বিজ্ঞাপন

‘জিয়া মারা যাওয়ায় তাকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আসামি করা হয়নি’

August 12, 2021 | 1:42 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত, এটা দিনের আলোর মতোই সত্য। তবে এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মামলার তদন্তকালে কেন জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়নি। এর উত্তর হলো- জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালে মারা যাওয়ায় তাকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আসামি করা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে গুলশানের নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের জন্য জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের আইনে মরণোত্তর সাজা দেওয়ার কোনো বিধান নেই। ফলে আইনের বাইরে গিয়ে আমরা শুধু তামাশা করার জন্য একজনকে সাজা দেব না। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত, এটা সাক্ষ্যপ্রমাণসহ কমিশনের মাধ্যমে আমরা জনসম্মসুখে উপস্থাপন করব।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের খুনের দায়ে যারা সর্বোচ্চ আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে এখনও কেউ কেউ পলাতক থাকায় তাদের ব্যাপারে আদালতের রায় কার্যকর করা যায়নি। মূলত দুই জন সাজাপ্রাপ্ত আসামি দু’টি দেশে রয়েছে, তাদের ফিরিয়ে এনে এই রায় কার্যকর করার ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। শুধু সরকার নয়, আওয়ামী লীগের একজন কর্মী যতক্ষণ বাংলাদেশে থাকবে, যতদিন বঙ্গবন্ধুর একজন অনুসারী বেঁচে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এই হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমাদের চলমান প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তবে চলমান প্রক্রিয়া কী? তার বিশদ বর্ণনা করলে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হতে পারে। সেজন্য আমরা বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না। তবে এতটুকু বলব, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমাদের কোনো শিথিলতা নেই। তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’

আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের ধারাবাহিকতায় রয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার প্রথম থেকেই এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা এবং পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছেন, তারা যে এককভাবে এই কাজটা করেছেন তা নয়। বরং এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে একটা ষড়যন্ত্র রয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কারা জড়িত তাদের অন্তত পক্ষে চিহ্নিত করে দেশবাসীর কাছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে। তাদের চিহ্নিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, এ বিষয়ে একটা কমিশন গঠন করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

আনিসুল হক বলেন, ‘কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর গত ৮ মার্চ থেকে করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে কমিশন গঠনের যে রূপরেখা তৈরি করেছিলাম, সেটার বিষযে এখনও আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। করোনাভাইরাস কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলে এই কমিশনের রূপরেখা কী হবে, কার্যাবলী কী হবে, কমিশন কাদের দ্বারা গঠিত হবে- এসব চূড়ান্ত করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পলাতক খুনি মুসলেম উদ্দিন ভারতেই পলাতক রয়েছে- এমন একটা তথ্য নিয়ে আলোচনা উঠেছিল। আমরা তা যাচাই-বাচাই করে দেখেছি। এখন পর্যন্ত তার কোনো সত্যাতা পাইনি।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরে আসার পর, যে আদলে বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশ নতুনভাবে গড়ে তুলতে তিনি যে ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন, তার ওপর গুরুত্ব দিয়েই বর্তমান আইনগুলো তৈরি করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জিএস/এএম/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন