বিজ্ঞাপন

ট্রেন-গাড়ি সংঘর্ষ: নিহত আরেকজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী

December 4, 2021 | 6:50 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ডেমু ট্রেনের সঙ্গে গাড়ির সংঘর্ষে নিহত তৃতীয়জনের পরিচয় মিলেছে। এর আগে পুলিশ নিহত দু’জনের পরিচয় জানিয়েছিল। তৃতীয়জন চট্টগ্রাম নগরীর একটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে নগরীর খুলশী থানার ঝাউতলা রেলক্রসিং এলাকায় ডেমু ট্রেনের সঙ্গে সিএনজি অটোরিকশা ও হিউম্যান হলারের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন নিহতের বিষয় পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

নিহত দু’জন যাদের আগেই পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন- মো. মনিরুল ইসলাম (৫৮) এবং বাহা উদ্দিন সোহাগ। এদের মধ্যে মনিরুল ইসলাম নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উত্তর জোনে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল। বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।

বাহা উদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়। পেশায় একজন প্রকৌশলী। তিনি ডালি কনস্ট্রাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নিহত আরেকজন দুর্ঘটনাকবলিত ম্যাক্সিমা হিউম্যান হলারের চালক বলে দুর্ঘটনার পর পুলিশ জানিয়েছিল। তবে পরিচয় শনাক্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণ নগরীর পাহাড়তলী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার নাম সাদরাজ উদ্দিন। তিনি এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তাদের বাসা নগরীর হামজারবাগের গাউছিয়া আবাসিক এলাকায়।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) আরাফাতুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা নিহত তৃতীয়জনের পরিচয়ও পেয়েছি। তার বাবাসহ পরিবারের লোকজন এবং সহপাঠীরা এসে লাশ শনাক্ত করেছেন। তিনি চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। পাহাড়তলী কলেজের ছাত্র ছিলেন। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, ম্যাক্সিমা হিউম্যান হলারে করে বাসা থেকে কলেজে যাবার সময় তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন।’

এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে নগরীর হামজারবাগ থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ছুটে আসেন সাদরাজের বাবা মোহাম্মদ করিম। পেশায় তিনি একজন মুদি দোকানি। ছেলের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সহপাঠীরা জানিয়েছেন, সাদরাজ কলেজে বিএনসিসির সদস্য ছিলেন। বিজয় দিবসের কর্মসূচির প্রস্তুতি নিতে তিনি কলেজে যাচ্ছিলেন।

এদিকে দুঘটনায় আহত ছয়জন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এরা হলেন- জমির উদ্দিন (৪০), শহীদুল ইসলাম (৪০), জয়নাল (২৬), জোবায়দা (২০), আদনান (৭) এবং মোহাম্মদ (১০)।

সিএমপি ও রেল পুলিশের কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ডেমু ট্রেনটি নাজিরহাট থেকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যাচ্ছিলেন। ঝাউতলা রেলক্রসিংয়ে গেইট লাগানো ছিল না। রেললাইন সংলগ্ন হয়ে একটি অটোরিকশা, একটি ম্যাক্সিমা হিউম্যান হলার ট্রেন যাবার পর রেললাইন পার হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। এসময় পেছন থেকে এসটি বাস এসে অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে সেটি রেললাইনের ওপর উঠে যায়। ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাটি ছিটকে পড়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ম্যাক্সিমা হিউম্যান হলারেও ধাক্কা লাগে।

ট্রাফিক কনস্টেবল মনিরুল ওই এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। অটোরিকশাটি ছিটকে গিয়ে তার ওপর পড়ে। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ অটোরিকশাকে ধাক্কা দেওয়া বাসটি আটক করেছে।

বিজ্ঞাপন

দুর্ঘটনার কারণ ও দায়ীদের বিষয়ে তদন্তের জন্য রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে রেলওয়ে পুলিশের চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল গফুরকে। এছাড়া রেলওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) ও চট্টগ্রামের রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তাকে (ওসি) তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশের চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) হাসান চৌধুরী কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন