বিজ্ঞাপন

‘পাচার হওয়া টাকা দিয়ে ১০০টা পদ্মাসেতু বানানো সম্ভব’

December 31, 2021 | 2:36 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, গত ১০/১২ বছর ধরে এই দেশ থেকে লাখ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। বিদেশে পাচার করা হয়েছে। শেয়ার মার্কেট লুট করা হয়েছে। এমনকি আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও লুট হয়ে গেছে। আজ ওই পরিমাণ টাকা যদি আমাদের তহবিলে থাকত, তাহলে বিদেশিদের কাছে হাত পাততে হতো না। এই টাকা দিয়ে আরও ৫০ থেকে ১০০টা পদ্মাসেতু তৈরি করা যেত।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্সদের সংগঠক জেটেব-এর সমাবেশে খালেদা জিয়ার অবলিম্বে মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্বের বহু দেশে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে, তার মধ্যে কোনো দেশ আমাদের চেয়ে কম শিক্ষিত মানুষ রয়েছে, আবার কোনো দেশ বেশি। কোনো দেশ বেশি উন্নত, আবারও কম। এরকম অনেক দেশে যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কিন্তু কোনো দেশে কারও সুচিকিৎসার জন্য আন্দোলন করতে হয় এরকমটা দেখেনি। আরও স্পষ্ট করে বলতে চাই, কোনো সভ্য দেশে নাগরিকের সুচিকিৎসার জন্য দাবি ও আন্দোলন করতে হয় এটা অস্বাভাবিক। মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে কি করে বলি, ক্ষমতার মোহে আজকে আমার দেশকে একটা অসভ্য দেশ পরিণতি করা হলো৷

তিনি আরও বলেন, আজকে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা অভিযোগে অসুস্থকারারুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে। কি করে তাকে স্বাভাবিক বলা যায়? কেউ কেউ বলে এতিমের টাকা মেরে খেয়েছে। টাকা ছিল ২ কোটি, এখন হয়েছে ৮ কোটির বেশি। এক পয়সাও তছরুপ করা হয়নি। তাহলে এতিমের টাকা মারা হলো কীভাবে? বরং আমরা তো বলি, গত ১০/১২ বছর ধরে এই দেশ থেকে লাখ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। বিদেশে পাচার করা হয়েছে। শেয়ার মার্কেট লুট করা হয়েছে। এমনকি আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও লুট হয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

‘এসব কারা লুট করেছে তাদের বের করুন, তাদের শাস্তি দিন। তা না করলে নিশ্চয়ই সবাই মনে করবে লুটের সঙ্গে আপনারাও জড়িত আছেন। ওই সময় অর্থমন্ত্রী একটি তদন্ত রিপোর্ট করলেন, সেটাতে উল্লেখ করলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা জড়িত রয়েছেন। কারা এই গুরুত্বপূর্ণ লোক জনগণ জানতে চায়। আজ ওই পরিমাণ টাকা যদি আমাদের তহবিলে থাকত তাহলে বিদেশিদের কাছে হাত পাততে হতো না। এই টাকা দিয়ে আরও ৫০ থেকে ১০০টি পদ্মাসেতু করা যেত,’— বলেন নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, কী একাটা অদ্ভুত দেশে বাস করি আমরা! জেলা পযার্য়ের নেতা ২ হাজার কোটি টাকার মালিক। এই দলের নেতাকর্মীদের বালিশের মধ্যে টাকা, ঘরের মধ্যে টাকা, আলমারিতে টাকা, সবখানে টাকা আর টাকা। কোথায় থেকে আসে এত টাকা? টাকা কি বাচ্চা দেয়? যারা মানুষের টাকা লুট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, তাদের কাছ থেকে মানবতা আশা করা যায় না। এজন্য অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। শুধু খালেদা জিয়ার সঙ্গে নয়, দেশের সব নাগরিকদের সঙ্গে একই আচরণ করা হচ্ছে।

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, আমাদের দেশে কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এটি শুধু তাদের জন্য লজ্জাকর নয়, এটি আমাদের দেশের জন্য লজ্জার বিষয়। কেন হয় এসব? কেন সরকার কাছে যুক্তিসম্মত বক্তব্য পাচ্ছি না? যে অভিযোগটি করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে, সেটি কেন মিথ্যা প্রমাণ করা হচ্ছে না? এসব না থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শুধু মামলা করা হয়। আজ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩৫ লাখ মামলা হয়েছে। এ তো মামলাবাজ সরকার।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। এজন্য জনগণের কাছে সরকারের দায়বদ্ধতা নেই। তাদের জনগণের সমর্থন লাগে না। রাতের বেলায় ভোট করে ফেলে কিংবা এমনভাবে ভোট করে যে বিরোধী দলের প্রার্থী অনুপস্থিত থাকে। বিশ্বের এমন কোন অসভ্য দেশ রয়েছে, যেখানে চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে পারবেন না? আমাদের দেশেই সামরিক শাসকের সময় চিকিৎসার জন্য অনেক নেতাকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে চাননি, আমরা চেয়েছি তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। খালেদা জিয়া বলেছেন, এই দেশে বাঁচব, এই দেশে মরব, জনগণের সঙ্গে থাকব। এতে যারা বাধা দেয়, তারা অন্যায় করে।

আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে টেনে নজরুল ইসলাম বলেন, আইনমন্ত্রী বললেন বাইরে থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসা করাতে। আপনারও তো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার জন্য ভারত থেকে ডাক্তার আনলেন। তারপরও সিঙ্গাপুরে পাঠালেন কেন? ডাক্তার আনলেই যদি সব চিকিৎসা সম্ভব হয়, তাহলে বাইরে পাঠানোর কি দরকার? আপনি (আইনমন্ত্রী) একবার বলেন আদালতের সব ক্ষমতা, সরকারের কোনো ক্ষমতা নেই। ক’দিন পর দেখলাম সরকারের নির্দেশ খালেদা জিয়া বাড়িতে আসলেন। আজ আবার বলছেন বিবেচনার সুযোগ নেই, তাকে আবার জেলে যেতে হবে। হয়তো কালই বলবেন ব্যবস্থা হয়ে গেছে। দেশের স্বার্থে এসব রসিকতা বন্ধ করেন। যে আইন মানুষের চিকিৎসা হতে দেয় না, সেই আইন বদলানোর দরকার।

সমাবেশে দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, ওবায়দুল ইসলাম, শামীম, রুহুল আমিন, ফখরুল, রফিকসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এআই/এনএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন