বিজ্ঞাপন

এসডিজি অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই পরিকল্পনা নেওয়ার তাগিদ

October 2, 2020 | 1:17 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কোভিড-১৯ ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা, দারিদ্র, অর্থনৈতিক ও লৈঙ্গিক অসমতাসহ আরও নানাামুখী সমস্যার জন্ম দিচ্ছে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বিশেষ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে। তাই কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে এসডিজি অর্জনে রাষ্ট্র ও নাগরিকের মধ্যে যেন কোনো ধরনের আস্থাহীনতা তৈরি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ ধরনের আস্থাহীনতা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করবে। এ পরিস্থিতিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ‘ভবিষ্যত পুনর্গঠনে মহামারি পরবর্তী বিশ্বে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের ভূমিকা‘ শীর্ষক এক ওয়েবিনারের বক্তারা এসব কথা বলেন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার সানশাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। সেন্টার ফর পিস স্টাডিজের পরামর্শক ড. ক্যাথরিন লি’র বক্তব্যের মাধ্যমে ওয়েবিনারের সূচনা হয়। ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন ড. বুলবুল সিদ্দিকী।

ড. ক্যাথরিন লি তার বক্তব্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত করেন। কোভিড পরবর্তী বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার প্রয়োজন আরও বেশি বলে মত দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে বক্তারা নতুন করে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও সংস্কারের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে জাতীয় পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করে কোভিড পরবর্তী অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমাদের সামগ্রিক সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে এবং প্রবৃদ্ধি ঠিক রেখেই কোভিড পরবর্তী সমস্যাগুলো সমাধানে এসডিজি’র আলোকে পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি সমাজের সব স্তরের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য একযোগে সমন্বিত প্রচেষ্টা নেওয়ার কথা বলেন।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি সামাজিক সুরক্ষার ওপর জোর দিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতে বলেন। তিনি আরও বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে এসডিজি অর্জনে উন্নয়ন কার্যক্রম হতে হবে পরিবেশবান্ধব, অন্তর্ভক্তিমূলক ও পক্ষপাতশূন্য।

বিজ্ঞাপন

কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে এসডিজি অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা বিষয়ে গ্রিফিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তপন সরকার বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ও সহযোগিতাভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে, যেন স্বাস্থ্য খাতের পাশাপাশি দারিদ্র্য, অসমতা ও শিক্ষা খাতের চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবিলা করা যায়।

এ প্রসঙ্গে এসআইপিজি’র পরামর্শক অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থার ওপর জনমনের ভরসার অভাবকে প্রকটভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। এ কারণে কোভিড পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বাস্থ্য খাতকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর কোনো বিকল্প নেই।

অস্ট্রেলিয়ার সানশাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. শরীফ আহমেদ মুকুল বলেন, কোভিড পরবর্তী নানাবিধ সমস্যা নিয়ে কাজ করার সময় পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের (এসআইপিজি) জ্যেষ্ঠ ফেলো শহীদুল হক বলেন, জনগণের দাবি ও স্বার্থকে সামনে রেখে এসডিজিকে নতুনভাবে বিবেচনায় আনতে হবে। প্রয়োজনে নতুন করে বৈশ্বিক ডায়ালগ তৈরির প্রচেষ্টা হাতে নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সমাপনী বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, কোভিড-১৯ নানা রকম সমস্যা নিয়ে আসছে। একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে তিনি একটি বিশাল অংশের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত হওয়ার প্রতি জোর দেন। তিনি শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন।

ড. বুলবুল সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হক, সিপিএ’র সমন্বয়ক ড. এম জসিম উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পেশাজীবী ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত আমন্ত্রিত অতিথিরা।

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন