরাধ’ হিসেবে দেওয়া নির্দেশনা স্থগিত

June 16, 2020 | 3:49 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাকালীন সময়ে বেসরকারি হাসপাতাল মনিটরিং, হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০টি নির্দেশনা সমূহের মধ্যে ৭টি স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। এর মধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যু ‘ফৌজদারি অপরাধ’ হিসেবে দেওয়া নির্দেশনাও রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৬ জুন) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ননী এ আদেশ দেন। সকালে হাইকোর্টে আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ।

যে সাত দফা স্থগিত হয়েছে—

১। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা নির্দেশনা অনুসারে ৫০ শয্যার অধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহে ১৫ জুন পর্যন্ত কত জন কোভিড এবং নন-কোভিড রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে সে সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে এ নির্দেশ পালনের কথা ছিলো। পাশাপাশি ৫০ শয্যার অধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহের তালিকাও আর আদালতে দিতে হবে না।

বিজ্ঞাপন

২। বর্তমান প্রেক্ষপটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা সমূহ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ যথাযথ ভাবে প্রতিপালন করছে কি না সে বিষয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহের কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিন পর পর একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে দেওয়া। ওই সকল প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৫ দিন পর পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরকে এ প্রতিবেদন আদালতে পাঠাতে বলা হয়েছিল।

৩। ঢাকা মহানগর ও জেলা, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলাসহ বিভাগীয় শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ যাতে কোভিড ও নন-কোভিড সব রোগীকে পরিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা দেয়, সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে একটি মনিটরিং সেল গঠন। স্থগিত করা হয়েছে এই নির্দেশনাও।

করোনা চিকিৎসায় হাইকোর্টের ৭ দফা নির্দেশনা চেম্বার আদালতে স্থগিত

 

বিজ্ঞাপন

৪। কোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ কোনো রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে অনীহা দেখালে এবং এতে করে ওই রোগীর মৃত্যু ঘটলে ‘তা অবহেলাজনিত মৃত্যু’ হিসেবে বিবেচিত অর্থাৎ ‘ফৌজদারি অপরাধ’। দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে দেওয়া নির্দেশনাও স্থগিত করা হয়েছে।

৫। স্বাস্থ্য অধিদফতরকে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবস্থাপনা কর্যক্রমকে অধিকতর জবাবদিহিমূলক ও বিস্তৃত করার কথা বলা হয়েছিল।

৬। ভুক্তভোগীরা যাতে এ সেবা দ্রুত ও সহজ ভাবে পেতে পারেন তা নিশ্চিত করা, কোন হাসপাতালে আইসিইউতে কত জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং কতটি আইসিইউ শয্যা কী অবস্থায় আছে তার আপডেট প্রতিদিনের প্রচারিত স্বাস্থ্য বুলেটিন এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা, পৃথকভাবে ‘আইসিইউ হটলাইন’ চালু এবং হটলাইন নাম্বারগুলো প্রতিদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করার কথা বলা হয়েছিল। এটিও স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।

এছাড়া লকডাউনের বিষয়টি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

আদালতে ভার্চুয়ালি রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান, আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ এম জামিউল হক, মো. নাজমুল হুদা, মোহাম্মাদ মেহেদী হাসান এবং ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘করোনায় চিকিৎসা নিয়ে গতকাল হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনাগুলোর মধ্যে সাতটি নির্দেশনা স্থগিত করেছেন। বাকিগুলো বহাল রেখেছেন আদালত।’

উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে আইসিইউ, লকডাউন, সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে একাধিক রিট দায়ের করা হয়। ওই সব রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার (১৫ জুন) বেঞ্চ এসব নির্দেশনা দেন।

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন