বিজ্ঞাপন

মিতু হত্যা: চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি বাবুলের

October 14, 2021 | 6:30 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া প্রথম মামলায় দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেছেন ওই মামলার বাদি তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। একই ঘটনায় দায়ের হওয়া আরেক মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন বাবুল।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমানের আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে তার আইনজীবী নারাজি আবেদন দাখিল করেন। আদালত বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতে আগামী ২১ অক্টোবর নারাজি আবেদনের ওপর শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।

জানতে চাইলে বাবুল আক্তারের আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম মামলায় দু’জন আসামি জবানবন্দিতে বলেছেন- মুছার নির্দেশে তারা মিতুকে খুন করেছেন। সেই মুছাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী তদন্ত কর্মকর্তারা সফটওয়্যারের মাধ্যমে মোবাইলের কললিস্ট পর্যালোচনা করেছেন। কিন্তু কোথাও বাদির (বাবুল আক্তার) সঙ্গে মুছার যোগাযোগের প্রমাণ পাননি। পাঁচ বছর পর এসে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মোবাইল কললিস্টের সূত্র ধরে বাবুল আক্তারকে ফাঁসানো হয়েছে বলে বাদির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।’

‘এজন্য বাদি তাকে ফাঁসানোর সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখপূর্বক আদালতে নারাজি আবেদন দাখিল করেছেন। একইসঙ্গে আমরা শুনানির দিন বাদির উপস্থিতি নিশ্চিতের একটি আবেদন করেছি। আদালত ২১ অক্টোবর শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন। পুলিশকে শুনানির দিন কারান্তরীণ বাবুল আক্তারের আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন’— বলেন আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল।

বিজ্ঞাপন

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে।

স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টিকারী চাঞ্চল্যকর এই মামলার। গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।

বিজ্ঞাপন

আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দাখিলের পর গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।

ওইদিনই (১২ মে) বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে জবানবন্দি দেননি তিনি। বাবুল আক্তারকে বর্তমানে ফেনী জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দুই দফা জামিনের আবেদন করেন তিনি। কিন্তু জামিন পাননি।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন