বিজ্ঞাপন

করোনা সিকোয়েন্সিংয়ের কিট নেই বিসিএসআইআরে!

November 30, 2021 | 11:49 pm

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট যখন চোখ রাঙাচ্ছে বিশ্বজুড়ে, ঠিক সেই সময়েই কিটের অভাবে জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে পারছে না বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। অথচ দেশের পক্ষে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছে এই প্রতিষ্ঠানটিই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত কিট এনে ফের সিকোয়েন্সিং পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে এর গতিবিধি পর্যালোচনা করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের তথ্যও নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় সিকোয়েন্সিং। দেশে এই ভাইরাসের সংক্রশণ শনাক্ত হওয়ার পর বিসিএসআইআর-ও সিকোয়েন্সিং করে আসছিল। গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটা (জিআইএসএইড) ওয়েবসাইট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশের পক্ষে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সবচেয়ে বেশি জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছে এই প্রতিষ্ঠানটিই। অথচ করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে যখন আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে নতুন করে কঠোর স্বাস্থ্য সতর্কতা আরোপের চেষ্টা করা হচ্ছে, তখনই জানা গেল— বিসিএসআইআর কিটের অভাবে সিকোয়েন্সিং বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কিটের জন্য তহবিলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিগগিরই কিটের ব্যবস্থা করা সম্ভব হতে পারে। আর তখন প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা সম্ভব হবে।

বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আফতাব আলী শেখ সারাবাংলাকে বলেন, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য প্রচুর অর্থ খরচ হয়। এর জন্য আলাদা কিটেরও প্রয়োজন হয়ে থাকে। সেই কিট আমাদের ফুরিয়ে গেছে। আমরা খুব দ্রুতই আবার কিট আনার চেষ্টা করছি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ নমুনারও প্রয়োজন হয়ে থাকে। সেই পরিমাণ নমুনা না থাকায় মাঝে আমাদের পক্ষ থেকে সিকোয়েন্সিং করা হয়নি। তবে আমরা এখন ওমিক্রন বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছি।

সরকারিভাবে নমুনা সরবরাহের বিষয়ে জোর দিয়ে বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান বলেন, যারা দেশের বাইরে থেকে আসছে তাদের নমুনা  যদি সরকারিভাবেই বিমানবন্দর থেকে আমাদের সরবরাহ করা হয়ে থাকে, সেটি খুব কাজের একটি বিষয় হবে। সেক্ষেত্রে আমরা খুব দ্রুতই সিকোয়েন্সিং করে ফলাফল জানাতে পারব।

এর আগে, ২০২০ সালে দেশে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে জিনোম সিকোয়েন্সিং শুরু করে বিসিএসআইআর জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি। গত বছরের ৭ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২৬৩টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে প্রতিষ্ঠানটি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল মেডিসিন (এনআইএলএমআরসি) থেকে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বিসিএসআইআর’র পক্ষ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেগুলোর সিকোয়েন্সিংয়ের ফল জিআইএসএইড ওয়েবসাইটেও আপলোড করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক আফতাব আলী বলেন, সরকারিভাবে যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও আমাদের সিকোয়েন্সিংয়ের কাজ দেওয়া হয়, তাহলে দেশের স্বার্থেই সেটি আমরা করব। আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এ বিষয়ে সবসময়ই আমাদের প্রেরণা দিয়ে থাকেন। আমরা এসব কাজ আরও বেশি করতে চাই।

জিআইএসএইড ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার ২০৭টি নমুনার সিকোয়েন্সিং ফল জমা পড়েছে এখানে। এর মধ্যে প্রথম জিনোম সিকোয়েন্সিং ফল জমা দেয় চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ)। এর মধ্যে বিসিএসআইআর’র পক্ষ থেকে সাত শতাধিক নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন রূপের কারণে সংক্রমণ বাড়তে পারে সারাবিশ্বে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯-এর এই নতুন রূপের নাম দিয়েছে ওমিক্রন (বি.১.১.৫২৯)। বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে  নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট বিষয়ে। বাংলাদেশেও যাদের সক্ষমতা আছে, তাদের সবারই জিনোম সিকোয়েন্সিং করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

ওমিক্রন পাওয়া গেছে যেসব দেশে

ওমিক্রন ঠেকাতে ‘নো ভ্যাকসিন নো সার্ভিসে’র পরামর্শ

ভারতের ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ বাদ

ওমিক্রন সতর্কতা: সীমিত হবে সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠান

ওমিক্রন প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ পাবেন ষাটোর্ধ্বরা

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট: ভারতের ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

আফ্রিকা থেকে এসে ‘নিখোঁজ’ ২৪০ জনকে নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন