বিজ্ঞাপন

‘সাহেদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ এসেছে, সব তদন্ত করব’

July 22, 2020 | 9:35 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। সেসব অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, ডিবি হেফাজতে সাহেদ পাঁচ দিন রিমান্ডে ছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে সাহেদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের দায়ের করা মামলাটি র‌্যাবকেই তদন্ত করার আদেশ রয়েছে। ফলে র‌্যাব মামলাটি তদন্ত করবে।

আরও পড়ুন- সাহেদের বিরুদ্ধে মামলা তদন্তের অনুমতি পেল র‌্যাব

বুধবার (২২ জুলাই) দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান আব্দুল বাতেন। তিনি বলেন, র‌্যাব এ বিষয়ে প্রাথমিক অপারেশন করেছে। তাছাড়া আসামি গ্রেফতার থেকে শুরু করে সবই তারা করেছে। আইনি প্রক্রিয়ায় মামলাটি ডিবিতে এসেছিল। তবে আজ তারা (র‌্যাব) মামলাটি নিয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

বাতেন বলেন, আমাদের কাছে থাকা অবস্থায় অনেক অভিযোগ এসেছে। হাসপাতালটি করোনা চিকিৎসা, নমুনা সংগ্রহ, ফলাফলের সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা ছিল। এছাড়া কত সার্টিফিকেট তাদের দেওয়ার কথা ছিল, আমরা সব তদন্ত করছি। তদন্তের অংশ হিসেবেই আমরা তার গাড়ি জব্দ করেছি৷ সেখান থেকে মদ, অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আরও দু’টি মামলা আমরা করেছি।

আরও পড়ুন- অর্থ আত্মসাৎ-পাচারের অভিযোগে সাহেদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

ডিবি’র দায়ের করা মামলা ডিবিই তদন্ত করবে জানিয়ে আব্দুল বাতেন বলেন, আগের যে মামলা, সেটি র‌্যাবই তদন্ত করবে। এরই মধ্যে দু’জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই মামলার চার্জশিট দাখিল করব। বিশেষ করে ডিএমপি, ডিবি ও র‌্যাবসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে কিছু মামলা আমরা তদন্ত করব, কিছু মামলা সংশ্লিষ্ট থানা তদন্ত করবে। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে, সেসব বিষয় আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শেষ করতে চাই৷ সাহেদ যেসব জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে, সবই তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।

বিজ্ঞাপন

রিমান্ডে কী পরিমাণ জাল সার্টিফিকেট পাওয়া গেছে— জানতে চাইলে আব্দুল বাতেন বলেন, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। এসবের মধ্যে টেস্ট না করেই অনেক ফল দেওয়া হয়েছে। এগুলোর নমুনা সংগ্রহ করলেই তার মামলা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।

আরও পড়ুন- মধ্যরাতে সাহেদকে নিয়ে অভিযান, অস্ত্র-মাদক জব্দের পর দুই মামলা

অস্ত্র ও মাদকের মামলায় অন্যের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, যার কাছে এগুলো পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ। এতে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সাহেদ হয়তো মাদক সেবন করতেন। তাই হয়তো তার গাড়িতে মাদক পাওয়া গেছে।

‘জব্দ করা অস্ত্রের কোনো অবৈধ ব্যবহারের প্রমাণ আমরা এখনো পাইনি। তার দেখানো তথ্যের ভিত্তিতেই এসব অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। তার বেশকিছু বৈধ অস্ত্র আছে, সেগুলো থাকলে সমস্যা নেই। তবে তার বিরুদ্ধে আমরা ২০টির মতো মামলার তথ্য পেয়েছি,’— বলেন আব্দুল বাতেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- প্রতারণার অভিযোগ স্বীকার করেছেন সাহেদ: ডিবি

এর আগে, কোভিড চিকিৎসায় নিয়োজিত রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। সারাবাংলার অনুসন্ধানে জানা যায়, লাইসেন্স না থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল হাসপাতালটি। তবে রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিত। এছাড়া অনুমতি না থাকলেও বাসায় গিয়ে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ, নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করিয়েই রেজাল্ট দেওয়ার মতো বিভিন্ন অভিযোগ পায় সারাবাংলা। এমন নানা অভিযোগ জমা পড়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরেও। পরে ৬ জুলাই হাসপাতালটিতে অভিযান চালিয়ে এসব অভিযোগের সত্যতায় পায় র‌্যাব।

পরদিন হাসপাতালটির উত্তরা ও মিরপুরের দু’টি শাখা সিলগালা করে দেওয়া হয়। রিজেন্টের চেয়ারম্যান মো. সাদেহসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র‌্যাব। স্বাস্থ্য অধিদফতরও হাসপাতালের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।

আরও পড়ুন- সাহেদের গোপন অফিস থেকে জাল টাকা উদ্ধার, র‌্যাবের মামলা

মামলার পর সাহেদ ঢাকা থেকে পালিয়ে যান। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে সবশেষ সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন। গত বুধবার ভোরে ভারতে পালানোর প্রস্তুতির সময় সাহেদকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তাকে নিয়ে উত্তরায় তার অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় সাহেদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানা ও সাতক্ষীরায় আলাদা আলাদা মামলা হয়।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন