বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখবে অস্ট্রেলিয়া

March 1, 2022 | 5:27 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভায় এ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি এই জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোসহ সার্বিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর দুই দেশের মধ্যে সই করা ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্টের (টিফা) আওতায় এই জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছিল।

গ্রুপের সভায় বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানো এবং এক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতা, পণ্য ও সেবা সংক্রান্ত বাণিজ্য, বিনিয়োগ বাড়ানো, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

ওই সভাতেই দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনতে সমীক্ষা পরিচালনা বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বাড়াতে সংশ্লিষ্ট শীর্ষ বাণিজ্যিক সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক যোগযোগ বাড়াতে উৎসাহ দেওয়ার বিষয়েও জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ সম্মত হয়।

বিজ্ঞাপন

অস্ট্রেলিয়ার উৎপাদনকারী এবং বাংলাদেশের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে আরও ভালোভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সে বিষয়ে এসময় আলোচনা করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার কাঁচামাল যেমন— তুলা, উল, চামড়া, ব্যবহার করে বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করে তা তৃতীয় দেশের বাজারে এবং অস্ট্রেলিয়ার বাজারে বাইব্যাক ব্যবস্থার মাধ্যমে রফতানির সুযোগ পরীক্ষা করা নিয়েও দুই পক্ষ সম্মত হয়। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া থেকে এলএনজি রফতানির উপায় নিয়েও আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয় দুই পক্ষ।

অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে, বিশেষ করে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায়। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অবকাঠামো, জ্বালানি, খনিজ সম্পদ ও তথ্য প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা অনুসন্ধানে অস্ট্রেলিয়া আগ্রহী।

এছাড়া বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়ানো এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়া। এক্ষেত্রে কারিগরি ও বুত্তিমূলক শিক্ষায় সহযোগিতা এবং দেশের শিক্ষা প্রেফাইল উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের আরও বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীকে অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

অস্ট্রেলিয়া ফিউমিগেশন অ্যাক্রিডিটেশন স্কিমের (Australian Fumigation Accreditation Scheme) আওতায় সে দেশের বাজারের চাহিদার মানদণ্ডের (regulatory standards) বিষয়ে বাংলাদেশের উৎপাদক ও রফতানিকারকদের প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে।

জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী একটি ভিডিওবার্তা দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া অংশীদার হিসেবে নতুন পর্যায়ে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে দুই দেশের পারস্পারিক স্বার্থ, মূল্যবোধ, জনগণের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ এবং ক্রমবর্ধমানভাবে বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টতার গতিশীলতা বাড়ছে।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দফতরের উত্তর ও দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রথম সহকারী সচিব গ্যারি কাওয়ান। সভার প্রথমে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দফতরের অ্যাসোসিয়েট সেক্রেটারি টিম ইয়ান। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান ও বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরিমি ব্রুয়ার আলোচনায় অংশ নেন। উভয় দেশের ৩০ জনের বেশি প্রতিনিধি এ সভায় অংশ নেন।

বৈঠক শেষে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দফতর আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ এবং অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনার আয়োজিত নৈশভোজে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা অংশ নেন। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার এই জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা ২০২৩ সালের প্রথমদিকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিএস/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন