বিজ্ঞাপন

‘শিশু মুক্তিযোদ্ধা’ তারেক ও খালেদাকে মুক্ত করার শপথ

December 19, 2021 | 4:33 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘শিশু মুক্তিযোদ্ধা’ এবং বেগম খালেদা জিয়াকে ‘প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা’ দাবি করে তাদেরকে মুক্ত করার শপথ নিয়েছে বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে আয়োজিত বিজয় র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে এ শপথ নেন বিএনপি নেতারা।

এসময় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আসুন, আজকের এই র‌্যালির মধ্যে দিয়ে আমরা সেই শুভ সূচনা করি, যেই শুভ সূচনার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের দেশনেত্রী, যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম মহিলা মুক্তিযোদ্ধা, তাকে মুক্ত করতে পারব, সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারব। সেই সঙ্গে আমাদের নেতা তারেক রহমান, যিনি ১৯৭১ সালে একজন শিশু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তাকে নির্বাসিত অবস্থা থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে আমাদের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া, যিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন গণতন্ত্রের জন্য, তিনি আজ এই সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় আজ আমরা বিজয় র‌্যালি করছি। এই র‌্যালি আজ আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ এই জন্যই যে ১৯৭১ সালে যখন আমরা যুদ্ধ করি, সেই যুদ্ধ করেছিলাম একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, সেই যুদ্ধ করেছিলাম একটি মুক্ত স্বদেশ পাব বলে, সেই যুদ্ধ করেছিলাম আমাদের বাকস্বাধীনতা থাকবে, আমাদের লেখার স্বাধীনতা থাকবে, সংগঠন করার স্বাধীনতা থাকবে এবং আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য একটা বাসযোগ্য বাসভূমি আমরা নির্মাণ করতে পারব। সেখানে অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন, দমননীতি থাকবে না।

‘কিন্তু আজ আমাদের কী দুর্ভাগ্য, আমরা কী অসহায় হয়ে পড়েছি— ৫০ বছর পরে আমরা দেখছি এমন একটি সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে আছে, যারা একাত্তরের সব চিন্তা-ভাবনা, চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্য গোটা জাতির ওপরে নির্যাতন-নিপীড়নের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের যে গণতন্ত্র, সেটি ধ্বংস করেছে। আমাদের যে অর্জন, সেটি ধ্বংস করেছে। আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের লেখার অধিকার কেড়ে নিয়েছে,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কথা সবার আগে স্মরণ করতে চাই। তার ঘোষণার মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই দেশের সব মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৯ বছর সংগ্রাম করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। তাকে আজ এরা ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই আজকের এই র‌্যালি বাংলাদেশের নতুন করে জেগে ওঠার র‌্যালি, আজকের এই র‌্যালি বাংলাদেশের মানুষের নতুন করে সংগ্রাম শুরু করবার র‌্যালি। আজকের এই র‌্যালি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার র‌্যালি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপির বিজয় র‌্যালি শুরু হয়। র‌্যালির প্রথম সারিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, দ্বিতীয় সারিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, তৃতীয় সারিতে যুবদলের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা অংশ নেন। এরপর পর্যায়ক্রমে জাতীয়তবাদী শ্রমিক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, ওলামা দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, তাঁতী দল, মৎসজীবী দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা দলবদ্ধভাবে অংশ নেন।

এছাড়া ঢাকা মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানার, ফেস্টুন, ব্যাজ, হেডার, ক্যাপ, টি-শার্ট ও জাতীয় পতাকা নিয়ে র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

কাফরুল থানা বিএনপির এক মহিলা কর্মী গোলাপি রঙের ম্যাক্সি, ওড়না ও সার্জিক্যাল মাস্ক পরে খালেদা জিয়ার বেশ ধারণ করে একটি খোলা গাড়িতে চড়ে র‌্যালিতে অংশ নেন।

বিজয় দিবসের এই র‌্যালিতে ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই/ খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, শেখ হাসিনার গদিতে/ আগুন জ্বালাও এক সাথে, তারেক রহমান বীরের বেশে/ আসবে ফিরে বাংলাদেশে’ স্লোগান দেন বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকরা।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত বিশাল এ র‌্যালিতে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। র‌্যালির অগ্রভাগ যখন কাকরাইল মোড়ে, পেছনের অংশ তখন ফকিরাপুল মোড়ে। র‌্যালিটি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শান্তিনগর মোড় ঘুরে, ফকিরাপুল হয়ে ফের নয়াপল্টন কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।

র‌্যালিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুব দলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন